শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ঢাকা

শহিদুল ইসলাম: ক্যানসার জয়ী এক সাহসী যোদ্ধার গল্প

ইউসুফ দেওয়ান রাজু , সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৩৪ পিএম

শেয়ার করুন:

শহিদুল ইসলাম: ক্যানসার জয়ী এক সাহসী যোদ্ধার গল্প

ক্যানসারের বিরুদ্ধে কঠিন লড়াইয়ের পর, সিরাজগঞ্জের এক সাধারণ ব্যক্তি শহিদুল ইসলাম এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। তার চিকিৎসা ও সুস্থ হওয়ার গল্প আশার আলো হয়ে উঠেছে অন্যান্য ক্যানসার রোগীদের জন্য। শহিদুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়নের দর্জি কারিগর, কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৯ সালে অপারেশন করান। প্রায় পাঁচ মাসের চিকিৎসার পর, তিনি আবার কর্মক্ষম হয়ে উঠেছেন এবং তার জীবনে নতুন আশা দেখা দিয়েছে।

ভয় ও সাহসের মুহূর্ত
২০১৮ সালে শহিদুল ইসলাম শরীরে অস্বস্তি অনুভব করতে শুরু করেন। কাজ করতে গিয়ে শ্বাসকষ্ট, দুর্বলতা এবং অসন্তোষের কারণে, তিনি চিকিৎসকের কাছে যান। ২০১৯ সালের জুনে সিরাজগঞ্জ শহরের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. কে এইচ মুরাদ তার পরীক্ষা করেন এবং কোলন ক্যানসারের কথা জানান। খবরটি শুনে তিনি ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন, তবে পরিবার ও চিকিৎসকদের সাহস পেয়েছিলেন। শহিদুল বলেন, ‘ক্যানসার মানেই মৃত্যু, এমনটাই মনে করেছিলাম। কিন্তু চিকিৎসকদের সহায়তা এবং পরিবারের সমর্থন আমাকে সাহস জোগায়।’


বিজ্ঞাপন


পরিবারের অবদান ও চিকিৎসার সফলতা
চিকিৎসা শুরু হওয়ার পর, শহিদুল ইসলাম এনায়েতপুরের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. দীপক শংকর রায়-এর কাছে যান এবং সেখানে নিশ্চিত হন ক্যানসারের বিষয়টি। এরপর অপারেশনের মাধ্যমে তার চিকিৎসা শুরু হয়। শহিদুল ইসলামের পরিবার বিশেষত তার ছেলে সোহাগ সরকার বলেন, ‘আমরা প্রথমে অনেক ভেঙে পড়েছিলাম, কিন্তু এখন বাবার সুস্থতায় আমরা খুশি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।’

আরও পড়ুন—

shiraj-jang-4


বিজ্ঞাপন


ডাক্তারদের মতে, ক্যানসার এখন নিরাময়যোগ্য
জেনারেল সার্জন ডা. কে এইচ মুরাদ বলেন, ‘ক্যানসার এখন অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসাযোগ্য, যদি সঠিক সময়ে তা ধরা পড়ে। আমাদের দেশে আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক ক্যানসার রোগী সুস্থ হয়ে উঠছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন বাংলাদেশে অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠান ক্যানসারের ফ্রি পরীক্ষার ব্যবস্থা রেখেছে, এবং নিয়মিত চেকআপ করলে অনেক ক্যানসারকে প্রতিরোধ করা সম্ভব।’

চিকিৎসার ব্যয় এবং দরিদ্র রোগীদের সংকট
বাংলাদেশে ক্যানসারের চিকিৎসা খরচ অনেক বেশি, এবং অনেক দরিদ্র পরিবার উচ্চ চিকিৎসা ব্যয়ের কারণে তাদের সঞ্চয় শেষ করে ফেলে। শহিদুল ইসলাম জানান, অপারেশন ও চিকিৎসার জন্য তার প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। অনেক পরিবার এমন ব্যয় বহন করতে না পারায় মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ করে দেয়। তবে শহিদুল ইসলামের গল্প অন্য রোগীদের জন্য একটি আশার বার্তা, যে সঠিক সময়ে চিকিৎসা ও সাহসিকতা থাকলে ক্যানসারও জয় করা সম্ভব।

আরও পড়ুন—

 

shiraj-jang-3

ক্যানসার জয়ী শহিদুল ইসলামের বার্তা
শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এখন সুস্থ। পরিবার এবং চিকিৎসকদের সহায়তায় আমি এই রোগ জয় করেছি। এখন আমি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ এবং আমার জীবনে নতুন একটি সূচনা হয়েছে।’

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর