সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

শরীয়তপুরে ক্ষতির মুখে পেঁয়াজ রসুন ও শীতকালীন সবজি

জেলা প্রতিনিধি, শরীয়তপুর
প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০২৩, ০৪:১১ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

চলছে আমন মৌসুম। সঙ্গে রয়েছে শীতকালীন সবজি। শরীয়তপুরে এরই মধ্যে প্রায় ৬২ শতাংশ জমির ধান কেটেছেন কৃষক। বাকি ধানের বেশির ভাগই প্রায় পরিপক্ক। ১০-১৫ দিনের মধ্যে পুরো ধান ঘরে তোলার কথা। পাশাপাশি বোরো মৌসুমের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে বীজতলা। তবে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে জেলায় বোরোর বীজতলা ও আমন ধান ক্ষতির মুখে পড়েছে। বৃষ্টিতে শীতকালীন সবজি ও রবি মৌসুমের বিভিন্ন ফসলের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষক ও কৃষিসংশ্লিষ্টরা।

soriyatpur_1


বিজ্ঞাপন


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার সদর, জাজিরা, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ, গোসাইরহাট,ডামুড্যা উপজেলার কৃষকদের আমন ধান জমিতে নুইয়ে পড়েছে। জমির ওপর উপড়ে পড়েছে গাছপালা। অতিবৃষ্টির ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে ফসলি জমিতে।

soriyatpur_2

শরীয়তপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, জেলায় মশলা জাতীয় রবিশস্য চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৩৩৭ হেক্টর জমিতে। আর আমন ধান চাষ হয়েছে ১৪ হাজার ২৩৭ হেক্টর জমিতে।

ঘুর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার সন্ধা পর্যন্ত জেলা জুড়ে মুষলধারে বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টিতে পাকা আমন ধানসহ মশলা জাতীয় রবিশস্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পিঁয়াজ, রসুন, ধনিয়া, কালোজিরা, মরিচসহ অন্যান্য ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে পিঁয়াজ ও রসুন চাষীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পিঁয়াজ, রসুনের বীজ থেকে মাটি ফুঁড়ে চারা গজাতে দেখা গেছে মাত্র এক সপ্তাহ আগে। মিধিলির প্রভাবে মুষলধারে বৃষ্টির জমাট বাঁধা পানিতে এসব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে। বৃষ্টি এত বেশি হয়েছে যে, ফসলের চাঁরা মাটি থেকে উপড়ে গিয়ে পানিতে ভেসে এক জায়গায় একত্রিত হয়ে গেছে। ঋণ করে এসব ফসল চাষ করা কৃষকদের মাথায় হাত।


বিজ্ঞাপন


soriyatpur_5

নড়িয়া উপজেলার নশাসন এলাকার কৃষক হাকিম মিয়া ঢাকা মেইলকে বলেন, একটি বেসরকারি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বেশি লাভের আশায় পিঁয়াজ ও রসুন চাষ করেছিলাম। তিন চারদিন আগে চারা গজিয়েছে আমার জমিতে। সেই চারাগুলো বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। ভেসেও গেছে অনেকটা। কিস্তির টাকা শোধ করব কীভাবে এখন আমি? ঘূর্ণিঝড় মিধিলি আমাকে পথে বসিয়ে দিয়ে গেল।

soriyatpur_6

সদর উপজেলার ডোমসারের কৃষক বাবুল মাদবর ঢাকা মেইল কে বলেন, চল্লিশ শতাংশ জমিতে সরিষা বুনেছি। আমার জমিটা একটু নিচু হওয়াতে ক্ষেতের সকল পানি আইসা আমার জমিতে জমেছে। আবার নতুন করে চাষ দিয়ে সরিষা বুনতে হবে।

soriyatpur_3

শরীয়তপুর সদর উপজেলা কৃষক আবুল কালাম ঢাকা মেইলকে বলেন, ২০ শতকের বেশি জমির ধান বাতাসের কারণে নুইয়ে পড়েছে। কিছুদিন পরেই ধান কাটার কথা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এমন বিপর্যয় আশা করিনি। জানি না ফসলের কেমন ক্ষতি হবে, তবে লোকসানের সম্মুখীন হতে হবে।

জাজিরা উপজেলার কৃষক আলমাছ মোল্লা ঢাকা মেইলকে বলেন, পেঁয়াজের জমিটা উঁচু হওয়াতে পানি নেমে যাওয়াতে পিঁয়াজ গুলো বেঁচে গেছে। তবে রসুনে পানি বেঁধে যাওয়ায় রসুনগুলো পচে যাবে। আবার পাকা ধানগুলো সব কাটা হয় নাই ,কালকের মধ্যে সব কেটে ফেলতে হবে। ক্ষতি সম্ভাবনা অনেক বেশি।

soriyatpur_4

এ বিষয়ে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অলি হালদার ঢাকা মেইলকে জানান, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির ফলে কিছু কৃষক ক্ষয়ক্ষতি সম্মুখীন হবে। তবে আমরা সকাল থেকেই মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষি জমিতে ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা নির্ণয় করছি। আমরা সার্বক্ষণিক কৃষকের পাশেই আছি। সব বিষয়ে তাদেরকে দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছি।

শরীয়তপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. রবীআহ নূর আহমেদ ঢাকা মেইলকে বলেন, জেলায় ১৪ হাজার ২৩৮ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। তার মধ্যে ৬২ শতাংশ জমির এ ফসল কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকরা। আর মশলা জাতীয় রবিশস্য চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৩৩৭ হেক্টর জমিতে। যার ক্ষয়ক্ষতি সম্ভাবনা একটু বেশি। 

প্রতিনিধি/ এজে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর