নামাজে ভুল করলে এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে সালাম ফেরানোর আগে যে দুটি অতিরিক্ত সেজদা আদায় করতে হয়, তা-ই সাহু সেজদা। শরয়ি দৃষ্টিকোণ থেকে এই সেজদা ওয়াজিব। যেমন—নামাজের কোনো ফরজ ভুলক্রমে নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরে আদায় করলে, এক ফরজ ডাবল আদায় করলে, নামাজের কোনো ওয়াজিব ছুটে গেলে বা তা আদায়কালে কোনো পরিবর্তন বা বিলম্ব করলে সাহু সেজদা ওয়াজিব হয়ে যায়।
সাহু সেজদার নিয়ম হলো—শেষ বৈঠকে তাশাহুদ পড়া শেষ করে ডান দিকে সালাম ফেরাবে। তারপর তাকবির বলে নামাজের মতো দুটি সেজদা করে বসে যাবে এবং তাশাহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরাবে। (মুসনাদে আহমদ: ১৮১৮৮, বুখারি: ১১৫০, ১১৫৩)
বিজ্ঞাপন
প্রশ্ন হলো- কারো সাহু সেজদা ওয়াজিব হয়েছে, কিন্তু তা আদায় করতে ভুলে গেছে, এ অবস্থায় তার পুরো নামজটাই কি বাতিল হয়ে যাবে? এর উত্তর হলো- হ্যাঁ। সাহু সেজদা ওয়াজিব হওয়ার পর কেউ সাহু সেজদা ছাড়াই নামাজ শেষ করলে তার উক্ত নামাজ বাতিল হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন
যে ৬ কারণে সাহু সেজদা করতে হয়
নামাজে সন্দেহ হলেই কি সাহু সেজদা?
তবে, সালাম ফেরানোর পর নামাজ পরিপন্থী কোনো কাজ (যেমন কথা বলা, মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া ইত্যাদি) না করে থাকলে তখনই সাহু সেজদা আদায় করে নিলে ওই নামাজ সহিহ হয়ে যাবে। ইবরাহীম নাখায়ি (রহ) বলেন, ‘সাহু সেজদা করে নেবে, যতক্ষণ মসজিদ থেকে বের না হয় এবং কথা না বলে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, বর্ণনা-৪৫১৪)
কিন্তু বিপরীতে যদি সালাম ফিরিয়ে নামাজ ভঙ্গ হওয়ার মতো কোনো কাজ করে ফেলে, সেক্ষেত্রে সাহু সেজদা আদায়ের আর সুযোগ থাকে না। তখন ওই নামাজ পুনরায় পড়ে নিতে হবে। (কিতাবুল আছল: ১/২০০; শরহু মুখতাসারিত তহাবি, ইসবিজাবি: ১/৩৫২; খুলাসাতুল ফতোয়া: ১/১৭৯; শরহুল মুনইয়া, পৃ-৪৬৪; আদ্দুররুল মুখতার: ২/৯১)
বিজ্ঞাপন
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নামাজের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বনের তাওফিক দান করুন। জীবনের প্রত্যেক ক্ষেত্রে, প্রত্যেক বিষয়ে শরিয়তের নির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।