বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা কিংবা দূরপাল্লায় ভ্রমণ— সবসময় আপনার সঙ্গী হয় মশা। আশেপাশের মানুষকে না কামড়ালেও কেন যেন আপনাকে মশা কামড়াবেই। কেন এমনটা হয়? কেন মশার কাছে আপনি এত প্রিয়? সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে এর উত্তর।
গবেষণা অনুযায়ী, কিছু কিছু মানুষের চামড়ায় এমন কিছু উপাদান থাকে যা মশাকে আকৃষ্ট করে। এই উপাদানগুলো সবসময়ই ত্বকে বিদ্যমান। আর তাই সবসময় তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয় মশা।
বিজ্ঞাপন
যাদের মশা বেশি কামড়ায়। তাদের জীবনভরই এই কামড় সহ্য করতে হবে। সাম্প্রতিক গবেষণা এমই ইঙ্গিত দিচ্ছে। নিউ ইয়র্কের রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুজীববিদ্যার গবেষক লেসলি ভসহলের নেতৃত্বে হওয়া গবেষণা অনুযায়ী, কিছু কিছু মানুষের চামড়ায় এমন কিছু উপাদান থাকে যা মশাকে আকৃষ্ট করে।
গত ৪ জুলাই বিজ্ঞান পত্রিকা ‘সেল’-এ প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাটি। ৬৪ জন স্বেচ্ছাসেবকের ওপর করা পরীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
বিজ্ঞাপন
গবেষকরা বলছেন, বিভিন্ন রকমভাবে স্বেচ্ছাসেবকদের সাজিয়ে এডিস ইজিপ্টাই মশার (ডেঙ্গুর বাহক) সামনে নিয়ে গিয়েছেন তারা। দেখা গেছে, বিশেষ কয়েকজন ব্যক্তির দিকে প্রায় একশ গুণ বেশি আকৃষ্ট হয়েছে মশা। বেশ কয়েক বছর ধরে পরীক্ষা করার পরেও ফলাফল একই রয়ে গেছে। গবেষকেরা এসব ব্যক্তির নাম দিয়েছেন ‘মশক চুম্বক’ বলে।
কিন্তু কেন এমনটা হয়? গবেষকদের দাবি, যাদের মশা বেশি কামড়াচ্ছে তাদের ত্বকে কিছু বিশেষ ধরনের অ্যাসিড ক্ষরিত হয়। ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখতে এসব অ্যাসিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ত্বক ভেদে বিভিন্ন মানুষের দেহে বিভিন্ন হারে এই উপাদানগুলি ক্ষরিত হয়।
ত্বকে বসবাসকারী কিছু ব্যাকটেরিয়া এই অ্যাসিড থেকে উৎপাদিত ‘পিচ্ছিল’ কণাগুলির ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে। মানুষের গায়ের গন্ধও এই উপাদানের উপর কিছুটা নির্ভর করে।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, মশা এই উপাদানের প্রতিই আকৃষ্ট হয়। যেহেতু এই অ্যাসিডগুলি ত্বকের স্বাভাবিক উপাদান, তাই জোর করে উপাদানগুলো দেহ থেকে সরিয়ে ফেলা যাবে। এতে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।
তাই মশার কামড় থেকে বাঁচার জন্য সাবধানতার বিকল্প নেই। বাসাবাড়ি ও চারপাশ পরিষ্কার রাখুন। মশা বংশবিস্তার করতে পারে এমন স্থানগুলোতে পানি জমতে দেবেন না।
এনএম