ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়া। সাম্প্রতিক সময়ে প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বে অজিরা তো রীতিমত উড়ছে। গত বছর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জয়ের পর জিতে নিয়েছে ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপাও। আইসিসির গুরুত্বপূর্ণ দুই ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এবার মিচেল মার্শদের লক্ষ্য টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে চূড়ান্ত সাফল্য।
এবারই প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলবে ২০টি দল। এই ২০ টি দলের মধ্যে সবথেকে শক্তিশালি স্কোয়াড অস্ট্রেলিয়ার, এমন মতামতও দিয়েছেন অনেকেই। মিচেল মার্শের নেতৃত্বে অজিরা নামবে নিজেদের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শিরোপার লক্ষ্যে। আর চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে ধারাবাহিকভাবে আইসিসির তিনটি শিরোপা জয়ের অনন্য এক রেকর্ড গড়বে অজিরা।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন- যে ৫ রেকর্ড ভাঙতে পারে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে
আরও পড়ুন- বিশ্বকাপ জিতে যে অনন্য রেকর্ড গড়ার হাতছানি ক্যারিবীয়দের
বিশ্বকাপজয়ের লক্ষ্যে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের সঙ্গে তারুণ্যের ভারসাম্য বজার রেখেছে দুর্দান্ত এক স্কোয়াড সাজিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ব্যাটে-বলে দুই বিভাগেই দুর্দান্ত খেলবে অজিরা এমন ধারণা ক্রিকেটপ্রেমীদের। ব্যাট হাতে অজিদের ওপেনিংয়ের দায়িত্ব নিবেন ট্রাভিস হেড ও ডেভিড ওয়ার্নার। আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে হেড চলতি মৌসুমে দেখিয়েছেন কতোটা ভয়ঙ্কর হতে পারেন তিনি। অভিজ্ঞ ওয়ার্নার সাম্প্রতিক সময়ে ফর্মে না থাকলেও প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে ফর্মে ফেরার আভাস দিয়েছেন তিনি।
এদিকে ওপেনিংয়ে হেডের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়তে পারেন ধিনায়ক মার্শও। এরপর মিডল ও লোয়ার অর্ডারের দায়িত্ব নেয়ার জন্য আছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, জশ ইংলিশ, ম্যাথু ওয়েড, টিম ডেভিডদের, ক্যামেরন গ্রিনের মত মারকা ব্যাটাররা যাদের সবাই মারকুটে ব্যাটিংয়ে অভ্যস্ত। এছাড়া পেসার কামিন্সও ব্যাট হাতে হয়ে ওঠতে পারেন ভয়ঙ্কর। সেদিক থেকে বলতে গেলে, এবারের অজিদের বিশ্বকাপ দলে ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠার মত ক্রিকেটার আছেন পর্যাপ্ত।
বিজ্ঞাপন
অজিদের বিশ্বকাপ দলে আছে বেশ কয়েকজন অলরাউন্ডার। ম্যাক্সওয়েল, স্টয়নিস, গ্রিনরা যে কেবল ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালাতে পারেন তাই নয়, দলের প্রয়োজনের মুহূর্তে বল হাতেও উইকেট এনে দিতে পারেন তারা। এছাড়াও আছেন অ্যাস্টন অ্যাগার, মিচেল মার্শরা।
এদিকে বরাবরের মতই এবার অজিদের বোলিং বিভাগও ভয়ঙ্কর। মিচেল স্তার্ক ও জশ হ্যাজলউডের সঙ্গে আছেন কামিন্স। এছাড়া পেসার হিসেবে আরও আছেন নাথান এইলিস। এই চার পেসারের সঙ্গে থাকবেন স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। তবে জাম্পা ছাড়া আর কোনো বিশেষজ্ঞ স্পিনার অজিদের দলে নেই। ফলে একজন স্পিনার নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া অজিদের ভোগান্তির কারণ হতে পারে বলেও মন করছেন অনেকে। তবে ম্যাক্সওয়েল সে ওভাব পুষিয়ে দিতে পারবেন বলেও ভাবছেন অনেকেই।
অধিনায়ক মার্শকে ধরা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সেরা একজন ক্রিকেটার হিসেবে। এবারের বিশ্বকাপে দলকে শিরোপা জিতিয়ে সেটিই প্রমাণ করার সুযোগ থাকছে তাঁর সামনে। এছাড়াও নাথান এইলিস সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটে বেশ কার্যকরী একজন বোলার। স্লগ ওভারে তিনি দুর্দান্ত বোলিং করে থাকেন, তাঁর ইয়র্কার এবং স্লোয়ার বল প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের বিপক্ষে দারুণ কার্যকরী। তিনিও সুযোগ পাবেন নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখার।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে ওয়ার্নার এবং ম্যাক্সওয়েলের অফ ফর্মও। কদিন আগেই শেষ হওয়া আইপিএলে এ দুজনই বাজে সময় কাটিয়েছেন। নিজের ক্যারিয়ারের অন্যতম বাজে এক আইপিএল মৌসুম কাটিয়েছেন ম্যাক্সওয়েল। বিশ্বকাপে এ দুজন ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠতে পারবেন কি না তা নিয়েও আছে সংশয়। তবে অজিরা তাদের চ্যাম্পিয়ন মানসিকতা দিয়ে সকল বাধাই কাটিয়ে ওঠবে এমন আশাই করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্কোয়াড:
মিচেল মার্শ (অধিনায়ক), ডেভিড ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেড, জশ ইংলিস, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টয়নিস, অ্যাডাম জাম্পা, অ্যাস্টন অ্যাগার, ম্যাথু ওয়েড, ক্যামেরন গ্রিন, টিম ডেভিড, মিচেল স্টার্ক, নাথান এলিস, জশ হ্যাজলউড ও প্যাট কামিন্স।