নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অভিযানে আটক ৪ আসামিকে হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নিয়েছে সহযোগী মাদক কারবারিরা।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুরে মাসদাইর এলাকার বেগম রোকেয়া খন্দকার পৌর উচ্চ বিদ্যালয়ের বিপরীত গলিতে এই ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ফতুল্লার মাসদাইর এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাহিদ, সুমনসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে। তবে কিছুক্ষণ পর শীর্ষ মাদক কারবারি সেলিম ওরফে কসাই সেলিম, রাসেল ওরফে কসাই রাসেল, কাজল, রিয়াদ শাওন, সানি, হাসান সহ ১৫-২০ জনের মাদক কারবারিরা দেশীয় তৈরি অস্ত্র নিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা হ্যান্ডকাফ পরিহিত আটক চার মাদক কারবারিকে ছিনিয়ে নেয় এবং গাড়ি ভাঙচুর করে। মাদক কারবারিদের হামলায় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এক কনস্টেবল আহত হয়। হামলাকারীদের থেকে রক্ষা পেতে মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তারা এক শিক্ষকের বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করে। সেখানেও হামলাকারীরা হামলা চালায়।
ঘটনার পরপরই জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার নির্দেশনায় সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. মোনাববর হোসেন এর নেতৃত্বে বিজিবি ও জেলা পুলিশের সহায়তায় পুনরায় অভিযান চালানো হয়।
পুলিশ ও প্রশাসনের অভিযানে ২০ কেজি ৫০০ গ্রাম গাঁজা, ১ হাজার ৭০০ পিস ইয়াবা, ৫ বোতল বিদেশি মদ, ১৪ বোতল ফেনসিডিল, হেরোইনসহ চাপাতি, ছুরি, সুইস গিয়ার চাকুসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তবে অভিযানে কোনো আসামিকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
ফতুল্লা মডেল থানার মাসদাইর শহীদ সাব্বির আলম খন্দকার সড়কের ভাড়াটিয়া মো. নাসিরের দুই ছেলে সেলিম ওরফে কসাই সেলিম, রাসেল ওরফে কসাই রাসেল দীর্ঘদিন ধরে বেগম রোকেয়া খন্দকার পৌর উচ্চ বিদ্যালয়ের বিপরীতে প্রকাশ্যে ফেনসিডিল, হেরোইন, টাপেন্ডা, গাঁজা ও ইয়াবা বিক্রি করে আসছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে এবং আগেও একাধিকবার গ্রেফতার হলেও পরে জামিনে মুক্তি পেয়েছে। এর আগে ২০২২ সালের ১০ আগস্ট, ফতুল্লার মাসদাইর এলাকার নুর ভিলা নামক এক নির্মাণাধীন ভবনের নিচতলা থেকে ৪০০ পিস ইয়াবাসহ রাসেলকে গ্রেফতার করা হয়। ২০২১ সালের ১৬ জুন, ফতুল্লার মাসদাইর গুদারাঘাটের পারুলির বাড়ির সামনে থেকে এক নারীসহ ২০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয় রাসেল।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। মার্চ মাসের আইনশৃঙ্খলা সভায় তিনি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন।
জেলা প্রশাসক স্পষ্টভাবে ঘোষণা দিয়েছেন যে, নারায়ণগঞ্জে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং অপরাধীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এছাড়াও, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও জেলা পুলিশকে নিয়মিত মামলা দায়েরের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিনিধি/এসএস