সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

শিশুসহ গুরুতর ২২ জনকে ঢাকায় প্রেরণ, ঢামেকে ভর্তি ৮

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর ২০২৩, ১০:৫৬ পিএম

শেয়ার করুন:

শিশুসহ গুরুতর ২২ জনকে ঢাকায় প্রেরণ, ঢামেকে ভর্তি ৮

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে স্মরণকালে ভায়বহ ট্রেন দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ২২ জনকে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে দুইজন শিশুও রয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের চিকিৎসায় শতাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন বলেও জানানো হয়েছে। 

এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ভৈরব হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ১৬ জনের লাশ রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৩ জন ঘটনাস্থলে মারা যান এবং তিনজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাদের মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে। 


বিজ্ঞাপন


সোমাবর (২৩ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের জরুরি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

অধিদফতরের পক্ষ থেকে হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান ও প্রশাসন শাখার উপ-পরিচালক ডা. মুজিবুর রহমান এসব তথ্য জানান।

ডা. মঈনুল আহসান জানান, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে যাত্রীবাহী ট্রেনের সাথে মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় অন্তত ২০ জন নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। ভৈরব রেলস্টেশনের আউটার পয়েন্টে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার সাথে সাথেই কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ও ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। যার মধ্যে প্রায় ১৫ জন চিকিৎসক, নার্স, এসএসিমো, স্বাস্থ্য সহকারী, সিএইচসিপি ও অন্যান্য চিকিৎসাকর্মীরা ছিলেন। একইসঙ্গে ১০ টা অ্যাম্বুলেন্স রোগী পরিবহনের জন্য পাঠানো হয়।

ঘটনার সাথে সাথে বিপুল সংখ্যক রোগীকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে করে পাঠানো হয়। সেখানে প্রায় ৪০ জন বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকের সাথে অন্যান্য চিকিৎসা কর্মী কাজ করছে। পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে অতিরিক্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী পাঠানো হয়েছে। পর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে পার্শ্ববর্তী হাসপাতাল থেকে আনার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 


বিজ্ঞাপন


ভৈরব হাসপাতালের তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, সেখানে প্রায় ৭৫ জন রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। যাদের মধ্যে ২২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। হাসপাতালটিতে ১৬ জনের মৃতদেহ আছে এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদেরকে পরিবার এর কাছে হস্তান্তর করা হবে। এখনও ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ রোগী আসছে এবং তাদেরকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কিশোরগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন, ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ অবস্থান করে চিকিৎসা কার্যক্রম সমন্বয় করছেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছেন। দুর্ঘটনার পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া  জেলা হাসপাতাল ও নিকটবর্তী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে জরুরিভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। 

ঢাকায় প্রস্তুতির তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় গুরুতর রোগীদের ঢাকায় আনা হচ্ছে। তাদের সেবা নিশ্চিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, নিটোর ও নিউরোসাইন্স ইন্সটিটিউট হাসপাতালকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আগত রোগীদের জরুরিভাবে সেবা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ৮ জন গুরুতর আহত রোগী ঢামেক হাসপাতাল, ৮ জন নিটোর ও একজন নরসিংদী ১০০ শয্যা হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে। 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য সচিব ও অধিদফতরের সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থা মনিটরিং করছেন বলেও জানান তিনি। 

অধিদফতরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, ভৈরব উপজেলা ও পাশ্ববর্তী হাসপাতালগুলোর সকল টিম কাজ করছেন। এর মধ্যে ভৈরব উপজেলা হাসপাতালের ২০ জন চিকিৎসক, আশেপাশের হাসপাতালগুলোর ৪০ জনের অধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ শতাধিক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন। সরকারি বেসরকারি সকল পর্যায়ের অ্যাম্বুলেন্স সাপোর্ট প্রদান করা হয়েছে। ব্যথানাশক ওষুধ ও সেলাইন আশেপাশের জেলাগুলো থেকে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সচিব ও ডিজি মহোদয় সার্বক্ষণিক দেখাশুনা করছেন। 

সংবাদ সম্মেলনে কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম ও ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. বুলবুল সামগ্রিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন।

এমএইচ/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর