একুশের দুপুরে জমে উঠেছে বইমেলা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর পর বইপ্রেমিরা ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। ছুটি পেয়ে নানা বয়সী মানুষ ছুটে এসেছেন মেলায়। এর ফাঁকে চলছে কেনাকাটা। ক্রেতারা কম বেশি প্রতিটি স্টলে তাদের পছন্দের বইটি কিনতে বই ঘেঁটে দেখছেন। কেউ এক পলকে কিনছেন পছন্দের লেখকের ছড়া, কবিতা ও উপন্যাসটি। আবার কেউ কেউ কবিতা ছড়া আর উপন্যাসের বিপরীতে খুঁজছেন ইতিহাস আর সংস্কৃতিবিষয়ক বই।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বইমেলা ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
উত্তরা থেকে স্বপরিবারে মেলায় এসেছেন আমিনুল ইসলাম। সাথে কলেজ পড়ুয়া মেয়ে, দুই ছোট ছেলে আর স্ত্রী। মেয়ে ক’দিন থেকে তাকে বলছিল মেলায় যাব। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে আসতে পারছিলেন না তিনি। অবশেষে ছুটি পেয়ে আজ সকালে প্রথমেই তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যান। এরপর ছেলে-মেয়েকে নিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে সোজা চলে আসেন বইমেলায়।
আনমিনুল ইসলাম বলছিলেন, সারা বছর তেমন বই কেনা হয় না। মেয়ের পছন্দ হুমায়ুন আহমেদের বই। স্ত্রীর পছন্দ রান্নাবান্না বিষয়ক আর আমার ইতিহাস বিষয়ক। মোটামুটি কয়েক হাজার টাকার বই কিনব। এখনো কেনা শুরু করিনি।
তবে শুধু আমিনুল নন, তার মতো ছুটি পেয়ে মেলায় ভিড় জমিয়েছেন আরও অনেকে। তাদেরই একজন কলেজছাত্র সুহৃদ। এসেছেন চার বন্ধু ও তিন বান্ধবীকে নিয়ে। তারা যাত্রাবাড়ী থেকে সকালে বের হয়ে তাদের স্কুলের প্রভাত ফেরীতে ছিলেন। সেটা শেষ করে মেলায় আসেন। যখন তাদের সাথে কথা হচ্ছিল তখন তারা অবসর প্রকাশনীর স্টলের পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছিল।
বিজ্ঞাপন
সুহৃদ বলছিল, তার পছন্দ হুমায়ুন আহমেদ। এজন্য তিনি মেলায় তার পছন্দের লেখকের বই কিনতেই এসেছেন।
অসবরের কর্মী লিটন জানান, এবার তাদের স্টলে সায়েন্স ফিকশন, গোয়েন্দা কাহিনি ও হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাস ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে।
অবশ্য তার কথার প্রমাণও মিলল। শনিরআখড়া থেকে উপন্যাস কিনতে এসেছেন সজীব আহমদ। তার সাথে যখন কথা হচ্ছিল তখন তিনি হুমায়ুন আহমেদের একটি লেখা উপন্যাস নেড়েচেড়ে ঘেঁটে দেখছিলেন। তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, হুমায়ুন আহমেদ সম্পর্কে অনেক ভালো কথা শুনেছি। তাই এবার তার একটি উপন্যাস কিনে পড়বো বলে মনস্থ করেছি। দেখি এখনো কিনিনি তবে কিনব।
হুমায়ুনের লেখা পুরান বইগুলোর এবার চাহিদা বলে জানা গেল আরও কয়েকটি স্টল কর্মীদের সাথে কথা বলে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেলা দুপুরের পর আরও জমবে। আজ ছুটি হওয়ায় ভিড় আরও বাড়বে। কর্মজীবী মানুষের পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীরাও আজ ছুটে এসেছেন।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বসা অংশে ভিড় বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অন্যপাশে শিশুদের কর্নারে মোটামুটি ভিড় কমেছে। মেলার গেট দিয়ে ঢুকতে চোখে পড়ল তথ্যকেন্দ্রে মানুষের ভিড়। তথ্যকেন্দ্রে থাকা কর্মীরা জানালেন, বেশির ভাগ মানুষ জানতে চাইছে অমুক প্রকাশনীর স্টলটি কোথায়। নারীরা জানতে চাইছে শিশুদের কর্নার আর ব্রেস্ট ফিডিং এবং বসার জায়গার খোঁজ। আবার বেশির ভাগ লোকজন কোন লেখক কোথায় আড্ডা দেন, কোথায় কোনদিকে পানি ও টয়লেটের ব্যবস্থা আছে এসব বাদ যাচ্ছে না মানুষের জানার আগ্রহের বিষয় থেকে।
এমআইকে/এইউ