রোববার গ্রুপ পর্বের খেলা দিয়ে শুরু টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। এবারই প্রথম আইসিসির কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজিত হবে আমেরিকায়, দেশটিও প্রথমবারের মতো খেলবে বিশ্বকাপে। সাথে যৌথ আয়োজক হিসেবে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এবারের আসরে খেলা হবে দুই দেশের মোট ৯টি ভেন্যুতে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩টি এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৬টি। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা, নিউইয়র্ক ও টেক্সাস এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের এন্টিগা, বার্বাডোজ, গায়ানা, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট ও ট্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোতে হবে ম্যাচগুলো। এই আয়োজনে কোথাও ঘাটতি রাখছে না ক্যারিবিয়ানরা।
বিজ্ঞাপন
চার-ছক্কার মহারণ দেখতে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে ইতিমধ্যে পৌঁছে গেছে লাখো ক্রিকেটপ্রেমী। তাদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত ছয় শহরগুলো। বিশ্বকাপের আগে জেনে নেওয়া যাক সেই ৬টি ভেন্যুর সম্পর্কে—
প্রভিডেন্স স্টেডিয়াম (গায়ানা): এর ধারণক্ষমতা ১৫ হাজার। স্টেডিয়ামটি ভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় নির্মিত হয়েছিল। এটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের অন্যতম প্রধান স্টেডিয়ামের একটি। সামগ্রিকভাবে প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামকে বোলিং পিচ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যেখানে স্পিনাররা বেশি সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। এই ভেন্যুতে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্যায়ের পাঁচটি ম্যাচ এবং বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় ম্যাচ দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের অভিযান শুরু করবে এই মাঠে।
কেনসিংটন ওভাল (বার্বাডোস): বিশ্বের প্রাচীনতম স্টেডিয়ামগুলোর মধ্যে একটি, বার্বাডোসের কেনসিংটন ওভালের একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। ম্যালকম মার্শাল এবং জোয়েল গার্নারের মতো সর্বকালের সেরাদের জন্য এটি ছিল হোম গ্রাউন্ড। ১৮৭১ সালে তৈরি হওয়া এই স্টেডিয়ামটির ধারণক্ষমতা ২৮,০০০ জন। পিকউইক ক্রিকেট ক্লাব নামেও পরিচিত।
ওভালের মাঠটিতে ভারসাম্যপূর্ণ পিচ যেখানে ব্যাটার এবং বোলার উভয়কেই সাহায্য করে। ব্যাটসম্যানরা ভালো বাউন্স এবং ক্যারি আশা করতে পারেন। তবে পিচের ধীরগতি স্পিনারদের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ রয়েছে। বার্বাডোজ স্টেডিয়ামের অতীতের রেকর্ড বিবেচনা করে টস জেতা দলগুলি আগে ব্যাট করতে পছন্দ করে।
কেনসিংটন ওভাল ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টি-টোয়েন্টি পরিসংখ্যান:
মোট ম্যাচ: ২৩টি
প্রথম ব্যাট করে দল জিতেছে ম্যাচ: ১৬টি
রান তাড়া করে জয়ী ম্যাচ: ৭টি
সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর: ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২২৪/৫
সর্বনিম্ন দলের স্কোর: আফগানিস্তান, ৮০/১০
২০২৪ বিশ্বকাপে পাঁচটি গ্রুপ-পর্যায়ের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এখানে। এছাড়া তিনটি ‘সুপার এইট’ খেলা এবং ২৯ জুন টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচের আয়োজন করা হয়েছে এই মাঠেই।
ব্রায়ান লারা স্টেডিয়াম (ত্রিনিদাদ): ২০০৭ সালে তৈরি হওয়া ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ১৫ হাজার৷ ক্রিকেটের সেরাদের মধ্যে একজন লারার নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে এর। এই মাঠের পিচকে ব্যাটারদের জন্য স্বর্গ মনে করা হয়। এই মাঠে আগে ব্যাট করা দলই বেশি সুবিধা পেয়ে থাকে। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালসহ পাঁচটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
আরনোস ভ্যালে গ্রাউন্ড (কিংসটন): ১৮ হাজার ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অন্য যে কোনো স্টেডিয়ামের তুলনায় সবচেয়ে কম ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডস ও নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। তাই এই ভেন্যুর গুরুত্ব বাংলাদেশের কাছে অনেকটাই বেশি। এছাড়া আরও তিনটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এই স্টেডিয়ামে।
স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়াম (অ্যান্টিগা): কিংবদন্তির স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামটি ২০০৬ সালে নির্মিত এবং এর ধারণক্ষমতা প্রায় ২০ হাজার। এটি আসন্ন বিশ্বকাপে চারটি গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচ এবং চারটি সুপার এইটের ম্যাচের আয়োজন এই মাঠে হবে। গ্রুপ পর্বে এই ভেন্যুতে ইংল্যান্ড, নামিবিয়া ও ওমান দুটি করে ম্যাচ খেলবে।
ড্যারেন সামি স্টেডিয়াম (সেন্ট লুসিয়া): ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক অধিনায়ক ড্যারেন স্যামির নামানুসারে এই স্টেডিয়াম, যিনি ২০১৬ সালে দ্বিতীয়বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সময় দলকে নেতৃত্ব দেন। সুপার এইটের ছয়টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এই স্টেডিয়ামে।