মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪, ঢাকা

ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর: জয়-পরাজয়ের হিসাবনিকাশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৮:৫৪ এএম

শেয়ার করুন:

ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর: জয়-পরাজয়ের হিসাবনিকাশ

চারদিকে তীব্র গুঞ্জন, যেকোনও সময় ইউক্রেনের হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। মুখে কিছু না বললেও মস্কো তার সমস্ত কার্যক্রম সেভাবেই সাজাচ্ছিল। ২০২২ সালের শুরুর দিকে সেই কার্যক্রম তীব্র গতিতে বাড়ে। মার্কিন গোয়েন্দারা জানিয়ে দেয়- যেকোনও সময় ইউক্রেনে পড়বে রাশিয়ার গোলা। ইউক্রেনে অভিনেতা থেকে প্রেসিডেন্ট হয়ে যাওয়া ভলোদিমির জেলেনস্কি অবশ্য সেগুলোকে অতি উৎসাহী মন্তব্য বলে মন্তব্য করছিলেন। এমন অবস্থার মধ্যেই গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মুহুর্মুর্হু হামলা শুরু করে রাশিয়া। অনেকটা দ্বিগ্বিদিক হয়ে পড়ে ইউক্রেন।

শুরুতে জেলেনস্কি যে হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিলেন তা তার আচরণ ও কর্মকাণ্ডে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। যে পশ্চিমারা সারাক্ষণ ইউক্রেনের পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছিল তাদের কাছেই সাহায্যের আবেদন নিয়ে এগিয়ে যান জেলেনস্কি। যুদ্ধের শুরুতে রাশিয়া অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে চারটি অঞ্চলের স্বাধীনতা ঘোষণা করে এবং এর অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে নেয়।


বিজ্ঞাপন


সেই সময়ে বিশ্বের সব বিশ্লেষকরা বলেছিলেন যে, খুব শিগগিরই এই যুদ্ধের সমাপ্তি হবে। কারণ রাশিয়ার মতো পরাশক্তির সামনে দাঁড়াতেই পারবে না সামরিক দিক দিয়ে দুর্বল ইউক্রেন। তবে তাদের সেই ধারণা সত্যি হয়নি। যুদ্ধের এক বছরে রাশিয়া তাদের কৌশল বারবার পাল্টেছে। অপরদিকে পশ্চিমা অস্ত্রে আরও সজ্জিত হয়ে উঠেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।

ukraine war

এখন বলা হচ্ছে এই বছরের শেষ নাগাদ সমাপ্তি হতে পারে ইউক্রেন যুদ্ধের। তবে সেটিও খুব আপেক্ষিক। যুদ্ধের এক বছরে কে জিতেছে আর কে হেরেছে তার হিসাবনিকাশ অনেকটা সমান্তরাল। এই খেলায় এখনও সমান সমান অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। কেউই তাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি।

হামলা চালানোর আগে রাশিয়া যেসব লক্ষ্য ঠিক করেছিল, সেগুলোর বেশিরভাগ থেকে সরে এসেছে। ইউক্রেনের সরকার পতনের বিষয়টি থেকে তারা সরে এসেছে। মনে করা হচ্ছিল খুব দ্রুত জেলেনস্কিকে হটিয়ে সেখানে অনুগত কাউকে বসাবে রাশিয়া। তবে সেটি সম্ভব হয়নি বা সেই চেষ্টা করেনি রাশিয়া। এছাড়া চারটি অঞ্চলের পুরো দখল নেওয়ার বিষয়টি থেকে সরে এসে এখন ডনবাসের দখলে নজর দিয়েছে মস্কো।


বিজ্ঞাপন


যুদ্ধে পরাশক্তিধর রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। সম্প্রতি যুদ্ধবিষয়ক পর্যবেক্ষক একটি সংস্থা জানিয়েছে, আগে রাশিয়ার যে পরিমাণ ট্যাংক ছিল এই এক বছরে সেটি ৪০-৫০ শতাংশ কমে গেছে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রুশ সেনা প্রাণ হারিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় জেনারেল মার্ক মিলে কয়েকদিন আগে বলেছেন, রাশিয়া কৌশলগতভাবে ইতোমধ্যে হেরে গেছে। তবে তিনি সঙ্গে এও জানান, দুই পক্ষের কেউই এখনই তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না।

ukraine war

যদিও একের পর এক পশ্চিমা সাহায্য ও অস্ত্রে দিন দিন কলেবর বাড়ছে ইউক্রেনের। বছর শেষে যুদ্ধের গতিপথও পাল্টে দিয়েছে ইউক্রেন। তারপরও তারা যে জিতে গেছে বা জয়ের দিকে এগোচ্ছে সেটি বলা যাবে না। তবে আশা করা যায়, পশ্চিমা সহযোগিতা ও অস্ত্রের বহর আসতে থাকলে ইউক্রেন যেকোনও কিছু করে ফেলতে পারে। 

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান জোসেপ বোরেল সম্প্রতি সতর্ক করে বলেন, ইউক্রেনে পশ্চিমা দেশগুলোর অস্ত্রের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। এমনকি কামানের জন্যও পশ্চিমাদের দিকে চেয়ে থাকে তারা। এসব দিক ইউক্রেনের দুর্বলতা প্রকাশ করে।

গত বছর যুদ্ধের শুরুতে ট্যাংক ও স্থলবাহিনী ইউক্রেনে আক্রমণ করে। তবে শীত শুরু হতেই হামলার ধরন পাল্টে ফেলে রাশিয়া। এক্ষেত্রে তারা ড্রোন ও বিমান হামলা চালায়। শীত শেষ হতেই আবারও রাশিয়া ট্যাংক যুদ্ধ শুরু করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পূর্ব ইউক্রেনে এখন সেটিই চলছে। যেখানে অনেকটাই পিছিয়ে ইউক্রেন।

সূত্র: গার্ডিয়ান

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর