চলতি জুলাই মাসের প্রথম সাত দিনে ২২৩ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে চট্টগ্রামে। এর মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ২৬ জন। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে ৫৫ জন। যা চলতি মৌসুমে একদিনে সর্বোচ্চ। পাশাপাশি জুলাই মাসে ডেঙ্গুতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে জুন মাসে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের।
শনিবার (৮ জুলাই) এমন তথ্য দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া।
বিজ্ঞাপন
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে মোট ৭৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালেই ভর্তি আছেন ৩৪ জন। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ৩ জন এবং অন্যান্য হাসপাতালগুলোতে আরও ৩৬ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ নিয়ে চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৮৭ জনে। আর মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ জন।
জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া জানান, গত জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ৫ মাসে চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৮২ জন। এ সময়ে মৃত্যু সংখ্যা ৩ জন। জুনে আক্রান্ত হন ২৮২ জন। এ মাসে মারা যান ৬ জন। আর চলতি জুলাই মাসের এ পর্যন্ত মারা যান ৩ জন।
অথচ গত বছর প্রথম ৫ মাসে মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৭ জন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ৯ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৪ জন, মার্চে একজন, এপ্রিলে ৩ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল। আর মে মাসে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল শূন্য। সে হিসেবে চলতি বছর প্রথম ৫ মাসে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দশ গুণেরও বেশি।
পরিস্থিতি দেখে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রামে করোনার মহামারির মতো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে ডেঙ্গু।
বিজ্ঞাপন
আর এ নিয়ে অনেকটাই উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য বিভাগ। এ অবস্থায় এ বছরের ডেঙ্গুর পরিস্থিতি গত বছরের চেয়ে আশঙ্কাজনক উল্লেখ করে মশক নিধনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়রকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী।
ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে ডেঙ্গু পরিস্থিতি করোনার মতো ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে সামনে আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে। তাই এডিস মশা নিধনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে চিঠির মাধ্যমে চসিককে অনুরোধ জানিয়েছি।
একই সাথে উদ্বেগের কথা জানিয়ে পাশাপাশি রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালককেও (সংক্রামক রোগনিয়ন্ত্রণ) ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানান ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী।
প্রতিনিধি/একেবি