২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটটি উচ্চাভিলাষী নয় বরং সংস্কারমুখী ও আশাবাদি বলে মত দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি ড. আতিউর রহমান। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে সামষ্টিক-অর্থনৈতিক অস্থিরতা থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাজেট ও মুদ্রানীতির সুসমন্বয় জরুরি বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (০৩ জুন) ঢাকায় উন্নয়ন সমন্বয় কার্যালয়ের খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ কনফারেন্স কক্ষে সংগঠনটির আয়োজনে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মূল নিবন্ধ উপস্থাপনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
ড. আতিউর রহমানের মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটটি উচ্চাভিলাষী নয়, বরং সংস্কারমুখী ও আশাবাদি। ৫ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা এবং মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে ধরে রাখা খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে। তবে বিদ্যমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক বাস্তবতায় এই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার বিকল্প ছিল না বলে তিনি অভিমত দেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর বলেন, ঘাটতি অর্থায়ন এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজেটারি উদ্যোগের পাশাপাশি মুদ্রানীতিতেও পদক্ষেপ থাকতে হবে। তাই বাজেট ও মুদ্রানীতির সুসমন্বয় নিশ্চিত করা একান্ত জরুরি।
উন্নয়ন সমন্বয়ের বাজেট বিশ্লেষণ উপস্থাপন করে ড. আতিউর আরও বলেন, করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার করায় মুদ্রাস্ফীতির চাপ থেকে কিছুটা স্বস্তি পাবেন অনেক নাগরিক। তবে ধনীদের সম্পদের ওপর করের সীমা ৩ কোটি টাকা থেকে ৪ কোটিতে উন্নীত করা, শিক্ষার্থী ও শ্রমিকদের বিদেশ যাত্রায় বাড়তি করারোপের আওতায় রাখার মতো কিছু কর প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে। আর করযোগ্য নন এমন ব্যক্তিদের জন্যও ন্যূনতম ২ হাজার টাকার করের প্রস্তাবটি রাজস্ব আয় এবং কর প্রদানের সংস্কৃতির প্রসারে সহায়ক হতেও পারে বলে তিনি মনে করেন। তবে এটা যেন সাধারণ মানুষের হয়রানির কারণ না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
উন্নয়ন সমন্বয়ের লিড ইকনোমিস্ট রবার্ট শুভ্র গুদা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। তৃণমূল পর্যায়ের চাহিদা মেটাতে নতুন নতুন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি চালুর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বর্তমানে সামাজিক সুরক্ষার উপকারভোগীদের মধ্যে মাত্র একচতুর্থাংশ নিম্ন আয়শ্রেণী থেকে আসছেন বলেও জানান তিনি।
বিজ্ঞাপন
স্বাস্থ্য বাজেট কমানোর সমালোচনা করে শাহনাজ হীরা বলেন, বাস্তবায়নের অদক্ষতার দোহাই দিয়ে স্বাস্থ্যখাতের জন্য বরাদ্দ না বাড়ানোয় জনগণের ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ বাড়ছে। বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শূন্য পদে লোকবল নিয়োগে বরাদ্দ বাড়ানো উচিত। এতে গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রার্থীদের আউট-অফ-পকেট স্বাস্থ্য ব্যয়ের অনুপাত ৬৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশের কাছাকাছি নিয়ে আসা সম্ভব।
এমএইচ/এএস