মানুষ একে অপরকে ভাই মনে করবে এবং ভাইয়ের মতোই আচরণ করবে—এটাই কর্তব্য। অন্যায়ভাবে কাউকে কষ্ট দেওয়া সমীচীন নয়। তাই মানুষকে কষ্ট দেওয়া থেকে সতর্ক থাকতে হবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে।’ (সুরা আহজাব: ৫৮)
ভুলেও কাউকে কষ্ট দিয়ে ফেললে ক্ষমা চাওয়া হবে আপনার দায়িত্ব। কিন্তু ক্ষমা চাওয়ার পরও সেই ব্যক্তি ক্ষমা না করলে কী করবেন?
বিজ্ঞাপন
এর উত্তর হলো- ওই ব্যক্তি আপনার কারণে দ্বিতীয়বার যেন কষ্ট না পায়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। এছাড়াও তার সঙ্গে উত্তম আচরণ করবেন এবং তার কল্যাণ হয়—এমন কোনো কাজ করার চেষ্টা করবেন। কেননা খারাপের মোকাবিলায় ভালো একটি উত্তম বিনিময়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মন্দের মোকাবিলা কর, যা উৎকৃষ্টতর, তা দিয়ে; তারা যা বলে আমি সে সম্পর্কে বিশেষ অবহিত। (সুরা মুমিনুন: ৯৬)
আরও পড়ুন: মানুষকে ক্ষমা করলে আল্লাহ যে পুরস্কার দেবেন
একইসঙ্গে তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন। এরপর সেই ভুলের জন্য আপনি আল্লাহ তাআলার কাছে তাওবা করবেন। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুল (স.) ইরশাদ করেছেন, গুনাহ থেকে তওবাকারী সেই ব্যক্তির মতো যার কোনো গুনাহ নেই। (ইবনে মাজাহ: ৪২৫০)
এরপর বেশি দুশ্চিন্তা করে নিজের ক্ষতি করবেন না। কেননা সাধ্যের বাইরে কিছু করার জন্য শরিয়ত আপনাকে বাধ্য করে না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোনো কাজের ভার দেন না। (সুরা বাকারা: ২৮৬)
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, কেউ নিজের ভুল বুঝে ক্ষমা চাইলে তাকে ক্ষমা করা উচিত। যেসব বান্দা ক্ষমা করেন, আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। এটি মূলত আল্লাহ তাআলারই একটি মহান গুণ। তাঁর একটি নাম আল গাফুর বা পরম ক্ষমাশীল। আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয়নবীকে এই গুণে গুণান্বিত হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘(হে নবী!) আপনি ক্ষমাশীলতার নীতি অবলম্বন করুন। সৎ কাজের আদেশ দিন এবং মূর্খদের এড়িয়ে চলুন।’ (সুরা আরাফ: ১১৯)
আরও পড়ুন: সুন্দর আচরণের প্রতিদান
এ আয়াতের মর্ম সম্পর্কে নবীজি (স.)-কে জিবরাঈল (আ.) বলেন, ‘হে মুহাম্মদ (স.) আল্লাহ তাআলা আপনাকে নির্দেশ দিয়েছেন, যে ব্যক্তি আপনার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে, আপনি তার সাথে সম্পর্ক অবিচ্ছিন্ন রাখুন। যে আপনাকে বঞ্চিত করে, আপনি তাকে দান করুন এবং যে আপনার প্রতি অবিচার-অত্যাচার করে, আপনি তাকে ক্ষমা করে দিন।’ (তাফসিরে তাবারি, খণ্ড: ১০, পৃষ্ঠা-৭১৫)
মহান আল্লাহ আরও বলেন, ‘আপনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৫৯)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ক্ষমার গুণ অর্জনের তাওফিক দান করুন। অন্যায়ভাবে কাউকে কষ্ট দিলে তার কাছ থেকে ক্ষমা চাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।