রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সময় একটি অসাধু চক্র মোবাইল ফোন লুটপাটে ব্যাস্ত ছিল বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। সেই ভবনের নিচতলায় ছিল একটি স্যামসাং ফোনের আউটলেট। মানুষ যখন বাঁচার জন্য আর্তনাদ করছিল তখন তারা সেখান থেকে মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যাচ্ছিল।
শুক্রবার (১ মার্চ) ঘটনাস্থলে প্রত্যক্ষদর্শী প্রাইভেটকারের চালক সুমন ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, দাউদাউ কইরা আগুন জ্বলতেছে, কিছু লোক ওই স্যামসাং মোবাইলের দোকানে লুটপাত করতাছে। তারাই দোকানের গ্লাস ভাইঙ্গা মোবাইল নিয়া যাইতাছে।
বিজ্ঞাপন
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, এখানে তো সব দামি ফোন। ভিআইপিরা এই দোকান থেইকা মোবাইল কিনত। মানুষ এত খারাপ হয় ক্যামনে। যেখানে মানুষ বাঁচার জন্য চেষ্টা করছে। হ্যারা ওই সময় লুটপাট করতাছে।
শুক্রবার ভবনের সামনে সেই মোবাইলের দোকানে দেখা যায়, দোকানের বাইরে সব বিধ্বস্ত হলেও দোকানের ভেতরে অক্ষত আছে। ভেতের টেলিভিশন, সোফা, কেবিনেটের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে দোকানের সামনে গ্লাস ভাঙা রয়েছে। যেটা দিয়ে ঢুকে লুট করা হয় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এদিকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরের দিনও উৎসুক জনতার ভিড় রাজধানীর বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের সেই ভবনটির সামনে। সকাল থেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ ভবনটির সামনে আসতে থাকে। কেউ স্বজনদের খোঁজে আবার কেউ এসেছেন দেখতে।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা ভবনটি পরিদর্শন করছেন। কি কারণে এবং কিভাবে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত তা শনাক্তের চেষ্টা করছেন। এরই মধ্যে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানা গেছে, এমনিতে প্রতিদিন বেইলি রোডের এই ভবনটিতে মানুষের আনাগোনা থাকত বেশি। এরমধ্যে চার বছর পর আসা অধিবর্ষের (লিপ ইয়ার) বিশেষ এই রাতে আরও বেশি চাপ ছিল মানুষের। কিন্তু আনন্দের সেই মুহুর্তগুলো সবার জন্য বেদনার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকার সেই ভবনটির অধিকাংশ ফ্লোরে ছিল খাবারের দোকান। সাততলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামের খাবারের দোকান ছিল।
এছাড়া তৃতীয় তলায় একটি পোশাকের দোকান ছাড়া ওপরের তলাগুলোতেও ছিল খাবারের দোকান। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে খাবারের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় হতো সেখানে। অনেকেই পরিবার নিয়ে সেখানে খেতে যেতেন।
টিএই/এমএইচএম