সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

ইসির অগ্নিপরীক্ষা শুরু

বোরহান উদ্দিন
প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২২, ০৮:০৮ এএম

শেয়ার করুন:

ইসির অগ্নিপরীক্ষা শুরু
ছবি: ঢাকা মেইল

নির্ধারিত সময় বুধবার (১৫ জুন) সকাল আটটা থেকে শুরু হয়েছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। চলবে বিকাল চারটা পর্যন্ত। এরমধ্য দিয়ে শুরু হলো কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের অগ্নিপরীক্ষা। কারণ এটিই তাদের আমলের প্রথম ভোট। 

শুরু থেকে কমিশনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু ভোটের বিষয়ে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী চলে নানা কার্যক্রম। কিন্তু শেষ বেলায় এসে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের নির্বাচনে আচারবিধি লঙ্ঘন নিয়ে কিছুটা বেকায়দায় পড়ে ইসি। 


বিজ্ঞাপন


প্রথমে অভিযোগ খতিয়ে দেখে আচারণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পেয়ে সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন বাহারকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয় ইসি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি এলাকা ছাড়েননি। 

উল্টো ইসির এমন নির্দেশনা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন কুসিকের আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী আরফানুল হক রিফাত। 

এমন নির্দেশনা ইসি দিতে পারেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।

২৮ মে থেকে নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়। প্রচারণার প্রথম থেকেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই বলে অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু ও নিজাম উদ্দিন কায়সার। এর মধ্যে ৮ জুন থেকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। নির্বাচন কমিশন থেকে তাকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিলেও তোয়াক্কা করেননি।


বিজ্ঞাপন


vote

সাবেক মেয়র ও এবার টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু অভিযোগ, এই সংসদ সদস্য আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনি এলাকায় অবস্থান করছেন। নির্বাচনে এর বেশ প্রভাব পড়বে। অন্য প্রার্থীরাও একই অভিযোগ করেছেন।

এদিকে সংসদ সদস্যের এমন কর্মকাণ্ডে যখন সমালোচনার মুখে পড়ে ইসি তখন গত সোমবার কুমিল্লায় আসেন নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান ও রাশেদা সুলতানা। 

রাশেদা সুলতানা বলেন, যদি ভোটের পরিস্থিতি ভালো না থাকে তাহলে নির্বাচন স্থগিত করা হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা রয়েছে।

এমপি বাহারের বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার একজন জনপ্রতিনিধি। ওনারা আইন প্রণয়ন করেন। যদি ওনারাই আইন না মানেন তাহলে আর কী বলার! ওনাকে তো আর আমরা টেনে-হিঁচড়ে নামাতে পারি না।

আর আহসান হাবিব বলেন, ভোটের পরিস্থিতি ভালোই আছে। কোনও খারাপ ঘটনা এখনও ঘটেনি। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সুষ্ঠু ভোটের জন্য যা যা দরকার সবই করা হয়েছে।

তিনিও বলেন, চিঠি দেওয়ার পরও একজন আইনপ্রণেতা তা না মানলে এতে কার সম্মান ক্ষুণ্ন হলো তা ভেবে দেখা উচিত।

ইসির পক্ষ থেকে শেষ পর্যন্ত এক সংসদ সদস্যের বিষয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ না হওয়ায় জাতীয় নির্বাচনে তারা কি করবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

এমন প্রশ্নের মুখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অবশ্য বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে সংদস সদস্যদের বিষয়ে কি করবেন তা তারা জানেন না। 

এদিকে ইসির এমন অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, নতুন কমিশনের কাছে মানুষের নতুন বা ভিন্নমাত্রার চাওয়া থাকে। এ কারণে নতুন এই কমিশনের জন্যও চ্যালেঞ্জটা বড়। কিন্তু কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে নতুন এই কমিশন যেভাবে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে, তাতে মানুষের হতাশা বাড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, একটি নির্বাচন কমিশনের অফুরন্ত ক্ষমতা। নির্বাহী আদেশে অনেক কিছুই করতে পারে। নির্বাচন সুষ্ঠু করার তাগিদে পরিপত্রের পরিবর্তন করার ক্ষমতাও রাখে।

এদিকে নির্বাচনে নিরাপত্তার বিষয়ে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেছেন, কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে অনুষ্ঠিত হবে কুমিল্লা সিটি নির্বাচন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবে থাকবে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও ম্যাজিস্ট্রেট। ভোটারের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে আমরা প্রস্তুত।

অন্যদিকে এবার সবগুলো ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এতে ভোটার ও প্রার্থীদের আস্থা বাড়বে বলে মনে করছে ইসি। 

প্রতিনিধি/বিইউ/কারই/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর