গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের বুক চিরে বয়ে গেছে ২৬ কিলোমিটার ঘাঘট নদী। একসময় পানিপ্রবাহে নদীটি ছিল রূপেভরা সৌন্দর্যে। কিন্তু প্রতি বছরে বর্ষায় উজান থেকে নেমে আসা পলি জমে হারিয়ে যেতে বসেছে সেই যৌবন। এখন নাব্যতা হারিয়ে ঘাঘটের বুকে হচ্ছে ধানের আবাদ। আর নদীর বুকে দৃষ্টি দিলে মনে হয় এটি কোনো ফসলের মাঠ।
সম্প্রতি সরেজমিনে উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের মহিষবান্দি, জামালপুর ইউনিয়নের পাতিল্যাকুড়া-চকদাড়িয়া এলাকার ঘাঘটে বুকে দেখা গেছে- ধানসহ অন্যান্য ফসল আবাদের দৃশ্য। এই নদীর বুকে বোরো ধান আবাদ করেছেন নিল মিয়াসহ আরও অনেক কৃষক। সরকারিভাবে নদী রক্ষায় তৎপর না থাকায় ঘাঘট এখন কেবলই নামসর্বস্ব নদী বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
বিজ্ঞাপন
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া চিরচেনা ঘাঘট স্বাধীনের ৫২ বছরেও নদীশাসন ব্যবস্থা না থাকায় সোজাপথের ঘাঘটের গতি উলটো হয়েছে। বর্তমানে আঁকাবাঁকাভাবে বয়ে চলা নদীটি বনগ্রামের টুনিরচর থেকে শুরু হয়ে নলডাঙ্গার শ্রীরামপুর গিয়ে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার সীমানায় ঠেকেছে। এখানে এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি দায়িত্বশীলদের আঁতাত করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বাণিজ্য করায় নদী ভাঙন আরও বেশি আকার ধারণ করছে। অথচ ভাঙনরোধে সরকারিভাবে নেওয়া হচ্ছে না পদক্ষেপ। প্রতিবর্ষায় উজানের ঢলে নেমে আসা পলিতে ভরে উঠছে নদীটি। এতে করে পানিপ্রবাহের বাঁধাগ্রস্ত হওয়ায় হারিয়েছে নদীর চিরচেনা রূপ। এ কারণে শুকনো মৌসুমে নাব্যতা সংকটের সুযোগ নিয়েছে তীরবর্তী কৃষকরা। তারা ধানের আবাদসহ নানা ফসল উৎপাদনের চেষ্টা করছেন বলে জানালেন নজরুল ইসলামসহ একাধিক কৃষক।
নদী ও পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘাঘট নদীশাসন ব্যবস্থা না করা হলে একসময় হয়ত নদীর প্রাণ হারিয়ে মানচিত্র থেকে মুছে যাবে। বর্তমানে বর্ষার পানি নদী ধারণ করতে না পারায় ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। আর উজানের জমে ওঠা পলির কারণে শুকনো মৌসুমে বাড়ছে ধানের আবাদ। তাই নদীর অস্তিত্ব রক্ষায় খনন ও সংস্কার করা জরুরি।
নদীর বুকে ধান-ভুট্টাসহ বিভিন্ন ধরনের আবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সাদুল্লাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মতিউল আলম।
বিজ্ঞাপন
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, ইতোমধ্যে ওই নদীর একাধিক পয়েন্টে ভাঙনরোধে কাজ করা হয়েছে। নদীটি খননের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে।
প্রতিনিধি/এসএস