শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ঢাকা

গ্যাসের চাপ ভোগাচ্ছে পান্থপথবাসীকে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৭ পিএম

শেয়ার করুন:

গ্যাসের চাপ ভোগাচ্ছে পান্থপথবাসীকে

শীত এলেই গ্যাসের চাপ কমে যায় রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় নগরবাসীকে। কিন্তু গরমকালেও রাজধানীর বেশকিছু এলাকার বাসিন্দাদের গ্যাসের সমস্যায় ভুগতে হয়। পান্থপথ ও তার আশপাশের এলাকা এর অন্যতম।

প্রতি বছরের মতো এবারও শীতের শেষদিক থেকেই পানি ও গ্যাসের তীব্র সংকটে ভুগছে পান্থপথবাসী। বিশেষ করে রমজানে সেই ভোগান্তিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এলাকাবাসী বলছে, গত মাস থেকেই পান্থপথ ও এর আশপাশের কিছু এলাকায় পানি ও গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে রমজানের প্রথম সপ্তাহে পানির সমস্যা অনেক বেশি ছিল। বর্তমানে দুই সমস্যাই সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও সামনের দিনগুলো নিয়ে শঙ্কিত তারা।


বিজ্ঞাপন


গ্যাসের সমস্যা নিয়ে এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় পান্থপথের আমতলামোড় এলাকার বাসিন্দা সামিদুল ইসলামের। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, রমজানের আগে গ্যাসের সমস্যা অনেক বেশি ছিল। রমজানের পর কিছুটা কমেছে। আগে সকাল ৮ট-৯টার পর একদম গ্যাস থাকতো না। এই অবস্থা বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত থাকতো। অনেক সময় ৫টার পর গ্যাস আসতো। এখন তুলনামূলকভাবে গ্যাসের সমস্যা কিছুটা কম।

রমজানে গ্যাসের সমস্যা তুলে ধরে তিনি বলেন, রমজানে বেশিরভাগ সময় ইফতারের আগে আগে সমস্যা বাড়ে। তখন ইফতার বানানোর সময় থাকায় চাহিদা বাড়ে। আর তখনই গ্যাসের চাপও কমে।

এলাকাটিতে গ্যাসের থেকেও প্রকট পানির সমস্যা। সম্রাট নামে এক বাসিন্দা ঢাকা মেইলকে বলেন, গরম শুরুর পর থেকেই পানির সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে রোজার প্রথম সপ্তাহে খুবই খারাপ অবস্থা ছিল। এসময় টানা দুইদিন একদম পানি ছিল না। বাইরে থেকে পানি কিনে এনে গোসলসহ প্রয়োজনীয় কাজ সারতে হয়েছে। এরপর দিনের বারোটা নাগাদ একবার পানি আসতো। কখনও কখনও চারটার দিকে একবার পানি আসতো। এই পানি রাখা গেলে ব্যবহার করা গেছে। তবে এটি অফিস সময় হওয়ায় বিষয়টা যথেষ্ট কঠিন হয়ে যেত। এখন তুলনামূলকভাবে অবস্থা ভালো। গত এক সপ্তাহ সমস্যা নেই। তবে সামনের দিনগুলো নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

অতিরিক্ত চাপে বাড়িওয়ালারা


বিজ্ঞাপন


গ্যাস ও পানির সমস্যায় এলাকার সবাই ভুগলেও বাড়তি চাপে রয়েছেন বাড়িওয়ালারা। ভাড়াটিয়ারা সমস্যার তীব্রতা বুঝে চাইলে এলাকা পরিবর্তন করতে পারেন, কিন্তু সেই সুযোগ নেই বাড়িওয়ালাদের। উল্টো ভাড়াটিয়া থাকবে কি থাকবে না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগতে হয় তাদের।

আব্দুল জব্বার নামে এক বাড়িওয়ালা ঢাকা মেইলকে বলেন, পুরো এলাকাতেই এই সমস্যা। যে সময়টায় পানি ছিল না তখন অনেককেই ওয়াসা থেকে আলাদাভাবে পানি কিনে এনে ট্যাঙ্কিতে রাখতে হয়েছে। ভাড়াটিয়ারা আমাদের কাছে পানি ও গ্যাসের সমস্যা নিয়ে অভিযোগ করে। আমরা কর্তৃপক্ষকে প্রায়ই সমস্যাগুলো জানাই। যেমন সর্বশেষ পানি বন্ধ থাকার সময়ও জানিয়েছি। জবাবে তারা কাজ করার কথা জানিয়েছে।

তবে ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তাদের দাবি, মহানগরীতে পানির চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ঘাটতি নেই। বরং পানির চাহিদার তুলনায় উৎপাদন সক্ষমতা বেশি। তদের তথ্য মতে, বর্তমানে ঢাকায় প্রতিদিন পানির চাহিদা ২৬০ কোটি লিটার। এর বিপরীতে ওয়াসার উৎপাদন সক্ষমতা ২৯০ কোটি লিটার। প্রতিদিনই ঠিকভাবে পানি সরবরাহ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে যৌক্তিকভাবে পানি সরবরাহের সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় কোনো এলাকার গভীর পানির পাম্প অকেজো হয়ে গেলে সমস্যা হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

কোনো এলাকায় পানির সমস্যা হলে ঢাকা ওয়াসার হটলাইন ১৬১৬২ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ পাওয়ার ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

অপরদিকে গ্যাস সংকট জাতীয় গ্রিডের সার্বিক ঘাটতির অংশ বলে জানিয়েছে গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস। তারা জানায়, বর্তমানে চাহিদার বিপরীতে প্রতিদিন ১৪০০ থেকে ১৫০০ এমএমসিএফডি ঘাটতি থাকছে। ফলে অনেক এলাকায় গ্যাসের সংকট এবং চাপ কম থাকছে।

এমএইচ/

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর