প্রায় আট বছর পর অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বিএনপি। টানা তিন দিনের এই কর্মসূচির প্রথম দিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। অবরোধের প্রথম দিনে ৯টি জায়গায় সংঘর্ষে অন্তত তিনজন নিহত ও ১২৫ জন আহত হয়েছেন। আজ দ্বিতীয় দিন। রাজধানীসহ সারাদেশে পালিত হচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা দলগুলোর ডাকা সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি।
এদিনও রাজধানীতে সীমিত সংখ্যক যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও। এরমধ্যে রাজধানীর নর্দা কালা চাঁদপুর, কোকাকোলা, নতুন বাজার, বাঁশতলা ও বাড্ডা এলাকায় খুব একটা চোখে পড়েনি গণপরিবহন। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে অফিসগামীদের। অনেককেই অপেক্ষা করতে দেখা গেছে দীর্ঘ সময় ধরে।
বিজ্ঞাপন
বুধবার সকাল থেকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা রাস্তায় বের হতে দেখা যায়নি সাধারণ মানুষকে। দূরপাল্লার বাসগুলোকে দেখা গেছে বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান করতে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। ট্রেন চলছে, তবে সীমিত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে।
এর আগে প্রথম দিনের অবরোধের শুরুতে কিছুটা চলাচল করলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সীমিত হতে থাকে যান চলাচল। ফলে ফাঁকা দেখে গেছে রাজধানী। দেশের অন্য জেলায়ও ছিল একই চিত্র। সাধারণ মানুষ জরুরি কাজ ছাড়া বাইরে যাননি। দূরপাল্লার বাস কম ছেড়েছে। ট্রেন চলেছে, তবে যাত্রী কম ছিল। লঞ্চ ছেড়েছে। তাতেও যাত্রী কম ছিল।
আরও পড়ুন
ওই দিন সূর্যের আলোর তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংঘর্ষের খবর আসতে শুরু করে। অবরোধ কর্মসূচি পালনের জন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা রাস্তায় নামলে নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মানিকগঞ্জসহ অন্তত ৯টি জায়গায় সংঘর্ষ হয়। এর মধ্যে পাঁচ জায়গায় সংঘর্ষ হয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের। তিন জায়গায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপির এবং এক জায়গায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি, নারায়ণগঞ্জে দুটি ও কেরানীগঞ্জে একটি বাস পোড়ানো হয়েছে। বগুড়ায় কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানের একটি কাভার্ড ভ্যানে পেট্রোল বোমা ছুড়ে আগুন দেওয়া হয়েছে এবং ভাঙচুর করা হয়েছে বাসসহ ৮ থেকে ১০টি যানবাহন। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ৮টি ও ঢাকার সাভারে ২টি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। সিলেটে যাত্রীবাহী বাসে ভাঙচুর করে আগুন দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। পাবনার ঈশ্বরদীতে ৫টি অটোরিকশাসহ ১৫টি যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সিলেটে খড় জমা করে রেললাইনে আগুন ধরানো হয়েছিল।
রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির নেতাকর্মীরা অবরোধের সমর্থনে ঝটিকা মিছিল করেন। দুপুরে চানখাঁরপুল এলাকায় বিএনপির মিছিল থেকে হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন।
এদিকে অবরোধের প্রথম দিনে খোলা ছিল রাজধানীসহ সারাদেশের বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। তবে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি হাতে গোনা। বিপণিবিতানগুলোতে ক্রেতা ছিল স্বল্প সংখ্যক। ফলে ভালো হয়নি বেচাকেনা। বিনোদনকেন্দ্রগুলো ছিল অনেকটা ফাঁকা। বিভিন্ন জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটক কমেছে। সব মিলিয়ে দেশের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে।
এইউ











































