শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

গাজীপুর সিটি নির্বাচন: অপেক্ষায় প্রায় ১২ লাখ ভোটার

খলিলুর রহমান
প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২৩, ১১:৫৫ পিএম

শেয়ার করুন:

গাজীপুর সিটি নির্বাচন: অপেক্ষায় প্রায় ১২ লাখ ভোটার

রাত পোহালেই গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সকাল আটটায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে। শেষ হবে বিকাল ৪টায়। এবার প্রথমবারের মতো ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে রয়েছে উত্তেজনাও। এক কথায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর সিটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে মোট ৩৩৩ জন প্রার্থী। এর মধ্যে মেয়র পদে আটজন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন প্রার্থী। তাদের ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন ভোটার। এদের মধ্যে পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ ও পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী এবং ১৮ জন রয়েছে হিজড়া ভোটার। এ সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০ ও মোট ভোট কক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি। ইতোমধ্যে প্রতিটি ভোট কেন্দ্র ভোটের সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


বুধবার (২৪ মে) সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, ভোট কেন্দ্র ভোটের সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ইভিএম মেশিনগুলো বসানো হচ্ছে। এছাড়াও প্রতিটি কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করেছেন।

এ ব্যাপারে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার মাধ্যমে গাজীপুরের সিটি করপোরেশনের নাগরিকদের জন্য সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারি সেটা নিশ্চিত করব। নির্বাচন কেন্দ্রের আশেপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোবাইল ডিউটি, স্ট্রাইকিং ফোর্স, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। এটা একটা সমন্বিত প্রয়াশ। আমরা সবাই মিলে একসাথে কাজ করব।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য। জনগন আসবে সুষ্ঠু, সুন্দরভাবে ভোট দিয়ে যাতে চলে যেতে পারে। আমরা দেখিয়ে দিতে চাই পুরো গাজীপুরসহ সারা বিশ্বের লোকজন তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে। আমরা যাতে একটি ভালো সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারি।

কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা বুধবার (২৪ মে) পর্যন্ত সুন্দরভাবে চলে আসছি। আগামীকাল নির্বাচনের দিন আপানারা যাতে সুন্দরভাবে জাতি ও দেশবাসীকে জানাতে পারেন সে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করবো। সিটি নির্বাচনে ৪৮০ টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৫১ টি কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং ৩৫১ টি কেন্দ্রে আমরা আলাদাভাবে গুরুত্ব দিব।


বিজ্ঞাপন


নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল সদস্যদের উদেশ্যে তিনি বলেন, প্রিজাইডিং অফিসাররের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আছে। যে কোনো বিষয়ে প্রিজাইডিং অফিসাররের যোগাযোগ করে আইনুনানুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। ভোট কেন্দ্র সঠিক ভাবে আছে কিনা। নিরাপত্তার কোনো ঝুঁকি আছে কিনা। কোথায় নিরাপত্তার ঝুঁকি। এসব বিষয়ে প্রিজাডিং অফিসারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। আমাদের পারস্পারিক যোগাযোগের মাধ্যমে আমরা যাতে নির্বাচনটা সঠিকভাবে করতে পারি।

যখন ভোট গ্রহণ শুরু হবে সবাই যাতে লাইনে দাঁড়াতে পারে, কেউ যেন পেশী শক্তি ব্যবহার করতে না পারে, কেউ যাতে ও মাস্তানি করতে না পারে এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে। ভোটার ও জনগণের সাথে সুন্দর ব্যবহার করতে হবে। আমাদের অনেক মা বোনেরা আছে, মা বোনদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করতে হবে। অনেক ভোটার আসবে হয়তো চোখে দেখে না, পায়ে হাটতে পারেনা, যেভাবে সাহায্য করা যায় সাহায্য করবেন।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসনসহ সকল বাহিনী মিলে সিটি নির্বাচনকে সফল করার জন্য কাজ করছে। নির্বাচন কমিশনসহ সকলের একটাই চাওয়া সবাই যেন কমিশনকে সহেযোগীতা করে। সকলের সহযোগীতায় মাধ্যমে আমরা যেন গাজীপুরে মডেল নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পারি। সিটি নির্বাচনে পাঁচ স্তরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করে গাজীপুরকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপ-কমিশনার (এসবি) আবুল বাশার মো, আতিকুর রহমান জানান, ৫ হাজার পুলিশ সদস্য, প্রতি কেন্দ্রে ২ জন করে মোট ৯৬০ জন আনসার ব্যাটালিয়ান, প্রতি কেন্দ্রে ১০ জন করে ৪ হাজার ৮০০ গ্রাম পুলিশ, ৫৭ টি ওয়ার্ডে একজন নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে।

এছাড়াও নগরীর ৫৭ টি ওয়ার্ডে ৫৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট এবং ১৯ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ২০ প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‍্যাব) সদস্য মোতায়েন থাকবে।

এদিকে, এবারের গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদের প্রার্থীরা হলেন- নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ। মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। এ ছাড়া স্বতন্ত্র থেকে মেয়র পদে টেবিলঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ ও হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

কেআর/একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর