রাজধানীর অনেক স্থানের মতো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩১নং ওয়ার্ডেও ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন ওই ওয়ার্ডে বসবাসকারী অনেকেই। আবার অনেকে জেনেও উদাসীন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাঁশবাড়ি এলাকায় একাংশ, নুরজাহান রোড, রাজিয়া সুলতানা রোড, সলিমুল্লাহ রোড, শেরশাহসূরী রোড, আজম রোড, ইকবাল রোড, স্যার সৈয়দ রোড, কাজী নজরুল ইসলাম রোড, আসাদ এভিনিউ, জাকির হোসেন রোড নিয়ে ৩১নং ওয়ার্ড গঠিত। উত্তর ঢাকার এই ওয়ার্ডটির একটি বড় জায়গা জুড়ে রয়েছে ৬০ ও ৭০ এর দশকে নির্মিত ভবন। রয়েছে উর্দুভাষী ক্যাম্প৷
বিজ্ঞাপন
এলাকার সারি সারি বাড়ির মাঝখান দিয়ে রয়েছে সুইপার প্যাসেজ। আর সেই প্যাসেজে ফেলা হয় ময়লা-আবর্জনা। বিষয়টি অনৈতিক এবং দৃষ্টিকটু হলেও বছরের পর বছর চেষ্টা করেও এই কর্মকাণ্ড বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।
বৃষ্টির কারণে প্যাসেজে জমা ময়লা আবর্জনা এবং পলিথিনে জমছে পানি। নিয়মিত পরিষ্কার না করায় সেখানে মশার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে। আর সেই মশা ছড়িয়ে পড়ছে পুরো এলাকায়। এমন বেশ কয়েকটি প্যাসেজ রয়েছে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩১নং ওয়ার্ডে। আর সবগুলো প্যাসেজেই পানি জমার চিত্র দেখা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুব হোসেনের কাছে ওয়ার্ডের ডেঙ্গু পরিস্থিতি বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে কিনা তা তো জানি না। আমরা তো সারাদিন কাজে থাকি। মশা আছে, সন্ধ্যার পরে মশা বেশি লাগে। কোনটা কি তা তো জানি না।
ওয়ার্ডের টাউন হল এলাকার বাসিন্দা আজগর আলী ঢাকা মেইলকে বলেন, মশা তো সারা বছরই লাগে। মশা আবার কবে ছিল না, মশার কামড় খাইয়াই তো বড় হয়েছি।
বিজ্ঞাপন
বর্তমান পরিস্থিতি জানিয়ে তিনি বলেন, এখন মনে হয় একটু বেশি মশা। ডেঙ্গু কিনা তাতো জানিনা। শুনছি কয়েকজনের ডেঙ্গু হইছে।
সুইপার প্যাসেজে ময়লা, পানি জমে থাকার বিষয়ে আপত্তি স্থানীয়দের। তবে সচেতনতার অভাবে বিষয়টি সমাধানে পৌছাচ্ছে না বলে জানান স্থানীয়রা।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের এই ওয়ার্ডে মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেঙ্গলি মিডিয়াম হাইস্কুল, ঢাকা স্টেট কলেজ, মোহাম্মদপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসহ বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। ঈদের ছুটিতে এসব স্কুল কলেজ খোলা হয়নি৷ টানা বৃষ্টিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অভ্যন্তরে জমাটবদ্ধ পানিতে এডিসের উপদ্রব বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
এদিকে ওয়ার্ডটির ডেঙ্গু পরিস্থিতি ও সিটি করপোরেশনের উদ্যোগের বিষয়ে জানতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বীর আহমদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
ওয়ার্ডটির কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম সেন্টু ঢাকা মেইলকে জানান, সুইপার প্যাসেজ ছাড়া ওয়ার্ডের আর কোথাও জমাটবদ্ধ পানি নেই। আর এই প্যাসেজের বিষয়েও নগর ভবন স্থায়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শফিকুল ইসলাম সেন্টু বলেন, আমি এই ওয়ার্ডের টানা তিনবারের কাউন্সিলর। আমি বর্জ্য অপসারণে তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। কিন্তু মেথর প্যাসেজগুলো পরিষ্কার রাখতে পারছি না। মানুষ শুধু ময়লা ফেলে। আমরা পরিষ্কার করি, এক সপ্তাহের মধ্যে ভরে যায়। ওখানেই পানি জমে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গুর বিষয়ে আমাদের বাড়িওয়ালাদের সচেতন হতে হবে। আমি তো মানুষের বাসায় গিয়ে তারা ফুলের টব চেক করতে পারি না যে পানি জমে আছে কিনা৷ এই বিষয়টা বাড়িওয়ালাদের দেখা উচিত। কোথায় ফুলের টবে পানি জমে আছে, কোথায় টায়ারে পানি জমে আছে, কোথায় টিউবে পানি জমে আছে, কোথায় দইয়ের হাঁড়িতে পানি জমে আছে।
কাউন্সিলর বলেন, আমরা মাঠে আছি। আগামী এক মাস মাঠে থাকব। তবে সবচাইতে বড় বিষয়, জনগণকে সচেতন হতে হবে।
কারই