জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে এসেও এখন পর্যন্ত জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার কিংবা বিচারের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই বলে জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এছাড়া ঐতিহাসিক বিজয় অর্জনের বর্ষপূর্তিতে অভ্যুত্থানপন্থী সব ছাত্র-জনতাকে অভিনন্দন ও রক্তিম শুভেচ্ছা জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দফতর সম্পাদক শাহাদাত হোসেনের পাঠানো এক বার্তায় এই শুভেচ্ছা জানানো হয়।
শুভেচ্ছা বার্তায় বলা হয়, জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় দিন। ঠিক গত বছরের এই দিনে সহস্রাধিক শহীদ ও আহতদের রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট ও খুনি হাসিনার পলায়নের মধ্যদিয়ে দীর্ঘ প্রায় দেড় দশকের দুঃশাসন ও ফ্যাসিবাদের জাঁতাকল থেকে মুক্তি পায় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি।
বিজ্ঞাপন
আজকের এই ঐতিহাসিক দিনে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সেই সাহসী ছাত্র-তরুণ, শ্রমিক, শিক্ষক, শিল্পী, পেশাজীবীসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষকে; যাদের আত্মত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি এই নতুন বাংলাদেশ। একইসঙ্গে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের, যাদের রক্তে রঞ্জিত পথ ধরে এসেছে আমাদের এই মহান বিজয়। সেই সঙ্গে অকুণ্ঠ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সেই আহতদের প্রতি যারা মাতৃভূমির মুক্তি নিশ্চিত করতে বরণ করে নিয়েছেন চিরতরে পঙ্গুত্ব, হারিয়েছেন দৃষ্টিশক্তি।
বার্তায় বলা হয়, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে স্কুলছাত্র, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, মাদরাসাপড়ুয়া, শিক্ষক, নারী, শ্রমিক ও পেশাজীবীসহ বিভিন্ন স্তরের জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণে সংঘটিত এই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা কেবল ফ্যাসিস্ট ও খুনি হাসিনার পতন কিংবা ক্ষমতা হস্তান্তর ছিল না; বরং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার সম্পূর্ণ বিলোপ এবং একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে এসেও এখন পর্যন্ত জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার কিংবা বিচারের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।
একইসঙ্গে রাষ্ট্রযন্ত্রে এখনও বহাল রয়েছে বহু ফ্যাসিবাদী উপাদান, যা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরিপন্থি এবং শহীদদের রক্তের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। মনে রাখতে হবে, এই ফ্যাসিবাদী উপাদানসমূহের মূলোৎপাটন না করতে পারলে আমাদের কাঙ্ক্ষিত ‘জুলাই-পরবর্তী বাংলাদেশ’ গঠন সম্ভব নয়। তাই সব ছাত্র-জনতাকে গণঅভ্যুত্থানোত্তর নয়া বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
তবে আশার কথা হলো, গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে এসে বিচার ও কাঠামোগত পরিবর্তন সম্পূর্ণ দৃশ্যমান না হলেও জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষিত সংস্কার কার্যক্রম কিছুটা হলেও অগ্রসর হয়েছে। একইসঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে বহু প্রতীক্ষিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ আজ ঘোষণা হতে যাচ্ছে।’
বিজ্ঞাপন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এজন্য সংশ্লিষ্ট সব রাজনৈতিক দলকে আন্তরিক সাধুবাদ এবং কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে।
এএসএল/এফএ

















































































