সৌদি আরবের মক্কা নগরীর বাইরে প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হচ্ছে পবিত্র কাবার গিলাফ কিসওয়ার পুরো অংশ। এর আগে সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে কাবার গিলাফের অংশবিশেষের প্রদর্শনী হলেও এবার পুরো গিলাফ একসঙ্গে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।
সৌদি সংবাদ সংস্থা এসপিএর বরাতে গালফ নিউজ জানায়, সুন্দর নকশায় সুসজ্জিত এ গিলাফ জেদ্দার কিং আবদুল আজিজ বিমানবন্দরে অনুষ্ঠিত ইসলামিক শিল্পকলা প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হচ্ছে। ইসলামিক আর্টস বিয়েনালের এ প্রদর্শনীতে দর্শকদের কাবার গিলাফের সূক্ষ্ম কারুকাজ ও অলংকরণকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
প্রদর্শনীতে স্বর্ণ ও রৌপ্য সুতায় সূচিত মনোমুগ্ধকর নকশা, সূক্ষ্ম কারুশিল্পের দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে। প্রদর্শনীটি ২৫ মে পর্যন্ত চলবে, যার মূল লক্ষ্য ইসলামিক শিল্পকলার সৌন্দর্যকে তুলে ধরা। এর সমৃদ্ধ ঐতিহ্য সম্পর্কে দর্শকদের গভীর জ্ঞান দান করা।
আরও পড়ুন: কাবা বায়তুল্লাহ: আল্লাহর কুদরতি নিদর্শন
আয়োজকদে দাবি, পবিত্র কাবার কিসওয়ার স্বতন্ত্র শিলালিপি এবং অলঙ্করণ ইসলামি শিল্পে সৃজনশীল উৎপাদনের সর্বোচ্চ রূপ হিসাবে বিবেচিত। বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের জীবনে এর তাৎপর্য রয়েছে।
জেদ্দা বিমানবন্দরের হজ টার্মিনালে আয়োজিত এই প্রদর্শনী দর্শকদের কিসওয়া তৈরির বিস্তৃত প্রক্রিয়ার সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দেয়। প্রক্রিয়াটি শুরু হয় উৎকৃষ্ট মানের প্রাকৃতিক সিল্ক নির্বাচন থেকে, তারপর হাতে বোনা ও স্বর্ণ-রৌপ্য সূচিকর্মের মাধ্যমে নকশা করা হয়, পরিশেষে এটি প্রস্তুতির চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়।
বিজ্ঞাপন
এ ছাড়া প্রদর্শনীতে কিসওয়া তৈরির শতাব্দীকাল ধরে চলা বিবর্তন ও এতে ব্যবহৃত বিভিন্ন নান্দনিক কারুশিল্প কৌশল প্রদর্শিত হচ্ছে।
১২০ কেজি স্বর্ণের সুতার কারুকাজ করা হয় কিসওয়াতে। কিসওয়া তৈরির কাজ কিং আবদুল আজিজ কমপ্লেক্স ফর দ্য হলি কাবা কিসওয়াতে সম্পন্ন হয়। যেখানে কাজ করেন ২০০-এরও বেশি দক্ষ কারিগর ও প্রশাসনিক কর্মী।
আরও পড়ুন: তায়েফ: যেখানে এখনো অশ্রু ঝরে
এই কমপ্লেক্সে বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে। যেমন- সিল্ক রং করা, স্বয়ংক্রিয় ও হাতে তৈরি বুনন, ছাপা, বেল্ট, স্বর্ণের সূচিকর্ম, সেলাই ও সংযোজন। এখানে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু কম্পিউটারাইজড সেলাই মেশিন রয়েছে। কিসওয়া তৈরির জন্য প্রায় ১ হাজার কেজি কালো রঙের সিল্ক, ১২০ কেজি স্বর্ণের সুতা, ১০০ কেজি রৌপ্য সূতা ব্যবহৃত হয়।
ইসলামের সবচেয়ে পবিত্র স্থান মক্কার মসজিদে হারামে অবস্থিত পবিত্র কাবার কিসওয়া প্রতি বছর হিজরি নববর্ষের প্রথম দিন ১ মহররম পরিবর্তন করা হয়। এর আগে হজের দিন অর্থাৎ ৯ জিলহজ কাবার গিলাফ পরিবর্তন করা হতো।