মূল্যস্ফীতি আগামী জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৭ শতাংশ নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। মূল্যস্ফীতি কমলে একইসঙ্গে সুদহারও কমানো হবে বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর তার এ প্রত্যাশার কথা জানান।
বিজ্ঞাপন
গভর্নর বলেন, মূল্যস্ফীতির বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এক্সচেঞ্জ রেট। এটা কমাতে না পারলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ত। এখন এটা স্বস্তিতে এসেছে। এক্সচেঞ্জ রেট বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পরও তেমন পরিবর্তন হয়নি। এতে করে আস্থা এসেছে, মূল্যস্ফীতি একটি ভালো জায়গায় যাচ্ছে।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমরা যদি পরিসংখ্যান দেখি— খাদ্য মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১৪ শতাংশ ছিল, এখন তা সাড়ে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি একটু বেশি আছে। এটি কমছে, এখন ১০ শতাংশের নিচে আছে। বিশ্ববাজারে খাদ্য, তেল-গ্যাসের দর কমতির দিকে। এর সুফল পাবে। এ ছাড়া মুদ্রানীতি সংকোচনমূলক করা হয়েছে। আশা করছি আগামী জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৭ শতাংশে নেমে আসবে মূল্যস্ফীতি।
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আসন্ন ঈদ ও রোজার ঈদের বাজার তুলনামূলকভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখবেন আমরা এখন স্বস্তির মধ্যে আছি। এখন ভোক্তাদের অধিকার নিয়ে যত কথা বলছি, কৃষকের অধিকার নিয়ে অতটা বলি না। এখন ভোক্তারা অল্প দামে আলু পেলেও কৃষকরা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না।
বিজ্ঞাপন
উপদেষ্টা বলেন, আপনারা যদি ঈদ বা রোজার বাজার তুলনামূলকভাবে বিশ্লেষণ করেন, তাহলে দেখবেন বর্তমানে আমরা স্বস্তির মধ্যে আছি। গতবারের চেয়ে এবার আমাদের সবগুলো ফসল বেশি উৎপাদন হয়েছে। আমাদের কোল্ড স্টোরেজগুলো আলুতে ভরে গেছে। কৃষকের ঘরেও আলু রয়েছে।
এবার আদা, পেঁয়াজ, ভুট্টার উৎপাদনও বাম্পার হয়েছে। শীত ও গ্রীষ্মের এক মাস ব্যবধানে কৃষকের সবজি নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য আমরা ১০০টির মতো ছোট কোল্ড স্টোরেজ করছি। আলু এবং বীজের আলু রাখার জন্য আলাদা করে বড় চারটি কোল্ড স্টোরেজ করে দিচ্ছি। আগামী সবজি ওঠার আগেই আমরা এসব কোল্ড স্টোরেজগুলো তৈরি হয়ে যাবে। পেয়াজ সংরক্ষণের জন্য প্রায় ৫০০টির মতো ঘর করে দিচ্ছি যাতে চার-পাঁচ মাস এটি সংরক্ষণ করা যায়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বিদ্যুৎ জ্বালানি সড়ক সেতু ও রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বাণিজ্য, বিমান এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানসহ বিভিন্ন আর্থিক খাতের প্রধানরা।
এর আগে, সোমবার (২ জুন) দুপুর ৩টায় বাজেট প্রস্তাব শুরু করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম ও দেশের ৫৪তম বাজেট।
প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম।
টিএই/এমএইচটি