রোববার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

কাচ্চি ভাইয়ের ম্যানেজারসহ চারজন রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২ মার্চ ২০২৪, ০৭:৩৩ পিএম

শেয়ার করুন:

কাচ্চি ভাইয়ের ম্যানেজারসহ চারজন রিমান্ডে

রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় কাচ্চি ভাইয়ের ম্যানেজারসহ গ্রেফতার চারজনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শনিবার (২ মার্চ) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরী তাদের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।


বিজ্ঞাপন


আসামিরা হলেন— কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁর ম্যানেজার জয়নুদ্দিন জিসান, ওই ভবনে চা চুমুক রেস্তোরাঁর দুই মালিক আনোয়ারুল হক ও শফিকুর রহমান এবং ভবন মালিকের ম্যানেজার হামিমুল হক বিপুল।

এর আগে, শনিবার তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনছার মিলটন তাদের রিমান্ডের আবেদন করেন।

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এদের মধ্যে ৪৪ জনের মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখনও মর্গে আছে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী অথবা বৃষ্টি খাতুনসহ দুজনের মৃতদেহ।

এ ঘটনায় রমনা থানায় শুক্রবার (১ মার্চ) অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।


বিজ্ঞাপন


মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ভবনটির মালিক ও ম্যানেজার সংশ্লিষ্ট যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট এবং দোকান ভাড়া দেন। রেস্টুরেন্টগুলো যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়া রান্নার কাজে গ্যাসের সিলিন্ডার এবং চুলা ব্যবহার করে। রান্নার কাজে ব্যবহারের জন্য ভবনের মালিক ও ম্যানেজারের যোগসাজশে চুমুক, কাচ্চি ভাই, মেজবানী রেস্টুরেন্ট, খানাস ফ্ল্যাগশিপ, স্ট্রিট ওভেন, জেষ্টি, হাক্কা ঢাক্কা, শেখহলি, ফয়সাল জুসবার (বার্গার), ওয়াফেলবে, তাওয়াজ, পিৎজা–ইন, ফোকো এবং এম্ব্রোশিয়া রেস্তোরাঁর মালিকেরা ভবনটির নিচ তলায় বিপুল পরিমাণে গ্যাস সিলিন্ডার মজুত করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, তারা জননিরাপত্তা তোয়াক্কা না করে অবহেলা, অসাবধানতা, বেপরোয়া ও তাচ্ছিল্যপূর্ণ এবং বিপজ্জনকভাবে এই গ্যাস সিলিন্ডার এবং গ্যাসের চুলা ব্যবহার করে আসছিলেন। এই গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। এই আগুনের তাপ ও প্রচণ্ড ধোঁয়া পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে বিভিন্ন ফ্লোরে থাকা রেস্টুরেন্ট ও দোকানে অবস্থানকারী লোকজন আগুনে পুড়ে ও ধোঁয়া শ্বাসনালীতে ঢুকে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান এবং গুরুতর আহত হন

পুলিশ মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করে, ভবনটি আবাসিক ভবন হিসেবে নির্মিত হলেও পরবর্তীতে মালিক ভবনের বিভিন্ন ফ্লোর ব্যবসায়িক কাজে পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নেয়। ভবনটির যেসব তলায় রেস্তোরাঁ ছিল, সেগুলোতে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের জন্য ফায়ার সার্ভিসের কোনো অনুমোদন নেয়নি। এ ছাড়া অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। এমনকি ভবনটিতে ফায়ার এক্সিট সিঁড়িও নেই। ভবনের মালিক, ম্যানেজার ও রেস্তোরাঁর মালিকেরা ভবন ব্যবহারের যথাযথ নিয়ম মানেননি। তারা আবাসিক ভবনকে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য ভাড়া দিয়েছেন। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) দোকান পরিদর্শকদের ম্যানেজ করে অবৈধভাবে রেস্তোরাঁ স্থাপন করে, গ্যাসের চুলা ও সিলিন্ডার ব্যবহার করেছেন।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে দশটায় গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনটিতে অগুণের সূত্রপাত ঘটে। আগুনে পুড়ে ৪৬ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৪৩ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। আহত ১৩ জনের মধ্যে ৬ জনকে ছাড়পত্র দিয়েছেন চিকিৎসকরা। বাকিদের চিকিৎসায় গঠন করা হয়েছে ১৭ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড।

এমএইচটি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর