ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঢাকা ছাড়ছেন লাখ লাখ মানুষ। সড়ক, নৌ ও রেলপথে নগর ছাড়ছেন নগরিকরা। এর মধ্যে সড়কপথে যাত্রায় অনেকটা স্বস্তি থাকলেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নৌপথে।
শনিবার (৩০ এপ্রিল) সারাদেশের ঈদ যাত্রার অবস্থা দেখে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বিজ্ঞাপন
সড়কে যাত্রায় গাড়ির চাপ থাকলেও ভোগান্তি অন্যান্য ঈদের তুলনায় তেমনটা নেই। দেশের উত্তরাঞ্চলে যেতে প্রতিবছর দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয় মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ অঞ্চলে। তবে এবার চিত্র অনেকটা ভিন্ন।
সিরাজগঞ্জে দিয়ে রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁওসহ দেশের উত্তরের জেলামুখী পরিবহনের চাপ থাকালেও গাড়ি স্বাভাবিকভাবেই চলছে। সিরাজগঞ্জের নলকা সেতুর একটি লেন খুলে দেওয়ার কারণে গাড়ির বাড়তি চাপ সামাল দেওয়া সহজ হচ্ছে।
স্থানীয় প্রতিনিধির পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, সিরাজগঞ্জে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গমুখী গাড়ির চাপ অনেক। নলকা সেতু খুলে দেওয়ায় যান চলাচলে খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না।
শুধু উত্তরের সড়কেই নয়, ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা সিলেট সড়কেও গাড়ি স্বাভাবিকভাবেই চলছে। কোথায় তেমন যানজটের খবর পাওয়া যায়নি।
বিজ্ঞাপন
এদিকে সড়কপথের যাত্রা অনেকটা স্বস্তিময় হলেও নৌপথের যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার শিমুলিয়া নৌরুটে জনস্রোত তৈরি হয়েছে। এই ঘাটে পদ্মা পারের অপেক্ষায় রয়েছে সহস্রাধিক যানবাহন। বিড়ম্বনা হতে পারে এমন আশঙ্কা মাথায় নিয়েই ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে নানাভাবে শিমুলিয়ায় ভিড় করছে মানুষ। ফেরিতে গাদাগাদি করে তারা চলেছেন নিজ নিজ গন্তব্যে।
শনিবার সকালে পদ্মা পারের অপেক্ষায় রয়েছে তিন সহস্রাধিক মোটরসাইকেল, চার শতাধিক প্রাইভেট ও তিন শতাধিক পিকআপ। তবে ভোর থেকে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরি সার্ভিস বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. জামাল হোসেন জানান, সকাল থেকেই যাত্রী ও যানবাহন চাপ রয়েছে অনেক। তবে আমাদের ব্যবস্থাপনা মতোই কাজ চলছে। তিন শ পিকআপ রয়েছে। তবে তাদের পারাপার করা হচ্ছে না। যাত্রী, প্রাইভেট মোটরসাইকেল পারাপারের জন্য ফেরি ঘাটগুলো নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
পদ্মাপারের অপেক্ষায় ৩ সহস্রাধিক মোটরসাইকেল ও চার শতাধিক প্রাইভেট-মাইক্রোবাস রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র শিমুলিয়া ঘাটের পরিবহন পরিদর্শক মো. সোলেমান জানান, যাত্রীচাপ রয়েছে লঞ্চ ও স্পিডবোট ঘাটেও। যাত্রী পারাপারের ৮৫ লঞ্চ ও ১৫৫ স্পিডবোট রয়েছে।
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটেও ঘরমুখো মানুষের চাপ রয়েছে। আছে যানবাহনের চাপও।
শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ৮টার পর থেকে লঞ্চঘাটে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। যারা কাটা লাইনের গাড়িতে ঘাটে পৌঁছেছেন তারা সহজেই ফেরি ও লঞ্চে পারাপার হতে পারছেন। তবে দূরপাল্লার বাস ও প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাসের যাত্রীদের ফেরি পার হতে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা অঞ্চলের ডিজিএম মো. খালিদ নেওয়াজ জানান, পাটুরিয়া-দৌলতিয়া নৌরুটে বর্তমানে ছোট-বড় ২১টি ফেরি চলাচল করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পাটুরিয়া ঘাট হয়ে সাড়ে আটশ বাস, চার হাজার ২৬টি ছোট গাড়ি, তিন হাজার ২০টি মোটরসাইকেল এবং ৪০২টি ট্রাক পার হয়েছে। এসময়ে দুই ঘাট মিলিয়ে সর্বমোট সাড়ে ১২ হাজার যানবাহন পারাপার হয়েছে।
কারই/এমআর