মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

শহীদ আবরারকে স্মরণ, ৭ অক্টোবরকে আগ্রাসনবিরোধী দিবস পালনের আহ্বান

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, ঢাবি
প্রকাশিত: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪৪ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

পাঁচ বছর আগে বুয়েটের একটি হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে তৎকালীন শাসকদলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শাহাদত দিবসে আবরারকে স্মরণ করেছেন তার সহপাঠীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।   

৭ অক্টোবরকে ‘জাতীয় আগ্রাসনবিরোধী দিবস’ হিসেবে পালনের আহ্বান করেছে জুলাই বিপ্লবভিত্তিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চ। সোমবার (৭ অক্টোবর) শহীদ আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আবরারের কবর জিয়ারত করা হয়। সর্বস্তরের ছাত্র জনতার সাথে জিয়ারতে অংশ নেন আবরার ফাহাদের দাদু ও চাচা।


বিজ্ঞাপন


মোনাজাত শেষে আবরার ফাহাদের এই মহান ত্যাগকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ৭ অক্টোবরকে 'জাতীয় আগ্রাসনবিরোধী দিবস' হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সকল মুক্তিকামী মানুষকে এই দিনে 'জাতীয় আগ্রাসনবিরোধী দিবস' পালনের আহ্বান জানায় ইনকিলাব মঞ্চ।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি বলেন, চব্বিশে ছাত্র জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানে বাংলাদেশে আধিপত্যবাদবিরোধী যে সংগ্রামের সূচনা হয়েছে, শহীদ আবরার হলেন আমাদের সেই সংগ্রামের প্রবাদ পুরুষ।

তিনি আরও বলেন, হাজারো শহীদের জীবনের বিনিময়ে যে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ বিনির্মাণের যাত্রা শুরু হয়েছে, শহীদ আবরার হলেন সেই সংগ্রামের প্রধান অনুপ্রেরণা। যিনি আমাদের সকল আধিপত্যবাদ ও তাঁবেদারির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শিখিয়েছেন। 

পলাশী চত্বরে শহীদ আবরারের স্মরণসভা


বিজ্ঞাপন


এদিকে ‘শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ’ এর উদ্যোগে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজধানীর পলাশী মোড়ে।

সোমবার (৭ অক্টোবর) সেখানে আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ পুনঃনির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছে।

বিকেল তিনটায় ভারতীয় আগ্রাসনের বিরোধিতা করায় ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের স্মরণসভা শুরু হয়। স্মরণসভার শুরুতে আবরার ফাহাদের শাহাদাতের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং আহতদের আশু আরোগ্য কামনা করা হয়।

ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরোধিতা করে বিভিন্ন সময়ে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের দ্বারা হামলা-মামলার শিকার হতে হয় রাজনৈতিক কর্মীদের। বিশেষভাবে স্মরণ করা হয়, ২০২২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আবরার ফাহাদের স্মরণসভায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলার শিকার এবং গ্রেফতারকৃত ২৪ জন ছাত্রনেতাকে।

Abrar2

স্মরণসভায় বক্তৃতা করেন মোল্লা রহমাতুল্লাহ, তারেকুল ইসলাম, তসলিম হোসেন ওভি, সালেহ উদ্দিন সিফাত, আকরাম হুসাইন এবং অন্যান্যরা। স্মরণসভায় স্মৃতিচারণ ও আবরার হত্যাকাণ্ডের রায় কার্যকরের দাবি করেন আবরার ফাহাদের বাবা মো. বরকাতুল্লাহ এবং আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ। এছাড়াও বক্তৃতা রাখেন, আবরার ফাহাদের সহপাঠী আহনাফ মুসান্না।

স্মরণসভায় উপস্থিত হয়ে বক্তৃতা দেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, ব্যারিস্টার ফুয়াদ আব্দুল্লাহ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, আব্দুল কাদের এবং আবু বাকের মজুমদার।

বক্তারা তাদের বক্তৃতায় ভারতীয় আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতির বিরুদ্ধে সরকারকে শক্ত ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান। আবরার ফাহাদ আগ্রাসনবিরোধী লড়াইয়ের স্পিরিট মর্মে ঘোষণা দেন বক্তারা।

সভায় সভাপতি হিসেবে সমাপনী বক্তব্য দেন আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক আখতার হোসেন। তিনি তার বক্তৃতায় ৭ অক্টোবরকে ‘আগ্রাসনবিরোধী দিবস’ হিসেবে ঘোষণার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

স্মরণসভাটি সঞ্চালনা করেন শোরগোল পত্রিকার সম্পাদক জাহিদ আহসান এবং ফেরদৌস প্রামাণিক।

স্মরণসভা শেষে পলাশী চত্বরে আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। পরে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

আরএ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এই ক্যাটাগরির আরও খবর


News Hub