বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪, ঢাকা

আল্লাহ মুসলমানদের কেন প্রকৃত মুসলিম হওয়ার নির্দেশ দিলেন

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ অক্টোবর ২০২২, ১২:২৪ পিএম

শেয়ার করুন:

আল্লাহ মুসলমানদের কেন প্রকৃত মুসলিম হওয়ার নির্দেশ দিলেন

মুসলিম দাবি করলেই প্রকৃত মুসলিম হওয়া যায় না। এর জন্য ঈমানের বিশুদ্ধতা আবশ্যক। তাই মহান আল্লাহ ঈমানদারদের প্রকৃত মুসলমান হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করো। আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সুরা বাকারা: ২০৮)

এই আয়াতে ঈমানদারদের বলা হচ্ছে, তোমরা ইসলামে পরিপূর্ণরূপে প্রবেশ হয়ে যাও। এমন যেন না হয়, যে নির্দেশগুলো তোমাদের পছন্দসই হবে, শুধু সেগুলোর ওপর আমল করবে এবং অন্যান্য নির্দেশগুলো ত্যাগ করবে। দীন কেবল (ব্যক্তিগত) ইবাদত বা মসজিদে সীমাবদ্ধ রাখার বিষয় নয়, বরং জীবনের প্রত্যেকটি বিষয়ে দীনের অনুগামী হও। বলা হচ্ছে, তোমরা সেই শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না, যেই শয়তান ইসলাম পরিপন্থী কথা ও কাজকে লোভনীয় ভঙ্গীতে তোমাদের সামনে পেশ করে। সুতরাং সব মতবাদ, বিদআত, প্রচলিত প্রথা, বিজাতীয় সংস্কৃতি, রীতিনীতি ছেড়ে কেবল ইসলামকেই পূর্ণরূপে বরণ করে নাও।


বিজ্ঞাপন


আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা পরিপূর্ণরূপে বিশ্বাস স্থাপন করো আল্লাহর ওপর, তাঁর রাসুলের ওপর এবং ওই কিতাবের ওপর, যা তিনি নাজিল করেছেন তাঁর রাসুলের প্রতি এবং সেসব কিতাবের ওপর, যা তিনি নাজিল করেছিলেন ইতিপূর্বে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাব, তাঁর রাসুল ও কেয়ামতকে প্রত্যাখ্যান করবে, সে দূরতম ভ্রষ্টতায় নিপতিত হলো।’ (সুরা নিসা: ১৩৬)

উল্লেখিত আয়াত দুটির আলোকে ঈমানদারদের দুই ভাগে ভাগ করা যায়। (১) খাঁটি ঈমানদার (২) ভেজাল ঈমানদার। আল্লাহ তাআলা ভেজাল ঈমানদারদের ঈমানের বিশুদ্ধতার মাধ্যমে পূর্ণরূপে ইসলামে প্রবেশের নির্দেশ দিয়েছেন। কেননা বহু মুসলমান আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেও কর্ম ও বিশ্বাসগতভাবে মুশরিক। বিষয়টি পবিত্র কোরআনে এসেছে এভাবে—‘তাদের বেশির ভাগ আল্লাহকে বিশ্বাস করে। অথচ সেইসঙ্গে শিরক করে।’ (সুরা ইউসুফ: ১০৬)

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে কাসির বলেন, যেসব মুসলিম ঈমানদার হয়েও শিরকে লিপ্ত, তারা এ আয়াতের অন্তর্ভুক্ত। এখানে যেসব শিরকের ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে সে বিষয়ে তিনি হাদিসের উদ্ধৃতি দেন। এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, আমি তোমাদের জন্য যেসব বিষয়ের আশঙ্কা করি, তার মধ্যে সবচাইতে বিপজ্জনক হচ্ছে ছোট শিরক। সাহাবায়ে কেরামের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, ছোট শিরক হচ্ছে রিয়া বা লোক দেখানো ইবাদত। (মুসনাদে আহমদ: ৫/৪২৯) অন্য হাদিসে আল্লাহ ছাড়া অন্যের কসম করাকেও শিরক বলা হয়েছে। (সহিহ ইবনে হিব্বান: ১০/১৯৯, হাদিস: ৪৩৫৮) আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে মান্নত করা এবং জবেহ করাও শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

অতএব, মুসলমান নাম ধারণ করলেই প্রকৃত মুসলমান হওয়া যায় না। সত্যিকার মুসলমান হওয়ার জন্য পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ এবং ঈমানের বিশুদ্ধতা জরুরি। হাদিসে এসেছে, ঈমান পুরাতন হয় এবং তার নবায়নের জন্য দোয়া করতে হয়। (সিলসিলাহ সহিহাহ: ১৫৮৫)


বিজ্ঞাপন


আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পূর্ণ ঈমানের সঙ্গে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর