মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫, ঢাকা

সহজ যানের জটিল বিপদ!

মহিউদ্দিন রাব্বানি
প্রকাশিত: ০৮ মে ২০২৫, ০৮:৪০ এএম

শেয়ার করুন:

সহজ যানের জটিল বিপদ!
        • ২০২৪ সালে ইজিবাইক দুর্ঘটনায় নিহত ৮৭৫ 
        • এপ্রিল পর্যন্ত ৩৭১ দুর্ঘটনা, নিহত ৩৭৮ 
        • অপ্রশিক্ষিত চালকে বাড়ছে দুর্ঘটনা
        • অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বালাই নেই ট্রাফিক আইনের

 


বিজ্ঞাপন


সড়কে যানজট, দুর্ঘটনা ও যাত্রী দুর্ভোগ এখন নিত্যদিনের চিত্র। এর পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বেপরোয়া গতিতে চলা ইজিবাইক ও অটোরিকশা। গ্রাম থেকে শহর, মফস্বল থেকে রাজধানী- সর্বত্র এখন এসবের আধিপত্য। এদের নিয়ন্ত্রণহীন চলাচল জনজীবনে বাড়িয়ে তুলছে ঝুঁকি ও অস্বস্তি। 

অল্প সময়ে এসব পরিবহন যাত্রী পরিবহনে জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও অনিয়ন্ত্রিত ও বেপরোয়া চলাচল দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এসবের দুর্ঘটনা। বাড়ছে দুর্ঘটনায় আহত, নিহতের সংখ্যা। প্রায় প্রতিদিনই শিরোনাম হয় অটোরিকশাা ও ইজিবাইকের দুর্ঘটনার খবর। দুর্ঘটনা, যানজট, শব্দ দূষণ ও ভোগান্তির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে এই যানটি। সহজলভ্যতা, সস্তা ভাড়ায় যাতায়াত এবং বিকল্প পরিবহনের অভাবে ইজিবাইক যাত্রীদের স্বস্তি দিলেও এর নেতিবাচক দিকগুলো সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য এখন বড় মাথাব্যথা।

প্রশাসনিকভাবে নানা পদক্ষেপ নিলেও কোনোভাবেই যেন সড়কে আটকানো যাচ্ছে না বেপরোয়া এসব বৈদ্যুতিক রিকশা। তবে প্রশাসনের উদাসীনতাকেও দায়ী করছেন অনেকে। কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ছাড়া ইজিবাইক রাস্তায় চলছে বছর পর বছর। 

স্থানীয় প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান চালালেও তা নিয়মিত নয় এবং অধিকাংশ সময় তা ‘লিপ সার্ভিস’ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে। পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে কঠোর নিয়ম না আনলে আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।


বিজ্ঞাপন


বিশ্লেষকরা বলছেন, ঢাকা থেকে শুরু করে সারাদেশে নিয়ন্ত্রহীনভাবে, অবাধে অটোরিকশা চলছে। এ ধরনের বাহন নিয়ে যাত্রীর নিরাপত্তা ঝুঁকির অভিযোগ থাকলেও এগুলো নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বলে তারা মনে করছেন। যদিও সরকার তাদের চেষ্টা রয়েছে বলে দাবি করছে।

দ্রুতগতির দুর্যোগ-দুর্ভোগ
ইজিবাইক মূলত একটি পরিবেশবান্ধব যান হিসেবে পরিচিত। বিদ্যুতে চলায় এটি জ্বালানির খরচ বাঁচায় এবং শব্দদূষণও তুলনামূলকভাবে কম। তবে কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এটি এখন হয়ে উঠেছে নিয়ন্ত্রণহীন বিপদ। অপ্রশিক্ষিত চালক, লাইসেন্সহীন যান এবং ন্যূনতম ট্রাফিক বিধিনিষেধ না মানায় এই বাহনটি দিনে দিনে দুর্যোগে পরিণত হচ্ছে।

বিশেষ করে গ্রামের কাঁচা ও অপ্রশস্ত রাস্তাগুলোতে একাধিক ইজিবাইক একসাথে চলায় প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। শহরের চিত্র আরও ভয়াবহ। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, অফিসগামী মানুষ কিংবা কাজে যাওয়া সাধারণ নাগরিক- সবাইকে প্রতিনিয়ত ইজিবাইকের বেপরোয়া চলাচলের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান উদ্বেগজনক
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার কারণে সারাদেশে মোট ৮৭০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৮৭৫ ও আহতের সংখ্যা এক হাজার ৭৭৯। গত বছরেই অটোরিকশার কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে গুরুতর আহত অবস্থায় তিন হাজার ৯১ জন পুরুষ ও এক হাজার ৮৪ জন নারী চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন বলেও জানায় যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

এই সংগঠনটি আরও জানিয়েছে, চলতি বছর এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে মোট ৩৭১টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছে ৩৭৮ জন এবং আহত হয়েছেন ৭০৯ জন। এর বেশিরভাগ দুর্ঘটনাই ঘটেছে চালকের অদক্ষতা, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, ওভারটেকিং প্রতিযোগিতা এবং যানবাহনের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে।

সমিতির বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দেশে চলাচলকারী ৬০ লাখ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার কারণে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনায় দেশের প্রতিটি উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে পাঁচজন ভর্তি হচ্ছেন। প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালে ১৫ থেকে ১৭ জন, প্রতিটি বিভাগীয় হাসপাতালে আহত রোগী ভর্তি হচ্ছেন ২০ জন।

সংস্থাটি জানায়, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছোট যানবাহন। তাই, হতাহতের সংখ্যা এক বা দুইজন জন হারে হয় বলে গণমাধ্যমের কাছে এগুলো এতটা গুরুত্ব পায় না। সারাদেশে সংগঠিত ঘটনার মাত্র ১০ শতাংশ সংবাদমাধ্যমে স্থান পায়। দেশের সরকারি-বেসরকারি চার হাজার হাসপাতালে প্রতি বছর গড়ে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগী ভর্তি হচ্ছে। যারা ভর্তি হয় না, তাদের রেকর্ড থাকে না।

তবে গত বছরের নভেম্বরে এআরই থেকে কিছু সুনির্দিষ্ট তথ্যও পাওয়া গিয়েছিল। ওই তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যানবাহনের কারণে সারাদেশে ৯০০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মাঝে ৫৮২টিই ছিল মারাত্মক। এই দুর্ঘটনাগুলোর মাঝে একটা বড় সংখ্যাই হলো অটোরিকশা এবং দুর্ঘটনার সংখ্যা বাস্তবে নিশ্চয়ই আরও অনেক বেশি।

নগরজীবনে দুর্ভোগের নতুন নাম
নগরজীবনের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে ইজিবাইকের জটলা এখন একটি সাধারণ দৃশ্য। সড়ক-মহাসড়ক, হাট-বাজার, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান- সব জায়গাতেই এদের উপস্থিতি জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোথাও নিয়মতান্ত্রিক স্টপেজ নেই, নেই নির্দিষ্ট পার্কিং স্পট। ফলাফল: যানজট, বিশৃঙ্খলা, আর সময়ের অপচয়।

পথচারী ও যাত্রীরা বলছেন, আগে যেখানে নিরাপদে হাঁটাচলা করা যেত, এখন সেখানে চোখ-কান খোলা না রাখলে দুর্ঘটনা অনিবার্য। ইজিবাইকের শব্দহীন গতি এবং হঠাৎ বাঁক নেওয়ার প্রবণতা রীতিমতো আতঙ্ক তৈরি করছে।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার এক যাত্রী বলেন, যেখানে বড় গাড়ি ঢুকতে পারে না, সেখানে ইজিবাইক সুবিধা দেয়—এটা ঠিক। কিন্তু এদের গতি, আচরণ, আর শব্দ এত বেশি বেপরোয়া যে মনে হয় রাস্তায় নেমে যুদ্ধ করতে হচ্ছে।

ঢাকার কারওয়ান বাজার এলাকার এক পথচারী ঢাকা মেইলকে জানান, রাস্তা পার হতে গেলে সবচেয়ে বেশি ভয় পাই এই ইজিবাইকগুলোকেই। কানে হর্ন বাজে না, হঠাৎ করেই চোখের সামনে এসে পড়ে।

অপ্রশিক্ষিত চালক, লাইসেন্সবিহীন গাড়ি
ইজিবাইক চালাতে কোনো লাইসেন্সের প্রয়োজন নেই- এই ধারণার সুযোগ নিচ্ছেন বহু চালক। অধিকাংশ চালকের বয়স ১৮ বছরের নিচে, অনেকেই আবার স্কুল ফেলে রোজগারের তাগিদে রাস্তায় নেমেছেন। ট্রাফিক আইন সম্পর্কে তাদের জ্ঞান নেই বললেই চলে। ফলে ব্রেক ও ক্লাচ ব্যবহারে ভুল, হঠাৎ বাঁক নেওয়া, যাত্রী ওঠানামার সময় গতি না কমানো—এসব সাধারণ ভুলেই ঘটছে বড় বড় দুর্ঘটনা।

ইজিবাইক একটি ব্যাটারিচালিত তিন চাকার বা চার চাকার অটোরিকশা। মূলত এটি ক্ষুদ্র ও স্বল্প দূরত্বের যাত্রী পরিবহনের জন্য তৈরি হলেও বর্তমানে দেশের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই এটি প্রধান গণপরিবহন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। শহরের তুলনায় গ্রাম ও মফস্বল এলাকায় এর ব্যবহার বেশি। প্রথম দিকে পরিবেশবান্ধব ও খরচ সাশ্রয়ী বাহন হিসেবে জনপ্রিয়তা পেলেও, বর্তমানে এটি নিয়ন্ত্রণহীন গতির কারণে ভয়াবহ দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই যানগুলো সাধারণত আমদানিকৃত বা স্থানীয়ভাবে তৈরি করা হয়, যার মধ্যে অধিকাংশেরই কোনো প্রকার মান নিয়ন্ত্রণ বা যাচাই-বাছাই থাকে না। ব্যাটারি, শরীর কাঠামো, চাকা কিংবা ব্রেকিং সিস্টেম—সবকিছুই নিম্নমানের হওয়ায় সামান্য ধাক্কাতেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।

আইন আছে, প্রয়োগ নেই
২০১৭ সালে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় একটি খসড়া নীতিমালা করে, যেখানে ইজিবাইক চালনার জন্য কিছু নিয়ম-কানুন প্রস্তাব করা হয়। যেমন- চালকের বয়সসীমা, লাইসেন্স প্রাপ্তি, যাত্রী সংখ্যা নির্ধারণ, সুনির্দিষ্ট এলাকায় চলাচল ইত্যাদি। তবে সেটি আজও কার্যকর হয়নি।

অধিকাংশ জেলা বা উপজেলায় ইজিবাইকের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। প্রশাসন মাঝে মাঝে ‘দেখানোর জন্য’ অভিযান চালালেও তাতে দীর্ঘমেয়াদি কোনো ফল আসে না। বরং অভিযানের আগে আগেই চালকরা খবর পেয়ে যান এবং ইজিবাইক গায়েব হয়ে যায়। আবার, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পরিচালিত অনেক ইজিবাইক মালিক সমিতি স্থানীয় প্রশাসনের চোখে চোখ রেখে চলাফেরা করে।

দুর্ঘটনা, আহত, নিহতের সঠিক তালিকা নেই 
সাধারণত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে শুরু করে অন্যান্য যানবাহন সংক্রান্ত দুর্ঘটনার নানা ধরনের তথ্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরই) কাছে পাওয়া যায়। তবে সাম্প্রতিক কোনো তথ্য তারা সংকলন করতে পারেনি।

এআরই জানায়, তারা ওই তথ্যগুলো পুলিশের কাছ থেকে সংগ্রহ করে। কিন্তু বর্তমানে পুলিশের কাছ থেকে পূর্ণ সহায়তা না পাওয়ায় আপাতত তথ্য হালনাগাদ করা হচ্ছে না। তাছাড়া, অনেক তথ্য পুলিশের তালিকায় থাকে না বলেও তারা জানায়।

তবে গত বছরের নভেম্বরে এআরই থেকে কিছু সুনির্দিষ্ট তথ্যও পাওয়া গিয়েছিল। ওই তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যানবাহনের কারণে সারাদেশে ৯০০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মাঝে ৫৮২টিই ছিল মারাত্মক। এই দুর্ঘটনাগুলোর মাঝে একটা বড় সংখ্যাই হলো অটোরিকশা এবং দুর্ঘটনার সংখ্যা বাস্তবে নিশ্চয়ই আরও অনেক বেশি।

এরইমধ্যে সরকার ঘোষণা করে যে, বাজারে নতুন নকশার রিকশা আসবে, যার ব্রেকিং ব্যবস্থা এখনকার অটোরিকশার চেয়ে ভালো ও নিরাপদ। বলা হচ্ছে, সরকার শিগগির এই রিকশার অনুমোদন দেবে। পাশাপাশি, চালকদের লাইসেন্সও দেওয়া হবে। এজন্য প্রচলিত স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ সংশোধন করা হচ্ছে। সরকার বলছে এতে নতুন ওই রিকশা বর্তমানের অটোরিকশাসংক্রান্ত সমস্যাকে কমিয়ে দেবে।

বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ
পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইজিবাইক-অটোরিকশা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার পক্ষে নন তারা। কারণ, এটি স্বল্প আয়ের মানুষের কর্মসংস্থানের অন্যতম বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছে। তবে একটি অনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা কখনো টেকসই হতে পারে না। বরং সরকার যদি স্পষ্ট নীতিমালার মাধ্যমে লাইসেন্স, চলাচল এলাকা নির্ধারণ, প্রশিক্ষণ, যানবাহনের মান নিয়ন্ত্রণ, ব্যাটারি ব্যবস্থাপনার মতো দিকগুলোতে কাজ করে, তাহলে এটি নিরাপদ বাহনে পরিণত হতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ হাসান ঢাকা মেইলকে বলেন, ইজিবাইক একটা বাস্তবতা। এটাকে নিষিদ্ধ না করে, একটি পরিকল্পিত কাঠামোর মধ্যে আনাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

তবে সরকার, প্রশাসন, চালক, যাত্রী ও নাগরিক সমাজ- সবার সম্মিলিত উদ্যোগেই ইজিবাইককে একটি নিরাপদ, শৃঙ্খলাবদ্ধ ও কার্যকর বাহনে রূপ দেওয়া সম্ভব।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হোসেন চৌধুরী ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক দেশে দরকার ম্যাচ ট্রান্সপোর্ট (গণপরিবহণ)। অথচ আমরা মোটরসাইকেল ও অটোরিকশাকে বিকল্প বাহন হিসেবে সামনে নিয়ে এসেছি। আসলে সরকারের নীতি সহায়তা না করে প্রশাসনের ওপর ঢালাও দোষ চাপিয়ে লাভ নেই। সরকারকে ইজিবাইক-অটোরিকশার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। 

মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা ২০১২ সালে চালু হয়। যা ২০১৬ সালে বিস্তার লাভ করে। এটি সরকারের একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছিল। এটি বন্ধ হওয়া দরকার। তবে এখন আসলে চাইলেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। আর রাতারাতি এসবের মোকাবেলাও সম্ভব নয়। ৮০ লাখ শ্রমিকের জীবন জীবিকার মাধ্যম হয়ে উঠেছে এটি। 

এমতাবস্থায় তিনি দুটি বিকল্প মাধ্যমের কথা বলেছেন। একটি হলো ১. বিকল্প কর্মসংস্থান ২. বিকল্প ভালো যানবাহন সৃষ্টি। 

বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শামসুল হক ঢাকা মেইলকে বলেন, গণপরিবহনই আমাদের একমাত্র পথ। পরিবহন খাতে নানা সমস্যার মধ্যে সরকার সড়কে ইজিবাইক নামিয়ে সমস্যা আরও বাড়িয়েছে। একবারও তারা বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে দেখছেন না।

তিনি জানান, ঢাকায় সাড়ে সাত শতাংশ রাস্তা আছে, যার গুণগত মান ঠিক নেই। রিকশা নিয়ন্ত্রণ, ফুটপাত দখলমুক্ত, বাসরুট ফ্রেঞ্চাইজ করতে না পারার দায় সরকারকে নিতে হবে।

এমআর/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর