বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

মসজিদুল হারামে তারাবি, সে দৃশ্য অভূতপূর্ব!

হারুন জামিল
প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২৩, ১০:০৯ এএম

শেয়ার করুন:

মসজিদুল হারামে তারাবি, সে দৃশ্য অভূতপূর্ব!

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রমজান শুরু হয়ে গেছে। গতরাতে তারাবির নামাজ আদায় হয়েছে মক্কায় মসজিদুল হারামে। শায়েখ আল্লামা সুদাইসসহ দু'জন নির্ধারিত ইমাম তারাবির নামাজ পড়ান। মক্কায় দিনভর ছিল রমজানের প্রস্তুতিমূলক তৎপরতা।

গত দুদিন লাখো ধর্মপ্রাণ মানুষের সমাগম ঘটেছে এই পবিত্র নগরীতে। রাস্তা ও হোটেলগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই অবস্থা। বাজারে রমজানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ঘটেনি। জিনিসপত্রের দাম একই রকম। বরং রোজাদারের নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রীর দাম কমেছে।


বিজ্ঞাপন


এক কেজি দুধের দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ টাকা। খেজুরের সরবরাহ প্রচুর। মসজিদুল হারামে মাগরিবের আগে ব্যক্তি পর্যায়ে ইফতার সরবরাহ করা হয় বেশুমার। সেহেরির সরবরাহ প্রচুর। আবে জমজম লাখ লাখ মুসল্লির পানির চাহিদা মেটায়।

মসজিদুল হারামে গতরাতে তারাবির নামাজ আদায় হয়েছে ১০ রাকাত। করোনার সময় থেকে তারাবির রাকাআত কমিয়ে আদায় করা হচ্ছে। মক্কা ইসলামের পবিত্র নগরী। কাবা বায়তুল্লাহ এই নগরীতে।

প্রতি বছর হজ-ওমরাহর জন্য সারা পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ মুসলমান এই শহরে আসেন। এখানে রমজান উপলক্ষে বাড়তি পরিচ্ছন্নতায় জোর দেওয়া হয়েছে। রাস্তাঘাট পরিষ্কার ও ধোয়ামোছা করা হয়েছে। মুসল্লিরা যাতে গরমে কষ্ট না পান এজন্য উঁচু পিলার থেকে ঠাণ্ডা পানি স্প্রে করা হচ্ছে। রাতে মক্কা টাওয়ার থেকে রমজান উপলক্ষে লেজার রশ্মি দিয়ে আলোর ঝলকানি নিক্ষেপ হয়।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: তায়েফ: যেখানে এখনো অশ্রু ঝরে

মসজিদুল হারামে আসর ও মাগরিবের নামাজের পর মুয়াল্লিমগণ রমজানের তাৎপর্য তুলে ধরে বয়ান করেন। কাবা বায়তুল্লাহতেও ছিল তাওয়াফকারিদের ভিড়।

ইসলাম শান্তির ধর্ম। সাম্য ও সৌহার্দ্যের শিক্ষা দেয় ইসলাম। ধৈর্য সহনশীলতা ও উদারতা শেখায়। সারাবিশ্বের মুসলমান মক্কায় সমবেত হয়েছেন। বর্ণ ভাষার প্রভেদ সত্বেও কী অসাধারণ ত্যাগের মনোভাব। কারও প্রতিই কারও অভিযোগ নেই। হাসিমুখে কষ্ট মেনে নেয়ার মানসিকতা সবার।

কথা হচ্ছিল মরক্কোর অধিবাসী বুশরার সঙ্গে। ষাটোর্ধ্ব বুশরা বললেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। যিনি এটা মানবেন তিনিই শান্তি অনুভব করবেন।

তুরস্কের আজিমুদ্দীন বললেন, ইসলাম আমাদের এক হয়ে চলার শিক্ষা দেয়। ওমরাহ পালনের জন্য লন্ডন থেকে এসেছেন ওসমান গনি। তিনিও একই রকম অনুভূতির কথা জানালেন। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়নের প্রশংসা করলেন তিনি।

আরও পড়ুন: জাবালে নুর: আজও দীপ্তিময়

উজবেকিস্তানের মোহাম্মদ টগবগে যুবক। ইসলামের প্রতি প্রবল অনুরাগী মোহাম্মদ বললেন, সহনশীলতা আমাদের ধর্মের সবচেয়ে বড় শিক্ষা। পাকিস্তানের আনজাম উদ্দিন এবং ভারতের উত্তরাখণ্ডের নাজমা বেগমও এসেছেন ওমরাহ পালনে। অমলিন হাসিমুখে তাদেরও অনুভূতি একইরকম। বললেন, ধর্ম আমাদের একসঙ্গে গেঁথেছে। তাই হাজারো প্রভেদে আমরা একসঙ্গেই মিলিত হয়েছি।

রাতে মক্কার রাস্তায় ঘুরছি। আর ভাবছি আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সেই অমর কবিতা: ‘আজি ঈদগাহে নেমেছে সেদিন, প্রশান্ত অম্লান। ভ্রাতৃত্বের তারে সুর বেঁধে দিয়ে, কাবার খাদিম ধরেছে নতুন গান।’

এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর