রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

‘লক্কড়-ঝক্কড়’ গাড়ি সড়কে নামার অপেক্ষায়!

সেলিম মিয়া
প্রকাশিত: ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ০১:৪৪ পিএম

শেয়ার করুন:

‘লক্কড়-ঝক্কড়’ গাড়ি সড়কে নামার অপেক্ষায়!

ঈদুল ফিতর সামনে রেখে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন ওয়ার্কশপে চলছে লক্কড়-ঝক্কড় যানবাহন মেরামত আর রংয়ের কাজ। বহু বছরের পুরনো এসব গাড়িগুলোর গায়ে রঙ-চঙ লাগিয়ে নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে। ঈদে ফিটনেসবিহীন এসব গাড়ি রাস্তায় নামলে একদিকে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধির শঙ্কা, অন্যদিকে বাড়তে পারে যানজট। যদিও পুলিশ এসব ফিটনেসবিহীন গাড়ি বন্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে, কিন্তু লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি সড়কে নামানোর প্রস্তুতি থেমে নেই।

BUSসরেজমিনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ঘেঁষা মানিকগঞ্জের উচুটিয়া এলাকাসহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্কশপে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে লক্কড়-ঝক্কড় বাস মেরামতের কাজ চলছে। ফিটনেসবিহীন ভাঙাচোরা গাড়িগুলো ঝালাই করে জোড়াতালি দেওয়া হচ্ছে। কোনো গাড়ির ইঞ্জিন সড়ক দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া, ব্রেকে সমস্যা কিংবা সিটগুলো ছেড়া-- সবই মেরামত করা হচ্ছে। মিস্ত্রিরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। লক্কড়-ঝক্কড় এসব গাড়িই রং লাগিয়ে নতুন গাড়ির মতো করা হবে। ২৫-২৬ রোজার মধ্যে ‘প্রাণসংহারি’ এসব গাড়ি সড়কে নামানো হবে।


বিজ্ঞাপন


কয়েকজন ওয়ার্কশপ মালিক বলেন, ঈদ সামনে রেখে গ্যারেজে পুরাতন গাড়ির কাজ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। গাড়ির বডি, রং, ইঞ্জিনের ত্রুটি মেরামত করা হচ্ছে বেশি। ২৫-২৬ রোজার আগেই এসব গাড়ির কাজ শেষ করব, যাতে গাড়ির মালিকেরা ঈদের বাজার ধরতে পারে।

এসব গাড়ির বিষয়ে জানতে একাধিক গাড়ির মালিক ফোন করা হলেও তারা কেউ কথা বলতে রাজি হননি।

BUSরঙ মিস্ত্রি আব্দুল হালিম বলেন, পুরাতন গাড়িতে বডির কাজ শেষে রং করা হলে নতুনের মতো দেখায়। সে কারণে গাড়ি দেখেই যাত্রীরা আকৃষ্ট হয় বেশি।

বাসচালক ছলিম মিয়া জানান, যাত্রীরা ঈদের ঘরে ফেরার সময় সুন্দর গাড়িতে উঠতে চায়। তাই বাসের ভেতরে সিট ও বডিতে রংয়ের কাজ করার জন্য আনা হয়েছে। তবে গাড়ির ফিটনেসের বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।


বিজ্ঞাপন


ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নিয়মিত যাতায়াত করেন বাসযাত্রী মিতুল। তিনি বলেন, ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো চলাচলের সময় মাঝেমাঝেই রাস্তায় নষ্ট হয়ে যায়। সে কারণে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ঈদের সময় এসব গাড়ি রং করে নতুনের মতো করে আবার রাস্তায় নামাচ্ছে। ফলে ঈদযাত্রায় যাত্রীদের ভোগান্তিসহ মহাসড়কে যানজট ও দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা আছে।

BUSমিতুলের মতো অন্য যাত্রীদের অভিযোগ, পুরনো গাড়ির বডি মেরামত করে রঙিন হলেই অনুমতি পেয়ে যায় পথে নামার। ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ব্যবহার করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের প্রায় ২১টি জেলার মানুষ যাতায়াত করেন। সে কারণে ঈদের ৩-৪ দিন আগে থেকেই এই রুটের যানবাহনের সংকট দেখা দেয়। সেই সুযোগ কাজে লাগায় একশ্রেণির অসাধু পরিবহন ব্যবসায়ী। তাদের কারণেই ঈদে ঘরমুখো মানুষেরা রাস্তায় ভোগান্তির শিকার হন।

প্রশাসনের নজরদারি থাকলে ঈদে ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলোর চলাচল নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব বলে যাত্রীরা জানিয়েছেন।

BUSতবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যতই রং করে চকচকে করা হোক না কেন, ফিটনেস না থাকলে গাড়ি পথে চালাতে পারবে না।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে যেতে পারে সে জন্য রাস্তায় আমাদের পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য থাকবে। ঈদের তিনদিন আগে থেকে ট্রাক চলতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি ফিটনেসবিহীন গাড়িও যাতে চলতে না পারে সেই ব্যবস্থাও রাখা হবে।

প্রতিনিধি/জেএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর