দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রেল দুর্ঘটনা ঘটে ১৯৮৯ সালের ১৫ জানুয়ারি। টঙ্গীর কাছে মাজুখান এলাকায় দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় সেদিন। এতে প্রাণ হারান ১৭০ জন যাত্রী। আহত হন আরও অন্তত ৪০০ জন।
এক মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে আবারও ট্রেন দুর্ঘটনার সাক্ষী হয় বাংলাদেশ। ১৯৮৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের কাছাকাছি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ১৩ জন নিহত হন। আহত হন আরও দুই শতাধিক মানুষ।
এর আগে, ১৯৮৩ সালের ২২ মার্চ ঈশ্বরদীর কাছে সেতু পার হওয়ার সময় কয়েকটি স্প্যান ভেঙে পড়ে। নিচে শুকনো জায়গায় গিয়ে পড়ে ট্রেনের কয়েকটি বগি। এতে ৬০ জন যাত্রী প্রাণ হারান।
বিজ্ঞাপন
১৯৮৫ সালের ১৩ জানুয়ারি খুলনা থেকে পার্বতীপুরগামী সীমান্ত এক্সপ্রেসের কোচে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। এতে প্রাণ যায় ২৭ জনের।
পরের বছর ১৫ মার্চ সর্বহারা পার্টির নাশকতায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার কাছে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে নদীতে পড়ে যায়। নিহত হন ২৫ জন যাত্রী।
১৯৯৫ সালের ১৩ জানুয়ারি রাত সোয়া ৯টায় দিনাজপুরের হিলি স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা গোয়ালন্দ থেকে পার্বতীপুরগামী লোকাল ট্রেনকে ধাক্কা দেয় সৈয়দপুর থেকে খুলনাগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস। মুখোমুখি সংঘর্ষে লোকাল ট্রেনের ইঞ্জিনসহ দুটি বগি আন্তঃনগর ট্রেনের ওপর উঠে যায়। এতে দুই ট্রেনের ৫০ জনের বেশি যাত্রী প্রাণ হারান। আহত হন দুই শতাধিক যাত্রী।
২০১০ সালে নরসিংদীতে চট্টগ্রামগামী মহানগর গোধূলি এবং ঢাকাগামী চট্টলা এক্সপ্রেসের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। চালকসহ প্রাণ হারান ১২ জন।
২০১৬ সালে নরসিংদীর আরশীনগর এলাকায় ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়াগামী তিতাস কমিউটর ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়। এতে দুইজন নিহত ও অন্তত ১০ আহত হন। কারণ ছিল ভুল সিগন্যাল।
২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় আরও ৫ জনের। গাজীপুরের টঙ্গীতে ঢাকা-জয়দেবপুর রেললাইনে একটি কমিউটর ট্রেনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে এ ঘটনা ঘটে।
পরের বছর ২০১৯ সালের ২৩ জুন মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। উপজেলার বরমচাল রেলক্রসিং এলাকায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেসের চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে খালে ছিটকে পড়ে। এতে নিহত হন ছয় জন।
প্রায় ৫ মাস পর ওই বছরের ১১ নভেম্বর রাত পৌনে ৩টার দিকে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দবাগ স্টেশনে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৬ জন প্রাণ হারান।
সবশেষ সোমবার বিকেল তিনটার দিকে ভৈরবে এগারসিন্ধুর ট্রেনের পেছনে ধাক্কা দেয় একটি মালবাহী ট্রেন। এতে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়া এগারসিন্ধুর ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এর মধ্যে শেষের তিনটি বগি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বিজ্ঞাপন
এখন পর্যন্ত ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন বহু মানুষ।
দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ২২ জনকে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে দুইজন শিশুও রয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
কারই/ এজে




























