ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদিকে দেখতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা। তারা হাদির অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান হাসপাতালে পৌঁছান। এর কিছুক্ষণ পর হাসপাতালে আসেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
বিজ্ঞাপন
এরআগে শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। ঘটনার সময় তিনি রিকশায় করে যাচ্ছিলেন। তখন হঠাৎ একটি মোটরসাইকেল থেকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। কে বা কারা গুলি ছুঁড়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেনি পুলিশ।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর দিকে ঢাকা মেডিকেলে ওসমান হাদির অপারেশন সম্পন্ন হয়। শরীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে পোস্ট অপারেটিভ কেয়ারের জন্য হাদিকে সন্ধ্যা ৭টার পর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এদিকে মাথায় গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। তার বাম কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বুলেট মস্তিষ্কের কাণ্ড বা ব্রেন স্টেম পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি’ হিসেবে বিবেচিত। আগামী ৭২ ঘণ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, আর এ অবস্থায় কোনো ধরনের নতুন ইন্টারভেনশন করা হবে না।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সাংবাদিকদের এসব বলেন। তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন হাদির শারীরিক অবস্থা পরিদর্শনে যান।
ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, হাদি এখন ‘খুবই ক্রিটিক্যাল’ অবস্থায় আছেন এবং আগামী ৭২ ঘণ্টা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। তাকে আপাতত কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাসে রাখা হয়েছে, যদিও চিকিৎসকেরা এখনো আশার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না।
ডা. সায়েদুর জানান, গুলি বাম কানের ঠিক ওপর দিয়ে মাথায় প্রবেশ করে ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে গেছে। এই গতিপথে মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ব্রেন স্টেম-এও ইনজুরি হয়েছে, যা জীবনরক্ষাকারী কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। এটা আমরা ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি হিসেবে বিবেচনা করছি। এখন কোনো ধরনের ইন্টারভেনশন সম্ভব না। রোগীকে কেবল লাইফ সাপোর্টে ধরে রাখার চেষ্টা চলছে।
এই চিকিৎসক জানান, রোগীকে এখন কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। তবু একটুখানি আশার জায়গা আছে, রোগীর শরীরে এখনো সাইন অব লাইফ আছে। অপারেশনের সময় তার নিজের শ্বাস নেওয়ার কিছু প্রচেষ্টা দেখা গেছে।
এমএইচআর
































































