২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় পড়া শুরু হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার পর রায় পড়া শুরু করেন।
বিজ্ঞাপন
সকাল ১১টার দিকে রায় পড়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দেড় ঘণ্টা দেরি হয়। রায় ঘোষণা সরাসরি সম্প্রচার করছে বিটিভি ও বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ট্রাইব্যুনালের ফেসবুক পেজ থেকেও সরাসরি মামলার রায় ঘোষণা দেখানো হচ্ছে। পাশাপাশি ঢাকার দশটি পয়েন্টে দেখা যাচ্ছে বড় পর্দায়।
দেড় দশক ধরে দোর্দণ্ড প্রতাপের সঙ্গে দেশ শাসন করা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ (প্রসিকিউশন) সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি করেছে। যদি আদালত এতে সম্মতি জানায়, তাহলে এটি দেশের ইতিহাসে প্রথমবার যেকোনো রাষ্ট্র বা প্রধানমন্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
অন্যদিকে, আসামিদের নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়েছেন তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী। এ ছাড়া, রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনেরও খালাস চেয়েছেন তার আইনজীবী। মামলায় হাসিনা-মামুন ছাড়া অন্য আসামি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
রায় ঘোষণার আগে ট্রাইব্যুনালে আনা হয় সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুনকে। সকাল সাড়ে আটটার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।
বিজ্ঞাপন
ক্ষমতা হারানোর পর থেকে ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা আদালতের দৃষ্টিতে পলাতক। সে কারণে এ মামলার শুনানিতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাননি।
আরও পড়ুন: যে কারণে আপিলের সুযোগ পাবেন না শেখ হাসিনা
তবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জুলাই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে তার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীও তাকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় আন্দোলনকারী, আহত, প্রত্যক্ষদর্শী, চিকিৎসকসহ মোট ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক আবু সাঈদের বাবা, নিহতদের পরিবারের সদস্য, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলাম, জুলাই আন্দোলনের আরেক নেতা উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
এসব সাক্ষ্যের পাশাপাশি প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে শেখ হাসিনার কথোপকথনের অডিও–ভিডিও, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন, জব্দ করা গুলিসহ নানা আলামত। এক্ষেত্রে একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের সাক্ষ্যও গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গত ১২ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়।
এমআর








































































