ঈদের লম্বা ছুটি। তাই ঈদের আনন্দকে পরিপূর্ণ করতে পরিবার-প্রিয়জন নিয়ে ছুটে আসছেন ইতিহাসের স্থাপত্যকলার অন্যতম নিদর্শন নাটোর উত্তরা গণভবনে।
প্রকৃতির নির্মল বাতাস আর গাছের নিবির ছায়ায় একটু স্বস্তি পেতে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভ্রমণপ্রিয় মানুষের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো গণভবন। ভিতরে বিরল প্রজাতির নানা গাছপালা আর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছে দূর থেকে আসা দর্শনার্থীরা।
বিজ্ঞাপন
গতকাল বুধবার (২ মে) বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উত্তরা গণভবনের মূল ফটকের সামনে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। টিকিটের জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন দর্শনার্থীরা। সামনে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। গণভবনের ভিতরে গাছের নিচে বসে গল্প-আড্ডায় মেতেছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভ্রমণপ্রিয় মানুষরা। তবে বাদ নেই শিশুরাও। সবুজ ঘাসের ওপর প্রকৃতির সাথে খেলায় মেতেছে তারা। বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে নিয়ে দলবেঁধে ঘুরছে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। এদিকে গণভবনের ভিতরে মিনি চিড়িয়াখানা আর সংগ্রহশালায় শিশু-কিশোরদের ভিড় দেখা গেছে।
ঈদের ছুটিতে বগুড়া থেকে আসা সাইদুর রহমান বলেন, ‘উত্তরা গণভবন খুব চমৎকার একটি পর্যটন স্থান। আগেও কয়েকবার আসা হয়েছে। এবার বউ, ছেলে-মেয়ে নিয়ে ঘুরতে এসেছি। গণভবনের ভিতরে সবুজ খাস আর বিরল সব গাছে ভরপুর। গণভবনের ভিতরের সবকিছু গোছানো। বেশ সুন্দর একটি নিদর্শন।’
আরও পড়ুন—
নওগাঁ থেকে আসা স্কুল শিক্ষক আমজাদ করিম বলেন, ‘মূল ফটকটি অসাধারণ। ভিতরে প্রবেশের পর আরও অসাধারণ লেগেছে। প্রথম এখানে আসা, অনেক দারুণ একটি স্থান। পরিবার নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর মতো জায়গা। উত্তরা গণভবনের বাইরে থেকে দেখলে বুঝার উপায় নেই, ভিতরে এত সুন্দর পরিবেশ। দেশ-বিদেশের বাহারি ফুল আর চারদিকে সবুজ গাছ মুগ্ধ করেছে।’
রাজশাহী বাঘা থেকে আসা মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। প্রথমে পুঠিয়া রাজবাড়ি ঘুরে গণভবনে এসেছি। গণভবনের প্রসাদের দারুণ সব কারুকাজ। বিশেষ করে অনেক অচেনা গাছ দেখলাম, যা কখনো দেখিনি। এক কথায় অসাধারণ ছিল। তবে শিশুদের জন্য কিছু রাইটের ব্যবস্থা থাকলে দর্শনার্থীদের সমাগম সামনে আরও বাড়বে বলে মনে করছি।’
পাবনা থেকে আসা রবিন, সোহেল, ইমন ও সোহাগ বলেন, ‘প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে বন্ধুরা মিলে কোথাও না কোথাও ঘুরতে বের হই। এবার সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম নাটোর উত্তরা গণভবনে যাবো। তাই মোটরসাইকেলে সবাই চলে আসলাম। ভিতরের পরিবেশটা অনেক সুন্দর। কোথাও কোনো ময়লা নেই, সবকিছু স্বচ্ছ। সবাই মিলে বসে আড্ডা দেওয়ার মতো জায়গা। বন্ধুরা মিলে অনেক ঘুরাঘুরি করলাম, আড্ডা দিলাম। সামনে ঈদে আবারো আসবো।’
ঘুরতে আসা শিশু রুবাইয়া বলে, ‘বাবা-মায়ের সাথে রাজবাড়িতে ঘুরতে এসেছি। অনেক ভালো লাগলো। কী সুন্দর ফুল গাছ, বড় বড় সব গাছ। এখানে অনেক হরিণ রয়েছে। সবাই অনেক সুন্দর সময় কাটালাম, অনেক কিছু খেলাম। এখানে আসলে সবার মন ভালো হয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন—
গণভবনের সহকারী ব্যবস্থাপক খায়রুল বাশার ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘ঈদের আগে থেকেই দর্শনার্থীদের কথা চিন্তা করে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। ঈদের দিন থেকে গণভবনে প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম ঘটছে। সারাদেশ থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন। যেহেতু সরকারি ছুটি আরও কয়েকদিন রয়েছে, আশা করছি আরও উপস্থিতি বাড়বে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও আনসার সর্বক্ষণ টহলে থাকছে।’
প্রতিনিধি/একেবি