শিশুর জন্মের পর আকিকা দেওয়া ইসলামের একটি বিধান। প্রিয়নবী (স.) উম্মতকে নবজাতকের জন্য আকিকা দিতে উৎসাহ দিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘সন্তানের সঙ্গে আকিকার বিধান রয়েছে। তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত করো (অর্থাৎ পশু জবাই করো) এবং সন্তানের শরীর থেকে কষ্টদায়ক বস্তু (চুল) দূর করে দাও।’ (বুখারি: ৫৪৭২)
সাধারণত সন্তান ভূমিষ্ঠের সপ্তম দিনে আকিকা করা উত্তম। রাসুল (স.) তাঁর দৌহিত্র হাসান ও হুসাইন (রা.)-এর আকিকা সপ্তম দিনে করেছেন। (আবু দাউদ: ২৮৩৪)
বিজ্ঞাপন
তা সম্ভব না হলে ১৪তম দিনে। তাও সম্ভব না হলে ২১তম দিনে করা ভালো। (মুসতাদরাকে হাকেম: ৭৬৬৯) তাও সম্ভব না হলে পরবর্তীতে যেকোনো দিন আকিকা আদায় করতে পারবে। (ইবনুল কাইয়িম, তুহফাতুল মাওদুদ: ৬৩ পৃ; ফতোয়া লাজনা দায়েমা: ১৭৭৬; মাজমু ফতোয়া উসাইমিন: ২৫/২১৫)
ছেলেসন্তানের পক্ষ থেকে সাধারণত একই ধরনের দুটি বকরি এবং মেয়ের পক্ষ থেকে একটি বকরি আকিকা করা সুন্নত। (ফতোয়ায়ে শামি: ৬/৩৩৬)
আরও পড়ুন: আকিকা নিয়ে কিছু ভুল ধারণা
গরু, মহিষ বা উট দিয়েও সন্তানের আকিকা করা জায়েজ। এক্ষেত্রে একটি পশুতে ছেলে সন্তানের জন্য দুইভাগ করে ছয় ভাগ ও এক মেয়ের জন্য একভাগ আকিকা করা উত্তম। তবে, অর্থনৈতিক সংকট থাকলে সাত ছেলে বা সাত মেয়ের পক্ষ থেকে একটি গরু আকিকা করা যাবে। যেমনটি বিশুদ্ধ ফতোয়ার কিতাবগুলোতে বলা হয়েছে, ‘ছেলের পক্ষ থেকে একটি বকরি আকিকা করলেও মোস্তাহাব আদায় হয়ে যাবে। যদিও দুটি করা উত্তম।’ (রদ্দুল মুহতার: ৫/২১৩, আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ: ৩০/২৭৭)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: আর্থিক সমস্যা থাকলে ছেলের জন্য একটি ছাগল আকিকা করা যাবে?
তবে, গরু-মহিষ দিয়ে আকিকা করা জায়েজ হলেও ছাগল দ্বারা আকিকা করাই সর্বোত্তম পদ্ধতি। কারণ, ছাগল দিয়ে আকিকা করার কথা হাদিস শরিফে বিশেষভাবে বর্ণিত হয়েছে। আর ছাগল দিয়ে আকিকা করলে এক পশুতে একাধিক শিশুর আকিকা দেওয়া যাবে না। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নবীজির সুন্নতের অনুসরণে সন্তানের আকিকা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।