শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

বরিশালে ডেঙ্গু রোগীর রেকর্ড, খোলা হয়েছে ডেঙ্গু কর্নার

অনিকেত মাসুদ
প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০২৩, ১০:৩২ এএম

শেয়ার করুন:

বরিশালে ডেঙ্গু রোগীর রেকর্ড, খোলা হয়েছে ডেঙ্গু কর্নার

বরিশাল বিভাগের জেলা-উপজেলায় রেকর্ড সংখ্যক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। এই বিভাগে চলতি মৌসুমে ৮৯৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে ৭০১ জন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। জেলা-উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১৯৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে একজনের।

এই সময়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ৩৩৭ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে এই হাসপাতালে চলতি মৌসুমের রেকর্ড সংখ্যক ৭৬ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে শনিবার সকাল ৮টার আগের ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে ৪৭ জন। প্রতিদিন আশংকাজনকভাবে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় শেবাচিম হাসপাতালে আলাদা ডেঙ্গু কর্নার খোলা হয়েছে। সেখানে নারী-পুরুষের আলাদা ইউনিটি করে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


পাশাপাশি ওয়ার্ডভিত্তিক ডেঙ্গু রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। এসব ডেঙ্গু রোগীর অধিকাংশ বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থানকালে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যানবিদ আহসান কবির পিন্টু জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে ১১০ জন নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। তারা বরিশালসহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এরমধ্যে ২৪ ঘণ্টায় শুধুমাত্র বরিশালের শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪৭ জন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভর্তি হয়েছে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৩ জন। এছাড়া বরিশাল জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ৯ জন, পিরোজপুর জেলায় ১০ জন, বরগুনায় ১৩ জন এবং ভোলায় ৮ জন ভর্তি হয়েছেন।

শেবাচিম হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জানুয়ারি মাসে এই হাসপাতালে ১৯ জন রোগী ভর্তি ছিল। ফেব্রুয়ারিতে তা কমে ১১ জন, মার্চে ২ জন, এপ্রিলে ৩ ও মে মাসে ১৬ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এই সংখ্যা জুন মাসে এসে ১৪৯ জনে পৌঁছেছে। জুলাই মাসের প্রথম ৮ দিনে আশংকাজনকভাবে ১৩৭ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে এই হাসপাতালে ৭৬ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে।

বরিশালের বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান জানান, তার মেয়ে মরিয়মকে (৬) শনিবার সকালে শেবাচিম হাসপাতালে এসেছেন। তিনদিন ধরে জ্বর, বমি ও শরীরের পিছনের অংশে ব্যথা অনুভব হওয়ায় মরিময়কে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে শেবাচিমে পাঠিয়েছে। তারা গত কয়েক মাসে বসতঘর ছেড়ে অন্যত্র যাননি, তাই তার মেয়ে বরিশালেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।


বিজ্ঞাপন


পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের বাসিন্দা ডেঙ্গু রোগী রুবেল (৩৩) জানান, নিজ বাড়িতে অবস্থানকালে তার ডেঙ্গু হয়েছে। শেবাচিম হাসপাতালে ৮ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর কিছুটা সুস্থবোধ করছেন বলে জানান তিনি।

বরিশাল নগরীর তালতলীর বাসিন্দা সোহাগ (৩৭) জানান, তিনদিন আগে হঠাৎ জ্বর অনুভূত হলে হাসপাতালে বিভিন্ন পরীক্ষার পর জানতে পারি ডেঙ্গু হয়েছে। এখন অনেকটা সুস্থ।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বাসিন্দা হৃদয় (২৩) জানান, তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে বেড়াতে এসে জ্বর ও প্রচণ্ড মাথা ব্যথা অনুভূত হয়। এরপর হাসপাতালে এসে জানতে পারি আমার ডেঙ্গু হয়েছে।

শেবাচিম হাসপাতালের সহকারি পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এসএম মনিরুজ্জামান জানান, জানুয়ারি থেকে মেডিসিন ও শিশু ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা চলে আসছে। এ বছর ডেঙ্গু রোগীর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় মেডিসিন বিভাগের নিচতলায় পুরুষ ও নারীদের জন্য পৃথক ডেঙ্গু চিকিৎসা কর্নার করা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের মূল ভবনের শিশু ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর