চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে ৭৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালেই ভর্তি আছেন ৩৪ জন। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ৩ জন এবং অন্যান্য হাসপাতালগুলোতে ৩৬ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আর এসব রোগীর চিকিৎসায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন রক্ত। যা সংগ্রহে হাহাকার চলছে স্বজনদের। শনিবার (৮ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে এমন পরিস্থিতি। হাসপাতালের নিচতলার গেইট থেকে ডেঙ্গু কর্নার পর্যন্ত বিভিন্ন তলায় স্বজনরা ছুটোছুটি করছেন রক্তের জন্য।
বিজ্ঞাপন
কেউ ফোনে, আবার কেউ নিকটাত্নীয়দের রক্ত জোগাড় করার জন্য অনুরোধ করছেন। আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়েও অনেকে রক্তের সন্ধান করছেন। এদের একজন নগরীর হালিশহর থেকে আসা আজাদ হোসেন (৪১)। তিনি বলেন, আমার মেয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত। তার বয়স ৯ বছর। হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ভর্তি আছে সে। তার এ-পজেটিভ রক্তের প্রয়োজন। চিকিৎসকরা বলছেন জরুরি রক্ত লাগবে।
হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় ২৮নং ওয়ার্ডেও দেখা গেছে, আরমান আজিজ (৪৫) নামে একজনকে মায়ের জন্য রক্ত খুঁজতে। তার বাড়ি নগরীর চান্দগাঁও থানার ফরিদের পাড়া এলাকায়। তিনি বলেন, মায়ের তিনদিন ধরে জ্বর। চমেক হাসপাতালে আনার পর রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। মায়ের অবস্থা ভালো না। ডাক্তাররা বলছেন, জরুরিভিত্তিতে রক্ত লাগবে। মায়ের রক্তের গ্রুপ ও-পজিটিভ। স্বজনদের কারও সাথে মিলছে না। এখন রক্ত কোথায় পায়। এভাবে রক্তের জন্য হাহাকার চলছে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আব্দুর সাত্তার বলেন, হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীদের বিভিন্ন উপসর্গের পাশাপাশি অধিকাংশেরই রক্তচাপ কমে গেছে। সেই সাথে কমেছে রক্তের অনুচক্রিকা (প্লাটিলেট)। ফলে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য প্লাটিলেটের চাহিদা বেড়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর প্লাটিলেটের চাহিদা অনেক বেশি। যে পরিমাণ চাহিদা সেই পরিমাণ ডোনার আমরা পাচ্ছি না।
তিনি বলেন, রক্তের প্রয়োজনে রোগীরা হাসপাতালে আসছে। মধ্যরাতে যখন আসে তখন কোনো ডোনার পাওয়া যায় না। ডোনারের কাছ থেকে রক্ত নিয়ে প্লাটিলেট তৈরি করতে হয়। ফ্রিজের কোনো ব্লাড দিয়ে এটি করা যায় না। তখন আমাদের খারাপ লাগে। এছাড়া দিনের বেলায়ও চাহিদা কম নয়। রোগীদের পক্ষ থেকে অনুরোধ করছি। কিন্তু সেই পরিমাণ রক্তদাতা পাই না।
বিজ্ঞাপন
প্রতিনিধি/একেবি