জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে ছাত্র-জনতা। তারা এই হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক সহিংসতা ও মতপ্রকাশ দমনের অংশ হিসেবে আখ্যা দিয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিও জানান।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
সমাবেশে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতা ‘ভারতীয় পণ্য বয়কট, বয়কট’, ‘হাদি ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভকারীরা বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া হবে।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্র-জনতার ঢল নামে শাহবাগে। কেউ মিছিল নিয়ে, কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমাবেশে যোগ দেন। তাদের হাতে জাতীয় পতাকা ও ব্যানার দেখা যায়।
এসময় স্লোগানে স্লোগানে শাহবাগ মুখর হয়ে ওঠে—‘ফ্যাসিবাদের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, ‘আমরা সবাই হাদি হবো, যুগে যুগে লড়ে যাবো’, ‘এই মুহূর্তে দরকার বিপ্লবী সরকার’, ‘লীগ ধর জেলে ভর’ ইত্যাদি।

বিজ্ঞাপন
সমাবেশে বক্তারা বলেন, হাদি ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একজন সাহসী সংগঠক ও সম্মুখসারির যোদ্ধা। তার হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এটি চলমান রাজনৈতিক দমন-পীড়নের অংশ। তারা অবিলম্বে হত্যাকারীদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
এদিকে হাদির মৃত্যুর ঘটনায় আজ বাদ জুমা শাহবাগের ৩৬ জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু), ইসলামী ছাত্রশিবির ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। কর্মসূচিকে ঘিরে শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী শহীদ শরিফ ওসমান হাদি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক শরিফ ওসমান হাদি গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগরে গণসংযোগকালে চলন্ত রিকশায় থাকা অবস্থায় আততায়ীর গুলিতে গুরুতর আহত হন। গুলিটি তার মাথায় লাগে। প্রথমে ঢাকায় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে এখন থমথমে ও উত্তাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তার মরদেহ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
এএইচ/এএইচ






























































