রোববার, ৬ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

ফেরি নিয়ে সন্দ্বীপ যাচ্ছেন সাত উপদেষ্টা

ইব্রাহিম খলিল, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:২২ এএম

শেয়ার করুন:

loading/img

ফেরি নিয়ে চট্টগ্রাম জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সন্দ্বীপ যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের সাত উপদেষ্টা। সোমবার (২৪ মার্চ) সকালে সন্দ্বীপ-চট্টগ্রাম নৌরুটে ফেরি সার্ভিস উদ্ধোধনের পর সন্দ্বীপ পৌঁছাবেন তারা। এর আগে এই রুটে ফেরি চলাচল করেনি কখনও।

ফলে ফেরি চলাচলের মাধ্যমে সন্দ্বীপে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন যুগের সূচনা হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় লোকজন। যার মধ্য দিয়ে এই নৌ রুটে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি ও প্রাণহানির অধ্যায় শেষ হতে চলেছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম এ তথ্য জানান।


বিজ্ঞাপন


তিনি বলেন, সোমবার (২৪ মার্চ) সকালে সন্দ্বীপ-চট্টগ্রাম নৌরুটে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহণ উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন। সঙ্গে থাকবেন আরও ৬ জন উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন।

আরও পড়ুন

ফেরির চালক বাবা হলেও চালায় ছেলে!

এরপর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান অন্তর্বর্তী সরকারের আরও ছয় উপদেষ্টাকে সঙ্গে নিয়ে নিজ জন্মস্থান সন্দ্বীপ যাবেন। চট্টগ্রামের স্থলভাগ সীতাকুন্ড উপকুল থেকে ফেরি সার্ভিসে প্রায় ১০ মাইল পাড়ি দিয়ে সন্দ্বীপে পৌঁছাবেন।

উপদেষ্টারা হলেন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, এম সাখাওয়াত হোসেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায়। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বক্স চৌধুরী ও অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমানও তাদের সঙ্গে থাকবেন।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন

ঈদ উপলক্ষে জমজমাট খুলনার বিপণিবিতান, দাম বেশির অভিযোগ

সন্দ্বীপের বাসিন্দা কামাল উদ্দিন জানান, ফেরি সার্ভিস চালুর পথে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানকে। কিন্তু তিনি সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে সফলভাবে চার লাখ সন্দ্বীপবাসীর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন।

এর আগে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান একাধিকবার সন্দ্বীপ পরিদর্শন করে প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ দ্বীপ আমার জন্মস্থান। আমার দায়বদ্ধতা আছে। সন্দ্বীপ অনেক দিক থেকে পিছিয়ে আছে। দ্বীপবাসীর যাতায়াত সমস্যা দূর করতে পেরে আমি আনন্দিত।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বঙ্গোপসাগরের বুকে অবস্থিত সন্দ্বীপের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগ বরাবরই ছিল কষ্টসাধ্য। বর্ষাকালে উত্তাল সাগর পাড়ি দেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠত। এ পর্যন্ত বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ২০১৭ সালে সন্দ্বীপ র্ট্যাজেডি নামে পরিচিত দুর্ঘটনায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়। ২০২২ সালে স্পিডবোট ডুবে প্রাণ হারান চারজন।

দীর্ঘদিন ধরে নিরাপদ নৌযান চালুর দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল আমরা সন্দ্বীপবাসীসহ বিভিন্ন সংগঠন। ২০১২ সালে নির্মিত জেটি অব্যবহৃত থাকলেও, ২০২২ সালে সরকার ফেরি সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। তবে অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে তা বাস্তবায়ন বিলম্বিত হয়।

ফেরি সার্ভিস চালুর মাধ্যমে সন্দ্বীপের মানুষের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান হলো। এ উদ্যোগ সন্দ্বীপকে অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে মনে করছেন আমরা সন্দ্বীপবাসী সংগঠনের সমন্বয়ক মাহবুবুল মাওলা।

প্রতিনিধি/এসএস

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন