টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চার ছক্কার ঝড় বলতেই ক্যারিবীয় ক্রিকেটারদের নাম আসে সবার আগে। তারপরও আলাদা মাহাত্ম্য তৈরি করেছে পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর থেকেই ২০০৭ এবং ২০০৯ প্রথম দুই আসরেই পাকিস্তান তাদের টি-টোয়েন্টি জাত চিনিয়েছেন।
২০২২ অনুষ্টিত হওয়া বিশ্বকাপে পাকিস্তান ছিল জোর দাবিদার কিন্তু ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে স্বপ্ন কে দুঃস্বপ্নে পরিণত করেন অ্যানপ্রেডিক্ট্যাবলরা। এরপরে নিজেদের শক্তিমতা কে ঝালিয়ে ক্রিকেট পাড়ায় হুংকার দিয়েছে পাকিস্তান। শিরোপার আক্ষেপ মেটাতে পাকিস্তান অবসর ভাঙিয়ে দলে ফিরিয়েছেন মোহাম্মদ আমির ও ইমাদ ওয়াসিমকে।
বিজ্ঞাপন
নবম আসরের শিরোপার মিশনে নামার আগে সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড সিরিজেও নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছে অ্যানপ্রেডিক্ট্যাবল খ্যাত বাবর আজমের দল। কিন্তু টপ অর্ডার নিয়ে যে প্রশ্নে বা চিন্তা ছিল টিম ম্যানেজম্যান্টের সেই জবাবটা ব্যাটাররা দিয়েছেন জোরালোভাবে। তবে দলটা পাকিস্তান,তাই অঘটন ঘটাতে পারে যে কোনও সময় ফেবারিট থেকে হতাশাও করতে পারে। এমন অনেক ইতিহাসের সাক্ষী পাকিস্তান ভক্তরা।
২০০৭ সালের তিক্ততা কেটে ২০০৯ বিশ্বকাপেই ইউনিস খানের নেতৃত্বে, শহিদ আফ্রিদির অসাধারণ পারফরম্যান্সের ওপর ভর করে ট্রফি নিজেদের হাতে তুলে নেয় পাকিস্তানিরা। প্রথমবার বিশ্বকাপ হারানোর ক্ষত ভুলে যায় দুই বছর পরই। তবে এরপর আর কোনো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অবশ্য খুব বেশিদুর এগুতে পারেনি তারা। ২০১০,২০১২ এবং ২০২১ সালে সেমিফাইনাল। ২০১৪ এবং ২০১৬ সালে বিদায় নিয়েছে সুপার টেন থেকেই। তবে অষ্টম আসর(২০২২) এ শেষ করেছে রার্নাসআপ হয়ে।
২০২২ সালের রানার্সআপরা এবারও ফাইনাল খেলবেন এমনটা বিশ্বকাপের আগে জানান দিয়েছেন দেশটির সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি। আফ্রিদির বিশ্বাস, বাবর আজমরা এবারও অন্তত ফাইনালে খেলবে। তিনি বলেন, ‘আমার মমেন হচ্ছে পাকিস্তান ফাইনালে উঠবে। কারণ কন্ডিশন আমাদের দলের সঙ্গে মানানসই।’ দল নিয়ে তার মূল্যায়ন, ‘আমাদের দলের স্পিনারদের দেখুন, তারা অসাধারণ। তারা হয়তো ফর্মে নেই কিন্তু আমি জানি তারা ফর্মে ফিরবে। ফাস্ট বোলিং নিয়ে যদি আমরা কথা বলি, এটা দুর্দান্ত আক্রমণ। ব্যাটিংয়েও আমাদের দারুণ স্ট্রেংথ আছে।’
বিজ্ঞাপন
একটা সময় ছিল যখন নিশ্চিত হেরে যাওয়া ম্যাচও অলৌকিকভাবে জিতে যেত পাকিস্তান। এ কারণেই হয়তো ওদের ডাকা হতো ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তান; কিন্তু গত এক দশকে রীতিটা উল্টে গেছে। এখন হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচও হেরে যায় পাকিস্তান। আর ব্যাকফুটে থাকাগুলো তো হারেই। মাঝের অনেকটা সময় ম্যাচ ফিক্সিং, অধিনায়কত্ব সংকট, অন্তর্কোন্দল- সব মিলিয়ে যা-তা অবস্থা পাকিস্তান দলের। তবে আগের সেই সমস্যাগুলো যেন পাকিস্তান দলে এখন অনেকটাই কমে গেছে।
তবে সব কিছুর অবসান ঘটিয়ে পাক শিবিরকে আশা দেখাচ্ছেন রিজওয়ান, অধিনায়ক বাবর আজমের ব্যাটে। শাদাব খান, মোহাম্মদ আমির ও শাহিন শাহ আফ্রিদিরাও দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় ইনপুট। তার সাথে সঙ্গী ইফতেখার, আজম খান ও ইমাদ ওয়াসিম। সব মিলিয়ে পাকিস্তান দল এবার শিরোপার দাবি জানিয়েই রাখছেন ক্রিকেট প্রেমীদের।
বিশ্বকাপে পাকিস্তান স্কোয়াড: বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান, সাইম আইয়ুব, ফখর জামান, ইফতেখার আহমেদ, উসমান খান, আজম খান, শাদাব খান, ইমাদ ওয়াসিম, শাহিন শাহ আফ্রিদি, মোহাম্মদ আমির, নাসিম শাহ, হারিস রউফ, আব্বাস আফ্রিদি, আবরার আহমেদ।