শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

নেত্রকোনায় নতুন এলাকা প্লাবিত, ৭ উপজেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০২২, ১১:১২ এএম

শেয়ার করুন:

নেত্রকোনায় নতুন এলাকা প্লাবিত,  ৭ উপজেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন

উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারী বর্ষণে নেত্রকোনা বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে নতুন আরও অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, জেলার সাত উপজেলার মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। জেলার ১০ উপজেলা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

এরই মধ্যে শুক্রবার সারা রাতের বৃষ্টিতে নেত্রকোনা সদর, পূর্বধলা, কেন্দুয়া ও আটপাড়াও প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানির স্রোতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নেত্রকোনা-মোহনগঞ্জ রেলপথের বারহাট্টা উপজেলার অতিথপুর রেলস্টেশন সংলগ্ন ইসলামপুর এলাকার রেলসেতুটিও। এতে নেত্রকোনা থেকে সারাদেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। পানিতে প্লাবিত হয়েছে জেলার শত শত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদরাসা।


বিজ্ঞাপন


এদিকে, বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে জেলার ১০ উপজেলার মধ্যে ৭টিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে কলমাকান্দা উপজেলায় বৃহস্পতিবার রাত ৮টার পর থেকে সম্পূর্ণভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। অন্য উপজেলাগুলোর কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সচল থাকলেও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ৩-৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। বিদ্যুৎ না থাকায় এসব এলাকায় মুঠোফোন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। খাওয়ার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরি, বারহাট্টাসহ সাতটি উপজেলায় বন্যার পানি দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে। অল্প সময়ের মধ্যেই দুর্গাপুর ও কলমাকান্দায় পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। কলমাকান্দায় প্রায় ৯২ শতাংশ, খালিয়াজুরিতে ৯৫ শতাংশ ও দুর্গাপুরে ৮০ শতাংশ এলাকা পানির নিচে রয়েছে। ১০টি উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত আট লক্ষাধিক মানুষ। উপজেলার সঙ্গে ইউনিয়ন ও জেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ৬ উপজেলায় ২০৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৮ হাজারেরও বেশি মানুষ ঠাঁই নিয়েছে। শুক্রবার জেলার প্রধান নদ-নদীসহ হাওরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, বারহাট্টা, খালিয়াজুরী, মদন ও মোহনগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক লক্ষাধিক মানুষ। তলিয়ে গেছে মৌসুমি সবজিসহ আউশ ধানের খেত। পানিতে ভেসে গেছে সহস্রাধিক পুকুর ও ঘেরের মাছ। রাস্তার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে আন্তঃসড়ক যোগাযোগ।

নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক মো. জাকির হোসেন জানান, বন্যার কারণে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, বারহাট্টা, খালিয়াজুরিসহ জেলার সাত উপজেলার কিছু সাবস্টেশন বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। জেলায় পল্লী বিদ্যুতের মোট ৫ লাখ ৯২ হাজার গ্রাহক রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২ লাখ ৩৪ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ রয়েছে। পানি কমে গেলেই আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হবে।

জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিস জানান, বন্যাদুর্গতদের জন্য জেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক খোঁজ-খবর রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কট্রোলরুম খোলা হয়েছে। পাশাপাশি বন্যাদুর্গতদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রীসহ সরকারি সকল সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর