শনিবার, ২২ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

এবার ঈদে চাঙা দেশি কাপড়ের বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২৫, ০১:৪৭ পিএম

শেয়ার করুন:

এবছর ঈদে চাঙা দেশি কাপড়ের বাজার

ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর বিদেশি কাপড়ের মধ্যে বেশি বিক্রি হতো ভারতীয় কাপড়। কিন্তু এবার ভারতীয় কাপড় বাদ দিয়ে দেশীয় কাপড়েই ঝুঁকছেন ক্রেতারা। কেউ বলছেন ভারতীয় পণ্য বয়কট, কেউ বলছেন দেশীয় পণ্যের মান ভালো হওয়ায় ভারতীয় পণ্য কিনছেন না তারা। দেশি কাপড় বিক্রির পাশাপাশি পাকিস্তানি কাপড়ও বিক্রি হচ্ছে বেশ।

বুধবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর পল্টন এলাকার পলওয়েল মার্কেট, মৌচাকের ফরচুন শপিং মলসহ বেশ কয়েকটি মার্কেটে ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।


বিজ্ঞাপন


একসময় ঈদ মানেই ছিল ভারতীয় কাপড়ের রমরমা ব্যবসা। ভারতীয় সিরিয়াল নাটকের নামে পোশাক কিনতে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। ঈদে ভারতীয় পোশাক কিনে না দেওয়ায় আত্মহত্যা এমনকি স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ছাড়াছাড়ি পর্যন্ত হয়েছে। তবে বহু বছর পর এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ভিসা জটিলতার কারণে ভারতীয় পণ্য আসতে না পারার কারণে রাজধানীর অনেক মার্কেটে ভারতীয় পণ্য নেই বললেই চলে। ক্রেতারা বলছেন, এখন পাকিস্তান, চীন, দুবাই, তুরস্কসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পণ্য পছন্দ তাদের।

IMG_20250319_201959

ঈদের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, মার্কেটগুলোতে লোকজনেরও কেনাকাটা ব্যাপকভাবে বেড়ে চলেছে। শুধু ইফতারের সময় ছাড়া প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। তবে বেচা বিক্রিতে অনেকে সন্তুষ্ট প্রকাশ করছেন। তবে অনেকেই বলছেন গতবারের তুলনায় এবার দাম কিছুটা কম। 

বিক্রেতারা জানান, ক্রেতারা সব সময় ভালো পোশাক পছন্দ করে থাকেন। সেটা হতে পারে দেশি আবার হতে পারে বিদেশি। ভিসা জটিলতার কারণে কোনো দেশ থেকে কাপড় আসতে না পারলেও তাতে কোনো সমস্যা নেই। সেই স্থানটা দেশি কাপড় দিয়েই পূর্ণ হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন-

সাবিনা আক্তার নামে এক ক্রেতা ঢাকা মেইলকে বলেন, আমি ইন্ডিয়ান, পাকিস্তান দেশি-বিদেশি কখনো গুরুত্ব দিই না। আমার কাছে যেই মডেল বেশি ভালো লাগে সেটাই পছন্দ।

মো. ওয়াসিম নামে এক ক্রেতা ঢাকা মেইলকে বলেন, আগে ইন্ডিয়ান পাঞ্জাবি কিনলেও এবার দেশিটা কিনেছি। মার্কেটে ইন্ডিয়ান কালেকশন মোটামুটি আছে, তবে সেটা পর্যাপ্ত নয়। আমাদের দেশি ভালো ফেব্রিক্স পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া আমাদের দেশি কাপড় বিভিন্ন দেশে আমদানি হচ্ছে। মান ভালো বলেই আমাদের দেশি কাপড়ের চাহিদা রয়েছে। এখন থেকে আমার প্রথম পছন্দ থাকবে দেশি কাপড়।

সাইফুল ইসলাম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, যার ইন্ডিয়ান কাপড় পছন্দ সে ইন্ডিয়ান কাপড় কিনবে। আর যার ইন্ডিয়ান কাপড় পছন্দ নয়, তারা দেশি কাপড় কিনবে। এখন দেশি অনেক ভালো ভালো কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। দেশে ভালো কাপড় তৈরি হয় বলেই বিদেশিরা ক্রয় করে নিচ্ছেন।

IMG_20250319_203030

নয়াপল্টন এলাকার পলওয়েলের ব্যবসায়ী জাকির হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, ইন্ডিয়ান পণ্য কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। তবে এটা কোনো সমস্যা নয়। পাকিস্তান চায়নার পর্যাপ্ত পণ্য রয়েছে। এছাড়া দেশি অনেক ভালো ভালো পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। ইন্ডিয়ান কাপড় না আসার কারণে সেই স্থানটা দেশি কাপড়েই দখল করবে বলে জানান তিনি। 

মৌচাকের ফরচুন শপিং মলের মদিনা শাড়ি ও থ্রি পিস শোরুমের সাকিব ঢাকা মেইলকে বলেন, ভিসা জটিলতার কারণে এবছর ইন্ডিয়ান কাপড় সরাসরি আনা সম্ভব হচ্ছে না। ঈদের পূর্বে থার্ড পার্টির মাধ্যমে কিছু কাপড় আনতে সক্ষম হয়েছি। তবে টাকার মান কমে যাওয়ায় গতবারের তুলনায় ইন্ডিয়ান কাপড়ের দাম অনেক বেশি পড়ছে। দাম বেশি হওয়ায় কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। সব মিলে এবার ব্যবসার অবস্থা বেশি ভালো নয়। গতবারে এই সময় অনেক ভালো ছিল।

মৌচাকের চৈতী স্টাইলের পরিমল দেবনাথ ঢাকা মেইলকে বলেন, চলতি বছর ইন্ডিয়ান কাপড় অনেকটাই কম আসছে। পাশাপাশি বিক্রিতেও ভাটা পড়েছে। প্রতিবছরের তুলনায় এ বছর ইন্ডিয়ান কাপড় বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। ইন্ডিয়ান কাপড়ের চাহিদা মেটাচ্ছে দেশি এবং পাকিস্তানি কাপড়ে। সর্বোপরি দেশি কাপড়ে চাহিদা বেড়েছে।

 

 এমই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর