বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪, ঢাকা

বুথের পানিতে স্বস্তি

আমিনুল ইসলাম মল্লিক
প্রকাশিত: ০২ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৪ পিএম

শেয়ার করুন:

বুথের পানিতে স্বস্তি

বিপুল জনসংখ্যার মহানগরী ঢাকার বেশিরভাগ এলাকাতেই বছরের বেশিরভাগ সময় গ্যাস ও পানির সংকট থাকে। শীত আসলেই বেশিরভাগ এলাকায় গ্যাসের চাপ কমে যাওয়া স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সুপেয় পানির সমস্যা গরমকাল আসার আগেই অনেক এলাকায় শুরু হয়ে গেছে।

রাজধানীর মগবাজার-মালিবাগ এলাকার বাসিন্দারাও কি ভুগছেন এই সমস্যায়? সরেজমিনে গিয়ে এই দুই এলাকার বাসিন্দা, বাড়ির মালিক, দোকানদার, দারোয়ানসহ বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাদের সবাই বলছেন, আমাদের পানি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ঝামেলায় নেই গ্যাস নিয়েও।


বিজ্ঞাপন


মগবাজার গ্রিনওয়ে গলির দোকানি রায়হান। ব্রাহ্মণড়িয়া থেকে এসে এই এলাকায় বসবাস করেন প্রায় ৩ বছর। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, আমরা যে বাসায় থাকি সেখানে পানির কোনো সমস্যা নেই। পানির লাইনের কোনো সমস্যা নেই। আমি পানি ফুটিয়ে পান করি। আমাদের লাইনের পানি খুবই ভালো। কোনো দুর্গন্ধ নেই। রাতদিন ২৪ ঘণ্টাই পানি সরবরাহ থাকে। পানি নিয়ে অভিযোগ কমই শুনি।

দর্জি দোকানি সাত্তারেরও একই কথা। গ্রিনওয়ের গলিতে দীর্ঘদিন হলো দর্জির কাজ করেন তিনি। পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। পানি ও গ্যাস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, আমি যে বাসায় থাকি সেখানে পানি ও গ্যাসের কোনো সমস্যা দেখি না। আমি পানি ফুটিয়ে পান করি। পানিতে কোনো সমস্যা নেই।

মগবাজার বিটিসিএল এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহমান। সরকারি চাকরি করেন। দুপুর ১টার দিকে মগবাজার ওয়াসার পানির বুথে আসেন পানি নিতে এসেছেন। এই মানুষটি ব্যাগ ভর্তি করে পানির বোতল নিয়ে আসেন প্রতিদিন। হোন্ডার পেছনে ব্যাগের মধ্যে বোতল নিয়ে আজও এসেছেন পানি নিতে। কথা হয় তার সঙ্গে। এই পাম্পের পানি পান করে তিনি খুবই সন্তুষ্ট। বুথের সামনে দাঁড়িয়ে কার্ড প্রবেশ করেই কয়েকটি বোতল পূরণ করলেন নিমিষেই। বললেন, আমি সরকারি চাকরি করি। এখান থেকেই পানি নেই পরিবারের জন্য। পানির খুব ভালো। কোনো দুর্গন্ধ নেই। পানি নষ্ট হলে অভিযোগ দিমু।


বিজ্ঞাপন


এই এলাকার আরেক বাসিন্দা আদনান। মাস তিনেক হলে ওয়াসার পানি নিতে আসেন। প্রতিদিন পানি নেন তিনি। কার্ড নিয়ে প্রতিদিন দুই বোতল করে পানি বাসায় নিয়ে রেখে দেন। জমানো পানি পান করনে না। প্রতিদিনের পানি প্রতিদিন সংগ্রহ করেন। দুই বোতল করে নেন। শেষ হলে আবার পানি নিতে আসেন। তারও কোনো অভিযোগ নেই ওয়াসার পানি নিয়ে।

মগবাজার বিটিসিএল পানির বুধে চাকরি করেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। তারা দুই শিফটে ৮ ঘণ্ট করে দায়িত্ব পালন করেন। এদের একজন আশা মনি। তিনি বলেন, ৮ হাজার টাকা বেতন পাই। শিক্ষার্থী মানুষ। এতেই পড়ালেখা চলে যায়। পানির মান নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই পানির বুখ আমরা প্রতিদিন দুইবার পরিস্কার করি। সকাল আর দুপুরে। অনেক সময় পানিতে আয়রন জমে যায়। সেই আয়রন পরিষ্কার করতে হয় নিয়মিতভাবে। পানি নিয়ে নানা ধরনের অভিযোগ আসে। এজন্য আমরা প্রতিদিন পানির মেশিন পরিষ্কার করি।

তিনি আরও বলেন, এই বুধ থেকে প্রতিদিন প্রায় ৮-৯ হাজার লিটার পানি বিক্রি হয়। প্রতি লিটার পানির দাম ৮০ পয়সা। আগে পানির দাম কম ছিল। গত আগস্টে রেট বেড়েছে।

গুলবাগ এলাকার বাসিন্দাদেরও একই বক্তব্য। তারা বলছেন, ওয়াসার পানি পান করে ভালো আছি। পানিতে কোনো গন্ধ নেই। প্রতিনিয়ত আমরা বুথের পানিই পান করি।

জানতে চাইল মালিবাগের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট ফারুক হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, এই এলাকায় নিজস্ব ফ্ল্যাটে থাকি। অনেকদিন হলো আছি। আমাদের পরিবারে সবাই গুলবাগ বুখের পানি পান করি। কোনো সমস্যা নেই। আশপাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদেরও পানি নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই।

Gas_Water--Mollick--01--Inner

এদিকে মগবাজার গ্রিনওয়ে গলিতে চলছে রাস্তা সংস্কারের কাজ। রাস্তার ভেতরে ওয়াসার লাইন সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। পানির বড় পাইপ বসানো হচ্ছে। রাস্তায় খোড়াখুড়ির কারণে ওয়াসার পানি নিয়ে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

এছাড়া এই এলাকায় গ্যাসেরও তেমন কোনো সমস্যা নেই। জানতে চাইলে মগবাজার ওয়্যারলেস এলাকার বাসিন্দা মোক্তাদির হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের মহল্লায় গ্যাসের সংকটের কথা কখনও শুনি নাই। যখনই চুলা জ্বালাই গ্যাস পাই।

এআইএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর