২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকরণ ও টেকসই প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে। এবারের বাজেট পূর্ববর্তী বছরগুলোর তুলনায় কিছু দিক থেকে ব্যতিক্রম। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম।
এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা। নতুন বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৬২ শতাংশ। এ ঘাটতি পূরণে সরকার বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংক ঋণ এবং সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করবে।
বিজ্ঞাপন
দেশের জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেটকে আরও এগিয়ে নিতে বাজেটে ব্যাট উৎপাদন খাতকেও উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। দেশীয় ব্যাট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রপ্তানির পরিকল্পনাও করছে। এ লক্ষ্যে ব্যাট তৈরির জন্য কাঠ আমদানিতে বর্তমান ৩৭ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ২৬ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে প্রান্তিক পর্যায়েও সাশ্রয়ী মূল্যে ব্যাট সরবরাহ সম্ভব হয়।
এবারের বাজেটে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে; মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা। তবে শুধু শহর নয়, গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধিতেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রথা অনুযায়ী, বাজেট সাধারণত জুন মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার উপস্থাপন করা হলেও এবার ঈদুল আজহার আগে বাজেট পেশ করা হয়েছে। সংসদ ভেঙে যাওয়ায় এবারের বাজেট নিয়ে সংসদীয় বিতর্ক বা আলোচনা হবে না। তবে বাজেট ঘোষণার পর জনমত নেওয়া হবে, এবং অর্থ মন্ত্রণালয় নাগরিকদের কাছ থেকে মতামত গ্রহণ করবে।
চূড়ান্তকরণের পর বাজেট উপস্থাপন করা হবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে। অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতি একটি অধ্যাদেশ জারি করে বাজেট কার্যকর করবেন, যা ১ জুলাই ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।