কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন এলাকা ছাড়তে যে চিঠি দিয়েছে তা কমিশনের এখতিয়ার বহির্ভূত বলে দাবি করেছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আ কম বাহাউদ্দিন বাহার। নির্বাচন কমিশন নিজেরাই আইন লঙ্ঘন করেছে বলে মনে করেন এই আইন প্রণেতা।
বুধবার (১৫ জুন) সকালে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আলোচিত এই সংসদ সদস্য এই দাবি করেন।
বিজ্ঞাপন
বেলা সোয়া ১১টায় নগরীর ১১নং ওয়ার্ডের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাহাউদ্দিন বাহার।
গত ৮ জুন (বুধবার) সন্ধ্যায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী জানান, চিঠিতে কোনো সময় লেখা হয়নি। অনতিবিলম্বে সংসদ সদস্যকে নির্বাচনী এলাকা ছাড়তে বলা হয়েছে। তবে চিঠি পেয়েও বাহাউদ্দিন বাহার এলাকা ছাড়েননি। তিনি বাসাতেই অবস্থান করেন। বিষয়টি দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়। এটাকে নির্বাচন কমিশনের অক্ষমতা হিসেবে মন্তব্য করে বিএনপি। সুশীল সমাজের সদস্যরাও এর সমালোচনা করেন।
নির্বাচন কমিশনের আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আইনটা হচ্ছে, সরকারের সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের কমিশন এলাকা ছাড়তে বলতে পারে। আমি আমি সরকারের কোনো পার্ট না। আমি একজন সংসদ সদস্য। আমাকে ওই আইনের আওতায় ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি চিঠি পেয়ে ঘরেই ছিলাম।’
বিজ্ঞাপন
বাহার বলেন, ‘আমি খুব কষ্ট পেয়েছি, একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমি আইন নির্মাতা হয়ে নিজেই আইন মানি না। আমি বলতে চাই, নির্বাচন কমিশনার যে চিঠি দিয়েছেন সেটা সে নিজের এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে দিয়েছেন। ভাষাগত দিক দিয়ে অনেক সমস্যাও আছে। কোনো সংসদ সদস্যকে সে নির্দেশ দিতে পারেন না। এমনকি চিঠিটাও অসম্পাদিত ছিল। এই আইন নিয়ে আমি সংসদেও কথা বললো। আইনটি পরিবর্তনের জন্য আমি হাইকোর্টে রিট করেছি। আইনটি পরিবর্তন হবে।'
এমপি বাহার বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের চিঠি কুমিল্লার নির্বাচনে আমাকে এগিয়ে দিয়েছে। এই চিঠিটা না দিলে কুমিল্লার মানুষ এতটা বিক্ষুব্ধ হতো না।’ এজন্য তিনি নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানান।
এ সময় আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আমি কুমিল্লা ছাড়তে পারি না। আমি করোনা মহামারির সময় কুমিল্লাতেই ছিলাম। একবার হজে গিয়েছিলাম, তখন মূর্তি ভাঙার ঘটনা ঘটে। আমি কুমিল্লা ছাড়তে পারি না।
কুমিল্লায় ভোটের পরিবেশ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাহার বলেন, শান্তির কুমিল্লায় উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হচ্ছে। উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে সবাই ভোট দিচ্ছে। কোথাও কোনো গণ্ডগোল নেই, ঝামেলা নেই।
কুমিল্লা সদরের এই সংসদ সদস্য বলেন, প্রশাসনকে বলতে চাই, অতি উৎসাহী কোনো কর্মকর্তা যেন পরিবেশ নষ্ট না করে। সারা কুমিল্লায় উৎসবের আমেজ। সেই আমেজ যেন নষ্ট না করে।
কারই/জেবি
