এক-এগারোর সময়ে গ্রেফতারের পর নির্যাতনের মুখে গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে ২০০৮ সালে কারামুক্ত হওয়ার পর যুক্তরাজ্যে যান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন এবং রাজনৈতিক অনুপস্থিতির পর দেশে ফিরছেন তিনি। একের পর এক মামলা, বিতর্ক ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজভূমে ফিরছেন তারেক, যেখানে তার প্রত্যাবর্তন কেবল একজন নেতার ফেরার গল্প নয়, বরং দলের পুনর্গঠন, গণতন্ত্রের শক্তিকরণ এবং দেশের রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
বিএনপির কোটি কোটি নেতাকর্মী ও রাজনীতি সচেতন মানুষের প্রত্যাশা তারেক রহমানের ফেরার মধ্য দিয়ে বিএনপি নতুন করে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করতে সক্ষম হবে। পাশাপাশি দেশের গণতন্ত্র আরো শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে তারেক রহমানের ফেরাকে ঘিরে দলীয় উত্তেজনার পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নতুন হিসাব-নিকাশ। কারণ ১৭ বছর দূরদেশে থেকেও দলীয় নেতৃত্ব শক্ত হাতে ধরে রাখা এই রাজনীতিক এবার সরাসরি ময়দানে নামতে যাচ্ছেন। প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনে অংশও নেবেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠপুত্র।
তারেক রহমানকে বরণে যখন সারাদেশের নেতাকর্মীরা ঢাকায় তখন দেশে ফিরেই নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মনোযোগ দিতে হবে তাকে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে নেতাকর্মীদের দলীয় শৃঙ্খলা ফেরানো, দলের প্রার্থী ও বঞ্চিতদের মধ্যে সমন্বয় সাধন এবং প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করার কর্মকৌশল ঠিক করতে হবে তরেক রহমানকে।
রাজনীতির বাইরেও মা বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা তদারকি এতদিন দূর দেশে বসে করলেও এখন কাজ থেকে দেখভাল করতে হবে। দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের চিকিৎসায় তাকে সুস্থ করে তোলার গুরু দায়িত্বও তার কাঁধে।
বিজ্ঞাপন
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন বিএনপির জন্য যেমন সুযোগ, তেমনি তার নিজের জন্যও এক কঠিন রাজনৈতিক পরীক্ষা। তবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে আগামী দিনে তারেক রহমানের ওপর আরও বড় দায়িত্ব আসার সমূহ সম্ভাবনা তৈরি হবে। তবে রাজনীতিতে অনেক পরিণত তারেক রহমানের ফেরার মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতি, গণতন্ত্র আরো শক্তিশালী হওয়ার পথ সুগম হবে বলে প্রত্যাশা তাদের।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. দিলারা চৌধুরী ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘লম্বা সময় পর দেশে ফিরে তারেক রহমানকে আরো পরিণত রাজনীতি করতে হবে। দায়িত্বও বেড়ে যাবে। এতদিনে দলের নেতাকর্মীর বাইরে সাধারণ মানুষেরও প্রত্যাশা বেড়েছে। বিএনপির রাজনীতি বিদায়ী সরকারের চেয়ে ব্যতিক্রম সেটাও প্রমাণ করতে হবে। আবার দলকেও শক্তিশালী করতে হবে।’
উত্তরাধিকার থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্বে সেনা পরিবারে জন্ম হওয়ায় তারেক রহমানের রাজনীতির সঙ্গে ছোট্ট সময়ে কোনো ওঠাবসা ছিল না। বাবা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পরও তার দুই সন্তানের মধ্যে রাজনীতির ছোঁয়া লাগেনি। তবে ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর জাতীয়তাবাদী রাজনীতির হাল ধরেন তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। জিয়া পরিবারের সন্তান হলেও তারেক রহমান হঠাৎ করে সামনের সারিতে আসেননি।
আরও পড়ুন: ১৭ বছর পর দেশের মাটিতে তারেক রহমান
নব্বইয়ের দশকে বিএনপির সাংগঠনিক পর্যায়ে কাজ শুরু করে ২০০১ সালের নির্বাচনের সময় নেপথ্যে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। ২০০২ সালে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, যা দলের ভেতরে তার ক্ষমতার ভিত্তি সুদৃঢ় করে। এই সময় থেকেই বিএনপির ভেতরে একটি নতুন নেতৃত্ব বলয়ের উত্থান ঘটে-যা সমর্থকদের চোখে সংগঠন শক্তিশালী করার প্রয়াস, আর সমালোচকদের মতে পারিবারিক প্রভাবের বিস্তার।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জিয়াউর রহমানের খাল কাটা থেকে শুরু করে দেশজুড়ে যেসব জনবান্ধব কর্মসূচি ছিল তারেক রহমানও সেই তৃণমূলের দিকে নজর দিয়েছেন শুরুর দিকে। দলের শেকড় শক্ত করতে নেমে পড়েন দেশজুড়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মসূচি নিয়ে, যা অল্প দিনের মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি করে। সারাদেশের সংগঠনকে তিনি এক ছাতার নিচে নিয়ে আনতে সক্ষম হন।
রাজনৈতিক মহলে আলোচনা আছে, তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে তারেক রহমানের এই উদ্যোগের কারণেই তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের চক্ষুশুলে পরিণত হন। পরবর্তীতে তাকে রাজনৈতিকভাবে কোনঠাসা করতে নানা অপপ্রচার সহ্য করতে হয়েছে।
হাওয়া ভবন: অভিযোগ, বিতর্ক ও অপপ্রচারের রাজনীতি ২০০১-২০০৬ মেয়াদে বিএনপি সরকারের সময় ‘হাওয়া ভবন’ রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি অভিযোগ তোলে, এখান থেকেই রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত ও অনিয়ম পরিচালিত হতো। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে শুরু থেকেই দাবি করা হতো হাওয়া ভবন ছিল মূলত রাজনৈতিক সমন্বয় ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের একটি কেন্দ্র। এটিকে ঘিরে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তার বড় অংশই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তারেক রহমান নির্বাসনে থাকাকালীন রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের প্রধান থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কণ্ঠে প্রতিনিয়ত হাওয়া ভবন ঘিরেই বক্তব্য পাওয়া যেত। তারেক রহমান এবং তার ঘনিষ্ঠরা এখান থেকে সব নিয়ন্ত্রণ করতেন, দুর্নীতি-অনিয়ম সব এই ভবন থেকে করা হতো বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হতো। যদিও এসব অভিযোগ নিয়ে ব্যাপক রাজনৈতিক আলোচনা হলেও পরবর্তী সময়ে অভিযোগগুলো প্রমাণ করতে পারেনি প্রতিপক্ষ।
বিএনপির পক্ষ থেকে শুরু থেকেই দাবি করা হয়, অভিযোগগুলো ছিল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার কৌশল। এক-এগারো, গ্রেফতার ও নির্বাসনের রাজনীতি ২০০৭ সালের এক-এগারোর রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর তারেক রহমান গ্রেফতার হন এবং একাধিক মামলায় রিমান্ড ও কারাভোগ করেন। দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, তারেক রহমানের ওপর তখনকার সরকারের মদদে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।
রিমান্ডে নির্যারতনের ফলে তার মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যুক্তরাজ্যে থাকাবস্থায় লম্বা সময় তাকে এর চিকিৎসা করতে হয়েছে। এই সময়ের অভিজ্ঞতা তার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে কঠিন অধ্যায় বলে মনে করেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। পরে ২০০৮ সালে মুক্তি পেয়ে তিনি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে লন্ডনে যান এবং কার্যত দীর্ঘ নির্বাসনে চলে যান। পরবর্তীতে তিনি আর দেশে ফিরতে পারেননি।
দলের নেতাকর্মীদের ভাষ্য, আইনি জটিলতা, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা উদ্বেগ তাকে বিদেশেই থাকতে বাধ্য করে।
অনুপস্থিত থেকেও নিয়ন্ত্রণ
২০১৮ সালে খালেদা জিয়া কারাবন্দি হলে তারেক রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করে বিএনপি। এরপর লন্ডন থেকেই তিনি দল পরিচালনা শুরু করেন। ভার্চুয়ালি বৈঠক, নির্দেশনা ও সাংগঠনিক পুনর্গঠন করেন। দলীয় নেতারা বলছেন, এই সময়েই তিনি তৃণমূলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ জোরদার করেন এবং দলের ভেতরে নিজের কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন।
সেজন্য ১৭ বছর পর তার দেশে ফেরা বিএনপির কাছে কেবল একজন নেতার প্রত্যাবর্তন নয়, বরং একটি রাজনৈতিক পুনর্জন্মের প্রতীক। তারেক রহমানের সামনে পাহাড়সম চ্যালেঞ্জ ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বরণ করা হলেও প্রত্যাবর্তনের পর তাকে পাহাড় সমান চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
নির্বাচনী রণকৌশল নির্ধারণ এবং প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করাই হবে তার জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ। এছাড়াও দলের তৃণমূল পর্যায়ে পুরোপুরি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করাকে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ অনেক জায়গায় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখলবাজির অভিযোগ রয়েছে। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পরেই এই অভিযোগ ব্যাপকভাবে সামনে চলে আসে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে ফলাও করে খবর প্রকাশিত হতে থাকে, যা দলের হাইকমান্ডকে বিব্রত করেছে।
যদিও এসব অপরাধে সাত হাজারের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে বহিষ্কার, সাময়িক বহিষ্কারসহ বিভিন্ন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, নির্বাচন সামনে রেখে এদের অনেককেই আবার দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এর বাইরেও দেশে ফেরার পর নির্বাচনের জন্য মাত্র দেড় মাস সময় পাবেন তারেক রহমান। সে কারণে তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে, উপযুক্ত কৌশল ঠিক করে নির্বাচনের জন্য বিএনপিকে পুরোপুরি প্রস্তুত করা। নিজে নির্বাচনী গণসংযোগে নেমে পড়া। নির্বাচনের সময় দেশজুড়ে নিজস্ব প্রার্থীদের মধ্যে কোন্দল সামাল দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনের বৈতরণী পার করতে হবে তারেক রহমানকে।
রাজসিক প্রত্যাবর্তন
তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘিরে দেশজুড়ে রাজনৈতিক অঙ্গন, নেতাকর্মী, সমর্থক এবং সর্বসাধারণের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ, কৌতূহল ও আবেগের সঞ্চার হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে রাজনীতির ভেতরে-বাইরে তাকে ঘিরেই আলোচনা। দলের পক্ষ থেকে তাকে বরণ করতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে সংবর্ধনাস্থল কুড়িলের তিনশ ফিট পর্যন্ত নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে থেকেই ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকেও তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ধরণের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তারেক রহমানকে দেওয়া সংবর্ধনায় অর্ধকোটি নেতাকর্মীর সমাগম ঘটবে। নেতাকর্মীরা বলছেন, এই প্রত্যাবর্তন শুধু একজন নেতার দেশে ফেরা নয়, বরং সর্বজনীন প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষার মেলবন্ধন। যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ জনসমাগমের সম্ভাবনা।
শীর্ষ নেতাদের দৃষ্টিতে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন
তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা একেকভাবে দেখছেন। দলের নেতারাও দেশে ফেরার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার বড় সুযোগ তৈরি হবে বলে মনে করছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের খুঁটিটা যেন মজবুত হয়, সেদিকে আমরা সবার সহযোগিতা চাই। তার প্রত্যাবর্তনে দেশে গণতন্ত্রের পথ সুগম হবে।
আরও পড়ুন: ‘লিডার আসছে’ স্লোগানে মুখর রাজধানী
তিনি আরো বলেন, বিএনপি কোনো ব্যক্তিতান্ত্রিক বা দলতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্রকে কখনো উৎসাহিত করে না। বরং তারেক রহমানের নেতৃত্বেই এ দেশে আবারো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।
তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে বলেন, ‘বহুল আকাঙ্ক্ষিত এই প্রত্যাবর্তনকে অনেকেই দেখছেন বিরাজমান অস্থির পরিস্থিতিতে জনগণের ঐক্য সৃষ্টি এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক দেশ প্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে। সে কারণেই তারেক রহমানের ফেরা শুধু ব্যক্তিগত প্রত্যাবর্তন নয়; বরং এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় জনগণের গভীর আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।’
বিইউ/এমআর

















































