সিলভারের একটি গামলার ওপর থরে থরে সাজানো চানাচুর, চাল ভাজা, ছোলা সিদ্ধ, টমেটো। সব মিলে মূলধন দেড় হাজার টাকা। আর এই বিনিয়োগে মাসে ৩০ হাজার টাকার বেশি আয় করছেন অনেকেই।
কোনো দোকান বা প্রতিষ্ঠানে ব্যবসা করতে লাখ টাকা পুঁজি এখন বাধ্যতামূলক। তবে যাদের পুঁজি কম তারা ঝুঁকছেন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়।
বিজ্ঞাপন
স্ট্রিট ফুডের মধ্যে ‘চাল ভাজা মাখা’ বিক্রি হয় সর্বনিম্ন ১০ টাকায়। ছোট আয়োজনে ছোট ব্যবসা মনে হলেও এ ব্যবসায় আয়ের অঙ্কটা কিন্তু ছোট নয়।
রাজধানীর উত্তরা ৩নং সেক্টরে ‘চাল ভাজা মাখা’ বিক্রি করা এরশাদ হোসেন এমন তথ্যই জানিয়েছেন।
সম্প্রতি এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপ হয় এরশাদের। সর্বনিম্ন ১০ টাকার বিনিময়ে তিনি চাল ভাজা মাখা বিক্রি করেন।
আলাপকালে তিনি জানান, চার প্যাকেট চানাচুর, কেজি খানেক চাল ভাজা, কেজি খানেক ছোলা সিদ্ধ, কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ, টমেটো আর ধনিয়া পাতা তার ব্যবসার মূল উপকরণ।
বিজ্ঞাপন
সবকিছু নিয়ে সকালে বের হন তিনি। বাসায় ফেরেন রাতে।
এরশাদ বলেন, ‘পনেরশ টাকার মালামাল নিয়ে বের হই। অর্ধেকের মতো বিক্রি হয়।’
সেই অর্ধেক অর্থাৎ সাড়ে সাতশ টাকার মালামাল বিক্রি করে কত টাকা লাভ হয়? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হাজার-বারোশ টাকা লাভ থাকে। সব বিক্রি করতে পারলে দুই-আড়াই হাজার থাকতো।’
একই ধরনের তথ্য মিলেছে ‘হাওয়াই মিঠাই’ বিক্রেতাদের থেকেও। যারা নিজেরা হাওয়াই মিঠাই বানিয়ে বিক্রি করেন তাদের আয়ের অঙ্কটাও চোখ কপালে ওঠার মতো।
আরও পড়ুন
মূল্যস্ফীতির প্রভাব ফুটপাতেও
হাজার টাকার পিৎজাও মেলে ফুটপাতে
জেনেশুনেই ‘বিষ’ খাচ্ছে সবাই!
কতটা স্বাস্থ্যকর স্ট্রিট ফুড?
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একজন ‘হাওয়াই মিঠাই’ বিক্রেতা জানান, তার মূল বিনিয়োগ গাড়ি ও হাওয়াই মিঠাই বানানোর মেশিন কেনা৷ সেখানে ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। তবে কেউ যদি ৩০ হাজার টাকা বিনিয়োগ না করতে চান তার জন্যও এই ব্যবসার সুযোগ আছে। গাড়ি কেনার পরিবর্তে ভাড়া পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে প্রতিদিন ভাড়া দিতে হয় ৩০০ টাকা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই হাওয়াই মিঠাই বিক্রেতা ঢাকা মেইলকে জানান, হাওয়াই মিঠাই তৈরিতে প্রয়োজন হয় চিনি, রঙ ও কেরোসিন।
যে মেশিন ঘুরিয়ে হাওয়াই মিঠাই বানানো হয়, তার নিচে আগুন জ্বালাতে কেরোসিনের প্রয়োজন হয়।
বিক্রেতার ভাষায়, ‘এক কেজি চিনি গালাইতে (গলাতে) এক কেজির মতো কেরোসিন লাগে।’
চিনির সঙ্গে কি ধরনের রঙ ব্যবহার করা হয় জানতে চাইলে এই ব্যবসায়ী অকপটে স্বীকার করেন, ‘এইডা খাওনের রঙ না।’
বিক্রি ও আয় কেমন হয় জানতে চাইলে ৩৪ বছর বয়সী এই হাওয়াই মিঠাই বিক্রেতা বলেন, ‘এক কেজি চিনি শ্যাষ করতে পারি না। এত বিক্রি হয় না। হইলে ভালো হইতো। তাও যদি কেরাসিন, চিনি, কালারসহ ২০০ টাকার মালামাল কিনি, ওইগুলা বিক্রি করলে হাজার-বারোশো টাকা লাভ থাকে। গাড়ি ভাড়া দেই ৩০০ টাকা। সব খরচ বাদ দিয়া সাত-আটশ টাকা নিজের থাকে।’
কারই