খুব শীঘ্রই ইউক্রেন যুদ্ধ থামছে না। যুদ্ধের এক বছর পূর্তির সময় এমন তথ্য দিয়েছেন ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। অন্যদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আরও একবার জোরালো ভাষায় আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এই যুদ্ধ ইউরোপ এবং সারা বিশ্বকে কতটা বিপদগ্রস্ত করে তুলেছে তা তুলে ধরার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু, সমীক্ষা বলছে এ যুদ্ধকে কেন্দ্র করে অস্ত্র উৎপাদন বাড়িয়েছে রাশিয়া।
যুদ্ধের এক বছর পূর্তির এক দিন আগে বুধবার রাতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এক সভায় ভাষণে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, এই যুদ্ধ “আঞ্চলিক অস্থিরতা” উসকে দিচ্ছে এবং সেই সঙ্গে বিশ্বজুড়ে “উত্তেজনা এবং বিভেদ” সৃষ্টি করছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আর এ কারণে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সংকট সমাধানের ওপর থেকে নজর ও গুরুত্ব সরে যাচ্ছে।
গুতেরেস হুঁশিয়ার করেন, “পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পরোক্ষ হুমকির” কথাও উচ্চারিত হচ্ছে। “ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে সরে আসার এখন উপযুক্ত সময়।”
ইউক্রেনের সমস্ত এলাকা থেকে বিনা শর্তে রুশ সৈন্য প্রত্যাহারে ইউক্রেনের আনা নতুন এক প্রস্তাব নিয়ে বিতর্কের জন্য ওই সভা ডাকা হয়।
রাশিয়ার সমালোচনা করে গুতেরেস বলেন, ইউক্রেনে হামলা ছিল আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন, কিন্তু একইসাথে যুদ্ধ বন্ধে উদ্যোগ নিতে তিনি বারবার বিবদমান পক্ষগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
বিজ্ঞাপন
“যেকোনো ধরণের আত্মতুষ্টি সংকটকে আরও গভীর করবে, যার পরিণতিতে জাতিসংঘ সনদের মূল আদর্শগুলো আরও বিপন্ন হবে।“
তিনি বলেন, “যুদ্ধ কোনো সমাধান নয়, যুদ্ধ নতুন সমস্যা ডেকে আনে। ইউক্রেনের মানুষজন চরম দুর্গতি পোহাচ্ছে। ইউক্রেন, রাশিয়া এবং এই দুই দেশের বাইরের মানুষজনের কাছে এখন শান্তি প্রয়োজন।“
কিন্তু জাতিসংঘ মহাসচিব যখন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছেন তখন যুদ্ধ আরও বিপজ্জনক মোড় নেওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বেন ওয়ালেস এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ কমপক্ষে আরও এক বছর চলবে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বুধবার রাতে জাতির উদ্দেশ্যে এক ভিডিও ভাষণে বলেছেন, তার সরকার “পিতৃভূমি রক্ষায়” নিয়োজিত সৈনিকদের জন্য আরও নতুন এবং আধুনিক সমরাস্ত্র উৎপাদন বাড়িয়েছে।
যুদ্ধের বছর পূর্তিতে শান্তির কোনো উদ্যোগ নেওয়ার পরিবর্তে ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা প্রকাশ্যে একে একে আরও আধুনিক মারণাস্ত্র সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
স্পেন বুধবার বলেছে তারা ইউক্রেনকে জার্মানির তৈরি ছয়টি লেপার্ড-২ ট্যাংক দেবে।
সুইডেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাল জনসনও স্থানীয় এক গণমাধ্যমে বলেছেন, তাদের সরকার ইউক্রেনকে বেশ কয়েকটি লেপার্ড ট্যাংক দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে।
ফিনল্যান্ডের সরকারও বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা তিনটি লপার্ড ট্যাংক ইউক্রেনে পাঠাবে।
আর ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ন্যাটো জোটের পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দেওয়া হতে পারে।
ন্যাটো জোট থেকে ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দেওয়া হলে যুদ্ধ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন।
সূত্র : বিবিসি
এমইউ