গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের বর্বর হামলা, নির্যাতন ও গণহত্যার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে হেফাজতে ইসলাম। প্রতিবাদ সমাবেশে হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান দাবি করেন, ইহুদিরা মুসলমানদের প্রধান শত্রু এবং ইসলামের ইতিহাসে তাদের অবস্থান বরাবরই বিরোধপূর্ণ।
তিনি বলেন, মুসলমানদের জন্য এ সময় সোচ্চার হওয়া অত্যন্ত জরুরি, কারণ ইসরাইলের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বিশ্ব মানবতার জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, রাশিয়া, আমেরিকায় বিক্ষোভ মিছিল হচ্ছে। কারণ ইসরায়েল ফিলিস্তিনের ওপর গাজাতে যে গণহত্যা চালাচ্ছে, তা মানবতাবিরোধী কাজ। অতএব, যারা মানবতার দাবিদার, তাদের জন্য এই হত্যা যজ্ঞের প্রতিবাদ জানানো জরুরি। প্রত্যেক মুসলমানকে এ বিষয়ে সোচ্চার হতে হবে।
তিনি হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালা নিজেই বলেছেন, ইহুদিরা মুসলমানদের এক নম্বর শত্রু, ইসলামের শুরু থেকে ইহুদীবাদ মুসলমানদের বিরুদ্ধে এবং ইসলামের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, ‘‘আপনাদেরকে একটি সুসংবাদ জানাতে চাই, সেটি হল বুখারী শরীফের হাদিসে বলা আছে, কিয়ামতের আগে মুসলমান এবং ইহুদীদের মধ্যে একটা যুদ্ধ হবে। আর এই যুদ্ধে মুসলমানরা বিজয়ী হবে। সেদিন ইহুদীরা গাছের পেছনে, পাথরের পেছনে আত্মরক্ষার জন্য পলায়ন করবে। তখন আল্লাহ তায়ালা সেই পাথর, সেই গাছের জবান খুলে দেবেন। এই গাছ-পাথর বলবে, ‘হে মুসলিম সৈনিক, আমি গাছ এবং পাথরের পেছনে ইহুদী লুকিয়ে আছে, তোমরা এসে তাকে হত্যা করো।’ সেদিন আর বেশি দূর নয়, সেদিনের বেশি বাকি নেই।’’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে ইসরায়েল যে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাচ্ছে, নেতানিয়াহু যে বড় সন্ত্রাসী, বিশ্ব সন্ত্রাসী, তা আর কারো জানার বাকি নেই। নেতানিয়াহুর বিচার করতে হবে। বিশ্ববাসীকে জানাতে চাই, আমাদের বিশ্বনবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সালামের ঘোষণা, ভবিষ্যৎবাণী সে যুদ্ধ কিয়ামতের আগে সংঘটিত হবে। সেই যুদ্ধের মধ্যে মুসলমানরা জয়লাভ করবে এবং ইহুদীরা পরাজিত হবে। একদিন আসবে, ইসরায়েলের কোনো চিহ্ন পৃথিবীর বুকে থাকবে না। আমরা সকলে যেভাবে, যেখান থেকে পারি, প্রতিবাদ করে যাব।’
বিজ্ঞাপন
ইসরায়েল যে গণহত্যা চালাচ্ছে, নারী ও শিশু হত্যা করছে, শহীদ করছে, প্রত্যেকটি মানুষের কর্তব্য কঠোরভাবে নিন্দা জানানো। সেই ইসরায়েলের পণ্য আমাদের বর্জন করা জরুরি। ইসরায়েলের কোনো পণ্য আমরা কিনব না।
তিনি বলেন, ‘একটি ফতোয়া আছে, যদি কোনো ইহুদিবাদী কাফেরী শক্তি কোনো মুসলিম রাষ্ট্র দখল করে, তখন সকল মুসলমানদের ওপর জিহাদ করা ফরজ হয়ে যায়। তাই আমরা সকলে জিহাদের জন্য প্রস্তুতি নেই। যখন সুযোগ সৃষ্টি হবে, তখনই আমরা ইসরায়েলে গিয়ে জিহাদ করব। প্রত্যেক মুসলমানকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পরে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের জন্য দোয়া করার আহ্বান জানাই।’ পাশাপাশি, বাংলাদেশ থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা জানানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
প্রতিনিধি/একেবি