প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনাবিরোধী বলে মন্তব্য করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (০৩ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) আয়োজিত বাজেট বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এ মন্তব্য করেছে সিপিডি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এবং গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
বাজেট বিশ্লেষণে বক্তারা বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট আকারের দিক থেকে ব্যতিক্রমী। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ছোট। এই বাজেটে প্রবৃদ্ধির পরিবর্তে সামগ্রিক উন্নয়নের ওপর এবং ভৌত অবকাঠামোর পরিবর্তে মানুষের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে দুঃখজনকভাবে, এসব উদ্দেশ্যের পেছনে বাজেটীয় ব্যবস্থা বা পদক্ষেপগুলো যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি।
বক্তারা বলেন, প্রস্তাবিত ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে ভৌত অবকাঠামোর পরিবর্তে মানুষের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও বাজেটের থিম ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গঠন। কিন্তু এর সঙ্গে কিছু রাজস্ব ব্যবস্থা সাংঘর্ষিক।
প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কিছু ইতিবাচক উদ্যোগ প্রস্তাব করা হয়েছে। যার মধ্যে কর ছাড়, বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ ও প্রণোদনা এবং ক্ষতিকর কার্যকলাপের ওপর উচ্চ হারে কর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে প্রস্তাবিত বাজেট চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোকে সামগ্রিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে, যা জনগণ ও ব্যবসার জন্য বাস্তবিক স্বস্তি আনতে পারত।
বিজ্ঞাপন
এতে আরও বলা হয়, বাজেটের থিম একটি ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গঠন। কিন্তু এর সঙ্গে কিছু রাজস্ব ব্যবস্থা সাংঘর্ষিক।
সিপিডি আশা করে, অর্থ উপদেষ্টা বাজেটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব, বিশেষ করে অঘোষিত আয় বৈধ করার মতো বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনা ও সংশোধন করবেন। এই কঠিন সময়ে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন।
এর আগে, গতকাল সোমবার তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, বাজেটে বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু উদ্দেশ্যের সঙ্গে বাস্তবে যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়নি।
তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে কাঠামোগত পরিবর্তনে সেটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে যে, একই কাঠামোর মধ্যে এখানে একটু বেশি, ওখানে কম, এরকমভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বাজেটের আকার নিয়ে অনেকদিন ধরে আলোচনা হচ্ছে। সেটার অন্যতম কারণ হচ্ছে আমাদের যে চলমান অর্থনৈতিক সংকট অর্থাৎ উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগে স্থবিরতা, কর্মসংস্থানের সমস্যা এবং কম রাজস্ব আহরণ।
এর প্রেক্ষিতেই অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা বাজেটটি উপস্থাপন করেছেন বলে আমাদের মনে হয়।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়ে তিনি বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে গত অর্থবছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ২ শতাংশ কমানো হয়েছে। ১৫টি খাতের মধ্যে ১৪টিতেই বরাদ্দ কমানো হয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি- এ তিনটি খাতে টাকার অংকে বরাদ্দ কমানো হয়েছে।
এমআর/এএস